কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন

 কবর অর্থ হচ্ছে সমাধি। আর মৃত্যুর পরে তার পরবর্তী স্থান হচ্ছে কবর। পৃথিবীতে যত মুসলিম ব্যক্তি রয়েছে সবাইকে এই কবরে সমাধিত হতে হবে। মৃত্যুর পর হতে কেয়ামত পর্যন্ত কবরে অবস্থান করতে হয়। জীবনমাত্রই মরণশীল। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেন “কুল্লু নাফসিন জায়িকাতুল মাউত’ অর্থাৎ ‘প্রত্যেক সত্তাই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১৮৫)”। কাজেই এই পৃথিবীর প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। 


আমাদের আজকের আর্টিকেলে মূল বিষয় হচ্ছে “কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন”। আমরা চেষ্টা করব এই বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য। সকলের ধৈর্য, সময় নিয়ে অপেক্ষা করুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আমরা এই ব্যাপারে আলোচনা করছি। 

  • ভূমিকা। কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন
  • কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা।
  • সর্বশেষ - কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন।

কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা।

অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর প্রতি ঈঙ্গিত করে তাঁরা প্রশ্ন করেন, 'তোমাদের মাঝে প্রেরিত এ ব্যক্তি কে? সে বলে, 'আমি আল্লাহর কিতাব (কুরআন) পড়েছি এবং তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে জেনেছি।' তাঁরা পুণরায় প্রশ্ন করেন, 'তুমি কি আল্লাহকে দেখেছ?' সে বলে, 'দুনিয়ায় আল্লাহকে দেখা কারোর পক্ষে সম্ভব নয়।' অনন্তর আকাশবাণী আসে, "আমার বান্দা সত্যই বলেছেন। সুতরাং, তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, জান্নাতী পোষাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের প্রতি (কবর থেকে) একটি দুয়ার খুলে দাও।" অতঃপর জান্নাতী সুগন্ধময় শীতলবায়ু তার কবরে আসতে থাকে। তার কবরকে দৃষ্টি বরাবর প্রসারিত করা হয়। অতঃপর সুশ্রী, সুসজ্জ, সুবাসিত এক সঙ্গী উপস্থিত হয়ে বলে, 'তুমি সুখ ও আনন্দের সুসংবাদ নাও। এটাই তোমার প্রতিশ্রুত দিন।' মুমিন বলে, 'তুমি কে? তোমার চেহারা যেন মঙ্গলের বার্তা বহন করে। সঙ্গী বলে 'আমিই তোমার নেক আলম (সৎকর্ম)।' তখন (খুশী হয়ে) মুমিন বলে, 'হে আমার প্রতিপালক! কিয়ামত সংঘটিত কর! কিয়ামত কায়েম কর! যাতে আমি আমার আত্মীয়-স্বজনদের নিকট ফিরে যেতে পারি।'

আর পড়ুনঃ কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন

কুরআন মাজীদের একাধিক আয়াতে কবরের আযাব সম্পর্কিত ইঙ্গিত পাওয়া যায়। (কুঃ ৯/১০১, ১৪/২৭, ৪০/৪৫- ৪৬) আল্লাহর হিকমত ও ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি কোন কোন ব্যক্তি বিশেষকে কবরের আযাব শুনিয়ে ও দেখিয়ে থাকেন। যেমন, মহানবী (সাঃ) কয়েকবার নিজে শুনেছিলেন। (বুঃ ২১৬, মুঃ ১৯২, ২৮৬৭)

যার কাছে কুরআনী ইল্ম আছে (আলেম ও ক্বারী) অথচ তার প্রতি অবহেলা করে রাত্রে নিদ্রায় বিভোর থাকে এবং দিনে তার উপর আমল করে না তাকে (এবং যে ফরয নামায না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে তাকে) বারযাখে চিৎ করে শায়িত করা হয়েছে। আর তার শীর্ষদেশে দন্ডায়মান একজন (ফিরিস্তা) তার মস্তকে (ছোট) পাথর ছুঁড়ে মারছে। তাতে তার মস্তক বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং ছুঁড়া পাথরটি পুণরায় কুঁড়িয়ে এনে পুণরায় ছুঁড়ে মারার পূর্বেই তার মস্তক অক্ষত অবস্থায় প্রত্যাবৃত্ত হচ্ছে। আর পুনঃ পুনঃ কিয়ামত অবধি এইভাবে তার আযাব হতে থাকবে।

ব্যভিচারী পুরুষ ও নারীগণ নগ্নাবস্থায় এক অগ্নিকুন্ডের ভিতরে অবস্থান করছে। অগ্নিশিখা উপরে উঠলে তার সাথে তারাও ভেসে উঠছে। নীচে নামলে তারাও নামছে। আর এইভাবে কিয়ামত পর্যন্ত তারা সেই কুন্ডে জ্বলতে থাকবে। 

সুদখোর ব্যক্তি রক্তের এক নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। নদীর তীরে একজন ফিরিশতা সামনে রয়েছে পাথর। যখনই লোকটি নদীর তীরে উঠে আসার চেষ্টা করছে, তখনই ফিরিস্তা তার মুখে পাথর মেরে (ভরে) নদীর মাঝে যেতে বাধ্য করছেন। তার এইভাবে কিয়ামত তক সে খুনের নদীতে হাবুডুবু খেতে থাকবে। (বুঃ৭০৪৭, মিঃ ৪৬২১)

অবোলা জন্তুরা এই আযাব শুনতে ও বুঝতে পারে। (মুঃ ২৮৬৭) (গোরস্থানে পশু চকিত হলে বুঝা যায়। তবে কোন পশুর কবরের সাথে শিং-লড়াইকে আবাক হওয়ার লক্ষণ বলা যায় না।) তাছাড়া, অন্যান্য মানুষও শুনতে বা দেখতে পারে। স্বপ্নও জাগ্রত অবস্থায় বহু সালেহ ও নেককার লোকের দেখা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। অনেকে কবরস্থানে আগুন বা আলো দেখে কবরের আযাব কিংবা রহমত মনে করে। কিন্তু তার জলন্ত মিথেন গ্যাস, আলো কিংবা খেঁকশিয়ালের দীপ্ত মুখও হতে পারে। আল্লাহর সাধ্যে কিছুরই অসম্ভব নয়। ঐ ছোট্ট সংকীর্ণ জায়গার সব কিছু সম্ভব। বিশেষ করে সেই সমস্থ মৃতের জন্য যারা কোন জন্তুর পেটে হজম হয়ে বা আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়ে বিনাশিত হয়ে গেছে। (ফঃ উঃ ২/১৬৫)

সর্বশেষ - কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন।

জীবন মানেই মরণশীল। দুনিয়ার জীবন হচ্ছে আখেরাতের কর্মক্ষেত্র বা পরীক্ষার স্থল। এখানে যে রকম আমল করবে আখেরাতে ঠিক সেরকম ফলই পাবে। তাই সকলের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ এখান থেকে আমরা যেন ভালো আমল এবং ইবাদত করে মৃত্যুবরণ করতে পারি। তাহলে আমাদের পরবর্তী জীবন সার্থক ও সুন্দর হবে এবং আমরা জান্নাত পাব ইনশাআল্লাহ। 

আর পড়ুনঃ জানাজার নামাজের নিয়ম, সঠিক নিয়ত, দোয়া ও ফজীলত

আমাদের আজকের আর্টিকেল আর মুল বিষয় ছিল “কবর ও মধ্যকাল সম্পর্কে জানুন”। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিহ আলোচনা করাজ চেষ্টা করেছি। যদি আমাদের আজকের এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার প্রিয়জনদেরকে শেয়ার করার জন্য বিশেষ করে অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url