গাজর চাষ পদ্ধতি কি


আমাদের মধ্যে অনেকের শখ থাকে চাষ করার। সবচেয়ে সহজ চাষ হলো গাজর। আপনাদের মনে নিশ্চয়ই ঘুরছে গাজর চাষ পদ্ধতি কি? গাজর চাষ পদ্ধতি কি এটি জানতে হলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। চলুন তাহলে গাজর চাষ পদ্ধতি কি জেনে নেই।

গাজর অধিক পুষ্টিগুণ সম্পর্ণ একটি সবজি। আমরা অনেকেই ছাদে অথবা জমিতে চাষ করতে চাই। এর জন্য গাজর চাষ পদ্ধতি কি এটি জেনে থাকা জরুরী। কারণ কখন এটি কাজে লাগবে তা বলা মুশকিল।

পেজ সূচিপত্রঃ গাজর চাষ পদ্ধত,

গাজর চাষের পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়

গাজর চাষ পদ্ধতি কি জানতে হলে গাজরের কিভাবে পরিচর্যা করতে হয় তা জানতে হবে। ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ পুষ্টিকর সবজি হলো গাজর। এতে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, শ্বেতসার এবং অন্যান্য ভিটামিন যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। বীজ থেকে চারা গজাতে ১০-২০ দিন সময় লাগতে পারে।

তবে বপনের আগে বীজ ভিজিয়ে রাখলে ১৮-২৪ ঘন্টা বা ৭-১০ দিনের মধ্যে চারা বের হয়। চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর ৮-১০ সেমি পরপর ১ টি করে গাছ রেখে বাকী সব উঠিয়ে ফেলতে হবে। একই সাথে আগাছা পরিস্কার ও মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। প্রয়োজনমত সেচ দেয়া ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। মাটির জো দেখে দুই সপ্তাহ পর পর ৩-৪ টি সেচ দেওয়া উৎপাদনের জন্য অনেক ভালো।

গাজর চাষ পদ্ধতি কি

গাজর অধিক পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ একটি সবজি। গাজরে অধিক পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা বলে শেষ করার মতো নয়। আমরা অনেকেই জানতে চাই গাজার চাষ পদ্ধতি কি। তাই নিম্নে গাজর চাষ পদ্ধতি কি তা সম্পর্কে দেওয়া হলোঃ
  • গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে মাটি বা জমি। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে এমন বেলে দোঁআশ ও দোআঁশ মাটি গাজর চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
  • গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে হলো গাজর চাষের সময়। আশ্বিন থেকে কার্তিক (মধ্য সেপ্টেম্বর-মধ্য নভেম্বর) মাস বীজ বপনের উত্তম সময়।
  • গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি হেক্টরে ৩-৪ কেজি বীজ লাগে।সারি-সারির দূরত্ব রাখতে হয় ২০-২৫ সেমি। গাছের দূরত্ব ১০ সেমি। সব বীজ এক ভাবে জমিতে পড়ে। বীজ সারিতে বপন করা যায় আবার ছিটিয়ে ও বপন করা যায়। তবে সারিতে বীজ বপন করাই ভালো।
  • গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে রয়েছে বীজ বপন করার আগে বীজ ভিজিয়ে নিতে হবে। গাজরের বীজের আকার খুব ছোট হয়ে থাকে তাই বীজ বপন করার আগে এর সাথে মাটি বা ছাই মিশিয়ে নিতে হবে।
  • গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ প্রদান করতে হবে। মাটিতে জো বুজে দুই সপ্তাহ পর পর জমিতে সেচ দিতে হবে। সাধারনত গাজর চাষের জন্য জমিতে ৩-৪ টি সেচ দেওয়া উচিত। জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে নালা তৈরি করে দিতে হবে যেন অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়।
  • জমিতে যেন আগাছা না জমে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আগাছা যে কোন গাছের জন্যই ক্ষতিকর। নিয়মিত আগাছা দমন করতে হবে। তাই বলা যায় গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে এটি অন্যতম।

গাজর চাষ পদ্ধতি কি এটি সম্পর্কে উপরের আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তাই আমরা যখন গাজর চাষ করতে চাইবো তখন আমাদের কোন রকমের কোন সমস্যা দেখা দিবে না। সফলভাবে গাজর চাষ করতে সক্ষম হব।

গাজর চাষে সার প্রয়োগ করতে হয় কিভাবে

গাজর চাষ পদ্ধতি কি এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে সার প্রয়োগের। কারণ সার প্রয়োগ যদি ঠিকমতো না করা হয় তাহলে ফলন ভালোবাসা সম্ভব নয়। তাই অবশ্যই সার প্রয়োগ পদ্ধতি জানতেই হবে।
গুণগত মানসম্মত ফসল পেতে হলে জমিতে সার দিতে হবে। জৈবসার প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। জৈবসার মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ দুটোই ভালো রাখে। কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন সার প্রয়োগ করতে হবে। এসব সারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, জিংক সালফেট প্রভৃতি।

গাজর সংগ্রহ করার সময় কখন

গাজর চাষ পদ্ধতি কি জানতে হলে গাজর সংগ্রহ করার সময় জানতে হবে। ফসল কাটার নিয়ম অনুযায়ী গাজর বপনের তিন মাসের মধ্যে সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত। তবে আপনি যদি ভাল ফলন পেতে চান তবে আপনার ১০০ দিনের আগে ফসল বাছাই করা উচিত নয়। পুষ্টিকর এবং ভালো মানের গাজর পেতে আপনাকে বীজ বপনের সময় থেকে ১০০-১২৫ দিনের মধ্যে গাজর সংগ্রহ করতে হবে।

শেষ কথাঃ গাজর চাষ পদ্ধতি কি

গাজর চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষক। সঠিক নিয়মে চাষ করলে গাজরের ভালো ফলন পাওয়া যায়। পুষ্টিগুণে অনন্য হলো গাজর। তাই এর চাহিদা তুলনামূলক বেশি। এটি শীতকালীন ফসল হলেও চাষিরা প্রায় সব মৌসুমে চাষ করে থাকেন। এ কারণে বছরের প্রায় সব সময়ই পাওয়া যায়। দেশের প্রায় সব জায়গায় গাজরের চাষ হয়।

গাজর চাষের জন্য দোআঁশ বা বেলে দোঁআশ মাটি উপযুক্ত। গাজর সব সময় চাষ করা হলেও মূল সময় হচ্ছে আশ্বিন থেকে কার্তিক। অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত গাজর বপনের  পাতা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা - থানকুনি পাতার ৫টি অপকারিতাউত্তম সময়। নাতিশীতোষ্ণ বা না শীত না গরম আবহাওয়া গাজরের জন্য উপযুক্ত।
আরো পড়ুনঃ থানকুনি
সে অনুযায়ী জমি নির্বাচন করতে হবে। তাপমাত্রা ও মাটির প্রকৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয় এই সবজি। তাই আবহাওয়া ও মাটির উর্বরাশক্তি কম-বেশি হলে গাজর চাষ ব্যাহত হয়। সুতরাং এদিক থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

পরিশেষে বলা যায় গাজর চাষ পদ্ধতি কি এটি সম্পর্কে আমরা অনেক ভালো একটি ধারণা লাভ করেছি। আমরা যারা গাজর চাষ করতে চাই তাদের জন্য এই পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ২৫৮৯০

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url