মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু।

প্রত্যেক মুসলমান সবাই জানে মুমিন ব্যক্তির মর্যাদা ও সম্মান কাফের ব্যক্তির তুলনায় অনেক বেশি এবং অনেক উপরে। মহান আল্লাহপাক মুমিন ব্যক্তিকে পছন্দ করেন এবং কাফের ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন। আমাদের আজকের বিষয় হচ্ছে “মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু”। 


আমরা পর্যায়ক্রমে এ ব্যাপারে আলোচনা করব। আশা করি সকলে আমাদের সঙ্গে থাকবেন। তাহলে চলুন আর অপেক্ষা না করে এখনি “মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু” আমাদের মূল মূল পর্বে চলে যাই। 

  • সূচিপত্র - মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু।
  • ভূমিকা।
  • মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু।
  • উপসংহার – মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু।

মুমিন ব্যক্তি এবং তাঁর মৃত্যু।

মুমিন বান্দার যখন ইন্তেকালের সময় উপস্থিত হয় তখন আসমান হতে শুভ্র উজ্জ্বল-সূর্যবৎ রূপের ফিরিস্তা সঙ্গে বেহেস্তী কাফন ও সুগন্ধি নিয়ে অবতরণ করেন এবং মুমিনের দৃষ্টি সমক্ষে উপবেশন করেন। অতঃপর মালাকুল মণ্ডত (আঃ) উপস্থিত হয়ে তার শীর্ষদেশে বসে বলেন, ''হে পবিত্র আত্মা! আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ক্ষমার প্রতি নির্গত হও''। তৎক্ষণাৎ কলসী থেকে গড়িয়ে আসা পানির ন্যায় অবলীলাক্রমে আত্মা বহির্গত হয়। মালাকুল মওত (আঃ) তা হাতে নেন। অতঃপর পলকের মধ্যে পূর্বের ফিরিশ্রাগণ তাঁর হাত থেকে নিয়ে সুগন্ধময় কাফনে রাখেন এবং তা থেকে পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট মিসকের সুবাস নির্গত হতে থাকে। অতঃপর তাঁরা সেই আত্মাসহ আসমানের প্রতি উড্ডীন হন। যাবার পথে প্রত্যেক ফিরিস্তা দল তাঁদেরকে প্রশ্ন করেন, ''এ পবিত্র আত্মা কার''? তাঁরা পৃথিবীতে প্রচলিত তার সর্বোত্তম নাম নিয়ে বলেন, ওমুকের ছেলে ওমুকের। 

আর পড়ুনঃ ঈমান আনার গুরুত্ব ও ফজীলত সম্পর্কে জানুন

অতঃপর দুনিয়ার আসমানের (প্রথম আকাশের) নিকট পৌঁছে তাঁরা আসমানের দ্বারোদঘাটন করতে বলেন। দুয়ার উন্মুক্ত করা হয়। অতঃপর প্রত্যেক আসমানের নিকটতম ফিরিশ্বাদল ঐ আত্মার সম্মানার্থে তাঁদের পশ্চাদগামী হয়ে পরবর্তী আসমান পর্যন্ত সঙ্গ দেন। আর এইভাবে সপ্তম আসমানে উপনীত হন। তখন আল্লাহ বলেন, "আমার বান্দার কিতাব ইল্লীয়ীনে লিপিবদ্ধ কর এবং তাকে পুনরায় পৃথিবীর দিকে প্রত্যাবর্তিত কর।" অতঃপর সেই আত্মাকে অবিলম্বে তার নিজ দেহের সাথে সংযুক্ত করা হয়।

কাফের ব্যক্তি এবং তার মৃত্যু।

কাফেরের মৃত্যুর সময় আসমান হতে কৃষ্ণকা ফিরিপ্তা সঙ্গে মোটা বস্ত্র নিয়ে অবতরণ করেন এবং তার দৃষ্টি সমক্ষে উপবেশন করেন। অতঃপর মালাকুল মণ্ডত (আঃ) উপস্থিত হয়ে তার শীর্ষদেশে বসে বলেন, ''রে খবীস (অপবিত্র) আন্তা! আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও ক্রোধের প্রতি নির্গত হ''। তৎক্ষণাৎ আত্মাটি দেহের ভিতরে ভয়ে ছুটা-ছুটি করতে লাগে। অতঃপর সিক্ত পশম হতে (জং ধরা) শলাকাখন্ড নিষ্কাশিত করার ন্যায় দেহ থেকে আত্মাকে জোরপূর্বক বিছিন্ন করা হয়। মালাকুল মওত (আঃ) তা হাতে নেন। অতঃপর পলকের মধ্যে পূর্বের ফিরিস্তাগণ তাঁর হাত থেকে নিয়ে সেই মোটা বস্ত্রে রাখেন এবং তা থেকে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মৃত পচার দুর্গন্ধ নির্গত হতে থাকে। অতঃপর তাঁরা সেই আত্মাসহ আসমানের প্রতি উড্ডীন হন। যাবার পথে প্রত্যেক ফিরিস্তাদল তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, ''এ খবীস আত্মা কার? তাঁরা পৃথিবীতে প্রচলিত তার সবচেয়ে মন্দ নাম নিয়ে (ঘৃণার সাথে) বলেন, ওমুকের বেটা ওমুকের''। 

আর পড়ুনঃ কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন

অতঃপর প্রথম আসমানের নিকট পৌঁছে আসমানের দ্বারোদ্ঘাটন করতে বলেন। কিন্তু তার জন্য দুয়ার উন্মুক্ত করা হয় না। (আল্লাহ বলেন, "অবশ্য যারা আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে এবং অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয় আকাশের দ্বার তাদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে না। আর তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সূচের ছিদ্র পথে উষ্ট প্রবেশ করে। এরূপে আমি অপরাধীদের প্রতিফল দেব। তাদের শয্যা হবে জাহান্নামের এবং তাদের উপরে (আযাবের) আচ্ছাদন হবে। এভাবে আমি অত্যাচারীদের প্রতিফল দেব।” (কুঃ ৭/৪০-৪০)

উপসংহার - মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু।

আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা করেছি “মুমিন ও কাফেরের পার্থক্য এবং তাদের মৃত্যু”। আশা করছি সকলেই উপকৃত হয়েছেন। যদি কেউ সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই লেখা স্বার্থ। আশা করছি সকলে আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং আমাদেরকে উৎসাহ যোগাবেন। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলের এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী পথ চাওয়া তৌফিক দান করুন (আমিন)।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url