গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি

আজ আমি এই আর্টিকেলে একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে না জানেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয়ে জানতে হলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি

আপনি যখন গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে জানতে পারবেন তখন আপনি আপনার প্রিয়জনের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।

পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি

গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি

একটি মেয়ের জীবনে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হচ্ছে মা হওয়া। গর্ভবতী মায়ের জীবনে সন্তান ধারণের দশ মাসে অনেক পরিবর্তন আসে। সন্তানের সুরক্ষার জন্য গর্ভবতী মায়েদের সতর্ক থাকা দরকার। আসুন তাহলে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি।

আরো পড়ুনঃগর্ভবতী মায়ের খাদ্য ও পুষ্টি

করনীয় কাজগুলোঃ গর্ভাবস্থায় শুরু থেকেই প্রতিদিন নিয়মিত একবেলা আয়রন ঔষধ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ও দুটি আয়রন ট্যাবলেট খাবার পর খেতে হবে। একসাথে আয়রন ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন না। ডাক্তারদের মতে গর্ব অবস্থায় অন্তত চারবার ডাক্তারের কাছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যেতে হবে। জ্বর, ব্যথা বা যন্ত্রণার জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। 

ডাক্তারের সাথে কথা বলার আগে কোন ঔষধ, মলম বা লোশন ও ব্যবহার করবেন না, ভ্রমন করার সময় খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার এবং কাছে বা দূরে যেখানে যান না কেন আপনার কাছে প্রয়োজনীয় জিনিস ও ওষুধপত্র আছে কিনা তা খেয়াল করুন। গর্ভাবস্থায় দিনে অন্তত দুই ঘন্টা ও রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি সে বিষয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

বর্জনীয় কাজগুলোঃ ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো করা যাবে না যেমন বাড়িতে ভারী কাজ, চাপকল চাপা, ভারী কাপড় ধোয়া, ধান ভাঙ্গা, পানি ভর্তি বড় কলস বহন করে আনা যাবে না, মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত সব সময় হাসি খুশি থাকতে হবে। মানসিক চাপ থাকলে গর্ভাবস্থায় শিশুর মানসিক বিকাশের বাধা সৃষ্টি করতে পারে। 

শারীরিক আঘাত থেকে নিজেকে সতর্ক রাখাতে হবে, তলপেটে আঘাত, চাপ লাগা কিংবা এমন কোন কাজ করা যাবে না যা সমস্যার কারণ হতে পারে। নানা রকম শারীরিক সমস্যার সমাধান থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, ইনফেকশন ইত্যাদি থাকলে তা ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে, খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, গর্ব অবস্থায় কাঁচা ডিম খাবেন না, কাঁচা দুধে ব্যাকটেরিয়া থাকে দুধ ভালো করে ফুটিয়ে খাবেন। 

অতিরিক্ত কলিজা খাবেন না বাচ্চার জন্য সমস্যা হতে পারে, সামুদ্রিক মাছ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু অল্প পরিমানে খাওয়া ভাল, কাঁচা বা পাকা পেঁপে বিপদ জনক খাবেন না এতে গর্ভপাতের আশঙ্কা রয়েছে। আর্টিকেলটিতে আমি গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি সে বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

গর্ভাবস্থায় মায়ের করনীয়

গর্ভাবস্থায় মায়ের করনীয় এ বিষয়ে আমি আপনাদেরকে কিছু তথ্য প্রদান করব আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন। গর্ভাবস্থায় মায়ের নিজের প্রতি যত্নশীল ও পরিষ্কার থাকা উচিত। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া তিনবেলা খাওয়ার পাশাপাশি একটু বেশি পরিমাণে খাবার খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় পরিমত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি ও মৌসুমী ফল খেতে হবে। শাকসবজি, ফলমূল কিনে আনার পর আধা ঘন্টা পানিতে ধুয়ে খেতে হবে।  

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মহিলার পানি ভাঙ্গে কখন

গর্ভাবস্থায় প্রথম থেকে দু তিন মাস এবং শেষের দিকে তিন মাস ঝুঁকিপূর্ণ কাজ না করে হালকা কাজ ও সাবধানে হাঁটা চলা করতে হবে, ভারী কাপড় কাচা, চাপ কল চাপা, কলসিতে করে পানি বহন করা যাবে না, ধান সিদ্ধ করা এই সমস্ত কাজ করা যাবেনা। গর্ভাবস্থায় কাত হয়ে শোয়াই ভালো দিনে দুই ঘন্টা ও রাতে আধ ঘন্টা ঘুমানো দরকার। গর্ভাবস্থায় মায়ের করনীয় এ বিষয়ে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।  

গর্ভাবস্থায় মা নিজেকে সব সময় পরিপাটি, পরিস্কার পরিছন্ন রাখবেন ও ত্বকের যত্ন নিবেন, ভ্রমণের সময় খেয়াল রাখতে হবে দূরে অথবা কাছে যেখানে যান না কেন প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও জিনিস পত্র আছে কিনা। গর্ভাবস্থায় নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে থাইরোড, ডায়াবেটিস, ইনফেকশন, জ্বর, সর্দি, কাশি, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন, আগে কোন ওষুধ খাবেন না।গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি সে বিষয়ে আপনি নিশ্চয়ই একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর প্রতি স্বামীর করণীয়

গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের শরীরের নানা রকম পরিবর্তন আস্তে আস্তে বাড়বে, আপনার স্ত্রীর শরীরের পরিবর্তন, ত্বকের সৌন্দর্য ও শরীরের গঠনের জন্য মনে অনেক কিছু আসতে পারে এ সময় স্বামীর উচিত তার প্রশংসা করা এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তার পাশে থাকা। গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া দায়িত্ব তার স্বামীকেই নিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

প্রথমদিকে প্রতি মাসে অন্তত দুই বার করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং কোন জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বাড়িতে নানা রকম কাজে থেকে সহায়তা করতে হবে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার, রান্না করা ও বিভিন্ন রকম কাজ স্ত্রীকে খুশি করার জন্য করতে পারেন এবং তার পছন্দের খাবার, ফুলের তোড়া বা কোন গিফট নিয়ে যেতে পারেন, গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর কোন দোষ ধরবেন না। 

আগে আপনার স্ত্রী যে সমস্ত কাজ করত গর্ভাবস্থায় অনেক কাজই করতে পারবেনা, তখন ভুল ধরবেন না বরং তার খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দিন। শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি ও অতিরিক্ত খাবারের নজর দিন যেমন মাছ, মাংস, ফলমূ্ল, শাকসবজি, দুধ, কলা ইত্যাদি। ডেলিভারির এক মাস আগে থেকে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন কারণ সময়ের আগে ডেলিভারি হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। আর্টিকেলটিতে আমি গর্ভাবস্থায় স্ত্রীর প্রতি স্বামীর করণীয় এ বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছি আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।

গর্ভাবস্থায় ঘরের কোন কাজগুলো করা উচিত

প্রত্যেকটি মেয়ের জীবনে গর্ভাবস্থায় একটু গুরুত্বপূর্ণ সময়। গর্ভাবস্থায় শারীরিক কোন সমস্যা হলে ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের বেশিক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা উচিত নয় এতে পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে, গর্ভাবস্থায় রান্না করা, ভারী কাজ করা যাবেনা। মাংস, কাঁচা ডিম, চিপস, কাঁচা দুধ খাবেন না এতে গর্ভে বাচ্চার সমস্যা হতে পারে এবং মায়ের কষ্ট কাঠিন্য হতে পারে।  

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী সময় সহবাসের নিয়ম

ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা যাবে না, পানি ভর্তি কলস বহন করা, ভারী কাপড় কাঁচা যাবেনা, গর্ভবতী মাকে এক সাইডে কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে, দিনে অন্তত দুই ঘন্টা ও রাতে আট ঘন্টা মতো ঘুমানোর প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় ঘরের কাজ সহ নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বড় মনীষীদের জীবনী পড়তে হবে। আলোচনাটি থেকে আপনি নিশ্চয়ই গর্ভাবস্থায় ঘরের কোন কাজগুলো করা উচিত সে বিষয়ে বুঝতে পেরেছেন। 

উপসংহার

পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করবো যে মেয়েদের গর্ভধারণ একটি জীবনের নতুন অধ্যায় তাই আমরা পরিবারের সবাই তার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ ভাবে নজর রাখব। উক্ত আর্টিকেলটিতে আমি গর্ভাবস্থায় করনীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি এ বিষয়সহ গর্ভাবস্থায় মায়েদের অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছি আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url