নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি

আমরা সবাই জানি দুনিয়ার ভালো-মন্দ কৃতকর্মের ফলাফল আখেরাতে দেওয়া হবে। দুনিয়াতে যারা বেশি বেশি ভালো কাজ করবে, ভালো নেক কাজ করবে, তারা কিয়ামতের দিন সফলকাম হবে। কিয়ামত দিবসে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, কেউ কারো কোন উপকার আসবে না। এমনকি নিজের সন্তানও কারো কাজে আসবেনা। 


দুনিয়াতে যারা নিয়মিত নামাজ আদায় করবে, অন্যের হক নষ্ট করবে না, যাকাত প্রদান করবে, হাশরের ময়দানে তারা খুব আনন্দ এবং উল্লাসে থাকবে। তাদের জাহান্নামের আগুনের জন্য কোন ভয় থাকবে না। তারা নাজাত পেয়ে যাবেন। মহান আল্লাহ পাক তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করবেন।  

আমাদের আজকের বিষয় হচ্চে “নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি”। আসুন এখন আপনাদের সামনে আলোচনা করছি “নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি” নিয়ে। আশা করছি আমাদের সঙ্ঘে থাকবেন।

সূচিপত্র - নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি।

  • ভূমিকা।
  • রুকু করার ফজীলত। 
  • সিজদা করার ফজীলত। 
  • আত্তাহিয়‍্যাতু পাঠের ফজীলত। 
  • দরুদ শরীফ পাঠের ফজীলত। 
  • সালামের ফজীলত।
  • তারাবীহ নামাজের ফজীলত।
  • দু'ঈদের রজনীর (রাতের নামাজ) ফজীলত। 
  • নামাজীদের জন্য পাঁচটি নেয়ামত।
  • উপসংহার - নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি।

রুকু করার ফজীলত। 

যখন নামাজী ব্যক্তি রুকুতে যায় তখন তার নিজের ওজন সমপরিমাণ স্বর্ণ আল্লাহর রাস্তায় সদকা করার সওয়াব পায়। নামাজী যখন সে সেজদায় "সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম" বলে তখন সে এত অধিক পরিমাণে নেকী লাভ করে, সে যেন সমস্ত আসমানী কিতাব পাঠ করেছে।


সিজদা করার ফজীলত। 

যখন নামাজী ব্যক্তি সিজদা করে তখন সমস্ত জ্বিন-ইনসানের পরিমাণ নেকী সে লাভ করে। আর যখন সে সিজদায় "সুবহানা রাব্বিয়াল আলা" বলে তখন সে একটি গোলাম মুক্ত করার সওয়াব লাভ করে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যদি তোমরা আমার সাথে জান্নাতে বসবাস করতে চাও, তবে এই ব্যাপারে আল্লাহকে অধিক পরিমাণে সিজদা করে আমাকে সাহায্য কর।

আত্তাহিয়‍্যাতু পাঠের ফজীলত। 

যখন নামাজী ব্যক্তি আত্তাহিয়্যাতু পাঠের জন্য বসে তখন সে আইয়ুব (আঃ) এবং হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর মত সবর কারীর নেকী লাভ করে থাকে।

দরুদ শরীফ পাঠের ফজীলত। 

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর দরুর শরীফ পাঠ না করা পর্যন্ত দোয়া আসমান ও জমীনের মাঝামাঝি স্থানে ঘোরফেরা করতে থাকে। যে ব্যক্তি আমার প্রতি জুমআর দিন ৪০ বার দরুদ শরীফ পাঠ করে আল্লাহ তার জন্য ৪০ বছরের পাপ ক্ষমা করে দেন (হাদীস)।

সালামের ফজীলত

যখন নামাজী ব্যক্তি নামাজ হইতে অবসর হওয়ার জন্য সালাম ফেরায় তখন তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হয়। তখন তার যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে (শরহে আরবায়ীন)।

তারাবীহ নামাজের ফজীলত।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমরা জানো, আল্লাহপাক তোমাদের ওপর রমজান মাসের রোজা ফরজ করেছেন এবং তার রাতে তারাবীহ নামাজ সুন্নাত করেছেন। যে ব্যক্তি খাছ নিয়াতে ঈমানের সাথে কেবলমাত্র ছাওয়াবের আশায় এ মাসে দিনের বেলায় যথারীতি রোজা রাখবে এবং রাতে যথারীতি তারাবীহর নামাজ আদায় করবে তার বিগত সব (ছগীরা) গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। অতএব, এ পবিত্র মাসে বেশি পরিমানে ছাওয়াব অর্জন করে নেয়া উচিত। এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের সত্তরটি ফরজের সমনা এবং একটি নফল একটি ফরজের সমান।

দু'ঈদের রজনীর (রাতের নামাজ) ফজীলত। 

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে লোক ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর এবাদত মশগুল থাকবে, যে দিন অন্যান্য দেল মারা যাবে, সে দিন তার দেল মারা যাবে না। অর্থাৎ, কিয়ামতের দিনের আতঙ্কে অন্যদের দেল ঘাবড়িয়ে মৃত্যপ্রায় হয়ে যাবে কিন্তু দু'ঈদের রাতে রাত জাগরণকারীর দেল তখন ঠিক থাকবে, ঘাবড়াবেনা (তাবরাণী)।

নামাজীদের জন্য পাঁচটি নেয়ামত। 

যে ব্যক্তি এহতেমামের সাথে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্টি হয়ে তাকে পাঁচটি নেয়ামত দান করবেন। এ পাঁচটি নেয়ামতের একটি দুনিয়াতে দেবেন আর বাকি চারটি দেবেন আখেরাতে। সেগুলো হলোঃ- 

১। দুনিয়াতে তার রিযিক কুষাদার করে দেবেন। তদুপরী তার রোজগারে সংকীর্ণতা দূর করে প্রশস্ত করে দেবেন
২। করবের আজাব হটায়ে দেবেন
৩। হাশরের মাঠে ডান হাতে আমলনামা দেবেন
৪। বিজলীর ন্যায় ৩০ হাজার বৎসরের পথ "পুলসেরাত" পার করিয়ে দেবেন
৫। বিনা হিসেবে বেহেস্তে প্রবেশ করায়ে দিবেন।

 

উপসংহার - নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি।

আমরা আজকে আলোচনা করেছি “নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি”। সম্মানীত পাঠক্রম আপনাদের সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ হচ্ছে পরকালের সাফল্যের চাবিকাঠি হচ্ছে "নামাজ"। আসুন আমরা সকলে মিলে নিয়মিতভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। তাহলে আমাদের ইহকাল ও পরকালে শান্তি এবং নাজাত পাবো ইনশাআল্লাহ।


আপনারা যদি আমাদের এই “নামাজ আদায়ের ফজীলত এবং নামাজীদের জন্য নেয়ামতগুলি কি কি” লেখাটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের সঙ্ঘে থাকবেন এবং সবাইকে শেয়ার করবেন। 

মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে যেন জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন (আমিন)।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url