স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়


স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? স্বপ্নদোষ বিষয়টি নিয়ে অধিকাংশ ইয়ং বয়সের ছেলেরা দুশ্চিন্তায় ভোগে এবং বিভিন্ন ঔষধ সেবন করে থাকে। আপনি জানেন কি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়ও আছে। তাই ঔষধ সেবন না করে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় অবলম্বন করলে আপনি কতটুকু উপকৃত হবেন সে বিষয়ে আলোচনা করবো আজকের আর্টিকেলে।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়

তাহলে চলুন স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র: স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়

ভূমিকা

যৌন রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে স্বপ্নদোষ অনেক কারণে হতে পারে। যেমন: হস্তমৈথুন, মানসিক মৈথুন, অপ্রাকৃতিক মৈথুন ও উষ্ণ খাবার খাওয়া, অশ্লীল পরিবেশ, অস্বাভাবিক হারে মাদক সেবন এগুলোই স্বপ্নদোষ হওয়ার কারণ। মৈথুন তান্ত্রিক যৌনতার মধ্যে যৌন মিলনের জন্য সংস্কৃত শব্দ অথবা উৎপাদিত যৌন তরলের নির্দিষ্ট অভাবের জন্য যখন মিথুন হল এমন আচারে অংশগ্রহণকারী দম্পতি। অধিক হারে হস্তমৈথুন করা স্বপ্নদোষ হওয়ার প্রধান কারণ। স্বপ্নদোষ মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আমরা হস্তমৈথুন বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে পরামর্শ করে থাকি।


এমনকি ইউটিউব অথবা গুগল থেকেও বিভিন্ন প্রকার অনুসন্ধান করে থাকি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার খাবার বা কি কি খাবার খেলে স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এ সম্বন্ধে। এমনকি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার হোমিও ঔষধী মানুষের শরীরের জন্য কতটা উপযোগী ও স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয় এই সমস্ত বিষয়ে আমরা বিভিন্ন ইন্টারনেট সাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে থাকি এবং এই বিষয়ে সমাধান গ্রহণ করে থাকি। আল্লাহ মানুষের শরীরে যেমন সমস্যা দিয়েছে তেমনি তার বহু সমাধানও দিয়েছেন।তেমনি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আল্লাহ কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে আলোচনা করেছেন।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার নানাবিধ উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়। যেসব ভাইদের স্বপ্নদোষের সমস্যা হয় তাদের জন্য হযরত মুহাম্মদ (স:) একটি কার্যকারী দোয়া বলে দিয়েছেন। এমনটি হচ্ছে কুরআনে কারীমের একখানা সূরা। সূরাটির নাম হচ্ছে সূরা তারিক। সূরাটি অনেকের মুখস্ত থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনারা কোরআনের ৩০ নাম্বার পারা যদি খোঁজেন তাহলে সূরা তারিক খুঁজে পাবেন।


সূরা তারিকের এক নাম্বার আয়াত থেকে শুরু করে দশ নাম্বার আয়াত পর্যন্ত রাতে ঘুমানোর আগে পড়তে হবে। এই আয়াত গুলো পড়ে বুকে ফু দিয়ে ঘুমালে ইনশাআল্লাহ আল্লাহর মেহেরবানীতে আপনার স্বপ্নদোষের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নিচে সূরাটির বাংলা উচ্চারণ লিখে দেওয়া হল:

ওয়াছ ছামাই ওয়াততা-কিক। ওয়া মাআদরা-ক মাত্তা-রিক। আন্নাজ মুছছা-কিব। ইন কুল্লুনাফছিল লাম্মা-আলাইহি-হা-ফিজ। ফালইয়ানযুরিন ইনছা-নুমিম্মা খুলিক। খুলিকা মিম্মাইন দা-ফিকি। ইয়াখরুজুমিম বাইনিসসুলবি ওয়াত্তারাইব। ইন্নাহূ আলা-রাজইহি লাকা-দির। ইয়াওমা তুবলাছ ছায়াইর। ফামা-লাহূমিন কুওওয়াতিও ওয়ালা-না-সির।

এই দোয়াটি পড়ার নিয়ম হলো:

দোয়াটি পড়ার আগে ও পরে দরুদ পড়তে হবে। দোয়াটি পড়ার প্রথমে দরুদ পড়ে নিয়ে তারপর দোয়াটি পড়ে আবার শেষে দরুদ পড়তে হবে। আরো বেশি ভালো হয় যদি আমলটি করার আগে আপনারা ওযু করে নিন তাহলে। এমনকি আপনারা যে বিছানায় শুয়ে আমলকি করলেন সেটি যদি পবিত্র হয় তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।


এছাড়াও আরেকটি আমল আছে সূরা ইখলাস। সূরা ইখলাস তিনবার পড়ে সূরা নাস সূরা ফালাক পড়ে বুকে ফু দিয়ে ঘুমাতে পারেন। এই আমলটিও যথেষ্ট ফলদায়ক। এই আমলগুলো হচ্ছে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার খাবার

স্বপ্নদোষ একটি মারাত্মক সমস্যা। কোন অশ্লীল ছবি বা ভিডিও, কোন খারাপ চিন্তা ভাবনা বা অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য পান করার ফলে এবং অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে। স্বপ্নদোষ শরীরের জন্য একটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হলেও এর সমাধানও রয়েছে অনেক। আপনি চাইলেই আপনার স্বপ্নদোষের সমস্যা সহজে ভালো করতে পারেন। এটা বড় কথা না যে স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয়। আপনি যেভাবে আপনার অভ্যাসকে গড়ে তুলবেন আপনার শরীরের সুস্থতা ও অসুস্থ তার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে।

আপনি যদি সেসব অভ্যাস গুলোকে সবসময় নিজের মধ্যে ধারণ করেন তাহলে নিয়মিত স্বপ্নদোষের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন চিকিৎসকের পরামর্শও শুনে থাকি আবার ইউটিউব ও গুগল থেকেও এ বিষয়ে বিভিন্ন সমাধান সম্পর্কে জেনে থাকি যে স্বপ্নদোষের সমস্যা ভালো করার অনেক ঔষধ রয়েছে এমনকি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার হোমিও ঔষধ ও রয়েছে যার সেবনের ফলে আপনি আপনার শরীরকে সুস্থ করতে পারবেন।


এমনকি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় ও রয়েছে অনেক যা আপনি কোরআন ও হাদিস থেকে জ্ঞান অর্জন করে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারবেন। এমনকি কিছু কিছু খাবার ও আছে যা খাওয়ার ফলে আপনার শরীর সুস্থ হবে এমন কি স্বপ্নদোষ হওয়ার সমস্যা থেকেও আপনি নিজেকে বাঁচাতে পারবেন। স্বপ্নদোষ বন্ধ করার খাবার গুলো এবং কিভাবে জীবন যাপন করলে স্বপ্নদোষ হবে না এ সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করা হলো:
  • স্বপ্নদোষ বন্ধ করার খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে বৈঁচি ফলের রস। এটি বিশ্বাস করা হয় যে এক গ্লাস বৈঁচি ফলের রস খেলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • স্বপ্নদোষ বন্ধ করার খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুন। পেঁয়াজ এবং রসুনে শরীরের নানাবিধ অসুস্থতা সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে বলে জানা যায়। তিন থেকে চার কোয়া কাঁচা রসুন আর পেঁয়াজ যদি স্যালাড হিসেবে খাওয়া যায় তবে স্বপ্নদোষের হাত থেকে নিরাময় পাওয়া যেতে পারে।
  • তুলসী পাতার রসের চা স্বপ্নদোষের সমস্যা ভালো করতে খুবই উপকারী।
  • দৈনিক স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাহলে এই সমস্যার সাথে যুক্ত দুর্বলতা এবং অন্যান্য উপসর্গ প্রতিরোধ করা সক্ষম হবে।
  • অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা পাউডার এবং শিলাজিতের মতো বিভিন্ন হারবাল আয়ুর্বেদিক এ ধরনের সমস্যার প্রতিকার হিসেবে প্রমাণিত। এই জাতীয় খাবার গুলো নিয়মিত সেবন শুধুমাত্র স্বপ্নদোষ এর সাথে লড়াই করে না এমনকি হারিয়ে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
  • একটু হালকা গরম পানিতে গোসল শুতে যাওয়ার আগে স্বপ্নদোষের সাথে লড়াইয়ের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
  • আপনার চিন্তাভাবনার সাথে লড়াই করুন। দুশ্চিন্তা সবসময় খারাপ মন মানসিকতার দিকে মানুষকে অগ্রসর করে। নিজের চিন্তা ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা কেউ স্বপ্ন দোষের কারণ হিসেবে ধরা হয়। এক্ষেত্রে মেডিটেশন বা যোগ্য ব্যায়াম খুবই কার্যকর।

স্বপ্নদোষ বন্ধ করার হোমিও ঔষধ

স্বপ্নদোষ এমন একটি সমস্যা যা অল্প বয়সের ছেলেদের বা মধ্য বয়সের ছেলেদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। অনেক সময় একটু বেশি বয়সের ছেলেদের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। কিন্তু বেশি বয়সে ছেলেদের ক্ষেত্রে খুব কমই এমনটা হয়। স্বপ্নদোষ হচ্ছে স্বপ্নের মাঝে বীর্যপাত হয়ে যাওয়ার মত একটি ডিজিজ। যে সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকেই আছে যারা চিকিৎসকের কাছে বলতে লজ্জা বোধ করে। তাই এর কিছু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে যার দ্বারা আপনি আপনার স্বপ্নদোষের সমস্যাকে সম্পূর্ণরূপে সমাধান করতে পারেন। স্বপ্নদোষ বন্ধ করার হোমিও ঔষধ গুলি সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করা হলো:
  • Dioscorea: যেসব ছেলেদের রাতের মধ্যে দুইবার তিনবার স্বপ্নদোষের সমস্যা হয়ে যায় বা অতিরিক্ত মাত্রায় স্বপ্নদোষের সমস্যা হয়ে যায় তাদের জন্য Dioscorea ঔষধটি সবচেয়ে উপযোগী।
  • Digitalis: যেসব মানুষের হার্টের সমস্যা থাকে তাদের যখন স্বপ্নদোষের সমস্যা হয় তখন তাদের জন্য Digitalis ওষুধটি অত্যন্ত উপযোগী।
  • Acidum phosphoricum: যে সকল ছেলেদের দেখা যায় অনেক ছোট বয়স থেকে হস্তমৈথুন করার অভ্যাস থাকে তাদের শারীরিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে বিপর্যস্ত থাকে তাদের ক্ষেত্রে Acidum phosphoricum ওষুধটি সবচেয়ে উপযোগী।

স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয়

অবিবাহিত ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৫ বছর বয়সী ছেলেদের সপ্তাহে ০.৩৬ বার থেকে শুরু করে ৪০ বছর বয়সী পুরুষদের সপ্তাহে ০.১৮ বার স্বপ্নদোষ হয়। আবার বিবাহিত পুরুষদের ক্ষেত্রে স্বপ্নদোষের মাত্রা ১৯ বছর বয়সী ছেলেদের সপ্তাহে ০.২৩ বার থেকে ৫০ বছর বয়সে পুরুষদের সপ্তাহে ০.১৫ বার হয়ে থাকে। এ সমস্যা এমন একটি সমস্যা যা হয় না এমন ছেলেদের সংখ্যা নেই।


কিন্তু এই সমস্যার বহু সমাধান রয়েছে। যেমন: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এলাপতি ওষুধ খাওয়া আবার এর সমস্যার বহু হোমিও প্যাথিক ওষুধ রয়েছে যার সাহায্যে আপনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আবার বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যার শারীরিক দুর্বলতা থেকে আপনি কাটিয়ে উঠতে পারেন।

যেহেতু স্বপ্নদোষ হওয়ার পিছনে দায়ী হচ্ছে মনের চাঞ্চল্য বোধ। তাই মনকে সব সময় স্বাভাবিক রাখতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া কোরআন ও হাদিস পড়ার কোন বিকল্প নেই। এমনকি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায় রয়েছে যা অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি আপনার শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে পারবেন।

শেষ কথা

উপরে উক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়। সাথে আরো আলোচনা করেছি স্বপ্নদোষ কতদিন পর পর হয় এবং এই সমস্যার ঔষধ ও কি কি খাবার খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এ সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে। আশা করি যে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার ইসলামিক উপায়টি আমি আলোচনা করেছি এই উপায়টি থেকে আপনারা উপকৃত হবেন।

আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ও এর কার্যকারিতা সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েব সাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url