কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন

আমাদের আজকের আর্টিকেল মূল বিষয় হচ্ছে "কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন"। আমি লেখা শুরু করার আগে আপনাদেরকে জানাতে যাচ্ছি, আজকের আর্টিকেলে কি কি পাচ্ছেন, এ বিষয়টি। আপনারা পাচ্ছেনঃ "কিয়ামত অর্থ কি, কিয়ামত কি বা কিয়ামত কাকে বলে, পবিত্র কোরআনের আলোকে কিয়ামত, হাদিসের আলোকে কিয়ামত, কিয়ামতের ফিতনা সমূহ, কিয়ামতের ছোট আলামত এবং লক্ষণ সমূহ, কিয়ামতের বড় আলামত এবং লক্ষণ সমূহ, কিয়ামতের দিন কি হবে এবং সর্বশেষ মন্তব্য"।

ইয়াজুয-মাজূয এর ছবি 

আমরা সবাই জানি, মহান আল্লাহ পাক এ বিশ্বকে চির স্থায়ীত্বের জন্য সৃষ্টি করেননি। বরং এমন একদিন আসবে, যে দিন দুনিয়া নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আর সে দিনটিই হবে কিয়ামতের দিন। এটি একটি ধ্রুব সত্য, যাতে কোন সন্দেহ নেই। চরম পাপাচার ও অশান্ত অবস্থায় পৃথিবী কিছুদিন এভাবে চলবে। অবশেষে একদা একটি আওয়াজ শোনা যাবে এই আওয়াজ ক্রমে মৃদু থেকে ধীরে ধীরে প্রচন্ডতর হতে থাকবে।


এ আওয়াজ সর্বত্রই একই রকম শোনা যাবে। এটিই আল্লাহর আদেশে হযরত ইস্রাফিল (আঃ) সিংগায় ফুৎকার। সম্মানিত পাঠকগণ! আপনারা কি কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ - এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে অবশ্যই আমাদের এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলুন ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিই।
 

কনটেন্ট সূচিপত্র। কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন

ভূমিকা।
কিয়ামত অর্থ কি? 
কিয়ামত কি বা কিয়ামত কাকে বলে? 
পবিত্র কোরআনের আলোকে কিয়ামত।
হাদিসের আলোকে কিয়ামত।
কিয়ামতের ফিতনা সমূহ।
কিয়ামতের ছোট আলামত এবং লক্ষণ সমূহ।
কিয়ামতের বড় আলামত এবং লক্ষণ সমূহ।

কিয়ামতের দিন কি হবে?
সর্বশেষ মন্তব্য।

ভূমিকা। 

মহান আল্লাহ পাকের আদেশে হযরত ইস্রাফিল (আঃ) সিংগায় ফুৎকার দিবেন। অতঃপর সিংগায় ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথে এর আওয়াজ এতই বেশি কর্কশ ও রুঢ়তা হবে ক্রমশই আওয়াজের ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। আওয়াজ কোথায় থেকে আসছে তা নির্ণয় করা যাবে না। ফলে মানুষ মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন, বাড়ি-ঘর ইত্যাদি ছেড়ে মাঠের দিকে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকবে। আওয়াজের ভীতিকর অবস্থা জীব-জন্তুদেরকেও মাঠে নিয়ে আসবে। 


পবিত্র কুরআন মাজীদে মহান আল্লাহ পাক কিয়ামতের "ব্যাপারে ৩৮৯টি আয়াত" নাজিল করেছেন। এছাড়াও পবিত্র কুরআন মাজীদে "আল কিয়ামাহ'' নামে একটি সূরা নাজিল করেছেন। 

কাজেই এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সতর্ক থেকে কিয়ামত দিবসের পূর্বেই কি কি করনীয় এবং কি কি অকরণীয় এই ব্যাপারে কুরআন এবং হাদিসের আলোকে জীবন যাপন করতে হবে। তাহলে আমরা পরবর্তী জীবনে অর্থাৎ কিয়ামত দিবসে হিসাব নিকাশ মহান আল্লাহ পাকের নিকট উপস্থাপন করতে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। 

কিয়ামত অর্থ কি? 

কিয়ামত আমাদের কাছে খুব পরিচিত একটি শব্দ। এটি আরবি শব্দ "কিয়াম" থেকে এসেছে। এই শব্দটি অর্থ হচ্ছে "উঠে দাঁড়ানো বা পুনরায় উজ্জীবিত করা বা শেষ বিচারের দিন বা মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের দিন"

কিয়ামত কি বা কিয়ামত কাকে বলে?

ইসলামী আকীদা অনুসারে, ফেরেশতা ইসরাফিল (আ:) সিংগা মুখে নিয়ে ফুক দেওয়ার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশনা পাওয়ার অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন। আল্লাহ পাকের নির্দেশনা পাওয়ার সাথে সাথে তিনি যখন প্রথম বার সিংগায় ফুক দিবেন তখনই সারা বিশ্ব প্রলয় হয়ে যাবে (সকল পাহাড়-পর্বত ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে তুলার মত উড়তে থাকবে, আকাশের তারকা সমূহ খসে পড়বে, সকল সাগর-মহাসাগর, খাল-বিল, নদী-নালা কিছু সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সকল মানুষ ও জীবজন্তু মারা যাবে। এমনকি সমগ্র পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।


দ্বিতীয় বার সিংগায় ফুঁক দিবেন তখন মানুষসহ এ পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত সৃষ্ট জীবের আর্বিভাব হয়েছিল যে যেখানে থাকুক না কেন সেখান থেকে উঠে দাঁড়াবেন এটাকে বলে কিয়ামত অর্থাৎ পৃথিবীর ধ্বংসের দিনকে কিয়ামত বলা হয়।

শরীয়তের পরিভাষায় কিয়ামত হচ্ছে ঐদিনকে বলা হয়, যেদিন এই সমগ্র পৃথিবী ধ্বংস হয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং যেদিন আশরাফুল মাখলুকাত তাদের কৃতকর্মের হিসাব নিকাশ মহান রাব্বুল আলামিনের নিকটে উপস্থাপন করার জন্য মহান আল্লাহ পাকের সামনে দাঁড়াবেন।

পবিত্র কোরআনের আলোকে কিয়ামত।

আমি আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে "কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন" এর অংশ হিসেবে কিয়ামত সম্পর্কে পবিত্র কুরআন মাজীদে মহান আল্লাহ পাক কি বলেছেন তা জানাচ্ছি। কিয়ামতের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন মাজীদে মহান আল্লাহ পাক ৩৮৯টি আয়াত নাজিল করেছেন। পবিত্র কোরআনে যা যা বলেছেন তা হতে ১০টি সংক্ষিপ্ত আয়াত নিম্নে দেয়া হলোঃ

     لآ اُقْسِمُ بِيَوْمِ الْقِيٰمَةِ ۞
১। আমি শপথ করিতেছি কিয়ামত দিবসের (সুরা আল কিয়ামাহ, আয়াত-০১)।

   َلِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ ۞
২। বিচার দিবসের মালিক বা জিনি প্রতিফল দিবসের মালিক (সুরা আল ফাতিহা, আয়াত-০৩)।

                                                                                                                              ثُمَّ إِنّكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ تُبْعَثُوْنَ ۞ 
৩। অতঃপর কিয়ামতের দিবসে তোমাদেরকে অবশ্যই পুনরুত্থিত করা হবে (সূরা আল মুমিনুন, আয়াত-১৬)।

                                                                                                     اَقْتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمْ وَهُمْ فِىْ غَفْلَةٍ مُّعْرِضُوْنَ ۞
৪। লোকদের হিসাব-নিকাশের সময় অতি নিকটে এসে গেছে অথচ তারা এখনো গাফেলেরমত পড়ে আছে (সুরা আম্বিয়া, আয়াত-০১)।

                                                                                        وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْ الَا تَاْتِيْنَا السَّاعِةُ، قُلْ بَلٰى وَرَبِّىْ لَتَاْتِيَنَّكُمْ ۞
৫। কাফেরেরা বলে কিয়ামত আসবে না। তুমি বলে দাও, আমার প্রতিপালকের শপথ কিয়ামত অবশ্যই আসবেই (সূরা সাবা, আয়াত-০৩)।

                                                                                     يَوْمئِذٍيُّوَفِّيْهِمُ اللّٰهُ دِيْنَهُمُ الْحَقَّ وَيَعْلَمُوْنَ اَنَّ اللّٰهَ هُوَالْحَقُّ الْمُبِيْنُ ۞
৬। সেদিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্ত প্রতিফলন পুরোপুরি দিবেন এবং তারা জানবে যে, আল্লাহই সত্য, স্পষ্ট প্রকাশক (সুরা আল নূর, আয়াত-২৫)।


    
                                                                                         اِنَّ السَاعَةَ لَاٰتِيَةٌ لَّارَيْبَ فِيْهَا ، وَلَكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَايُؤْمِنُوْنَ ۞
৭। নিঃসন্দেহে কেয়ামত নির্দিষ্ট সময়ে অবশ্যই আসবে, এতে সন্দেহ নেই কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা বিশ্বাস করে না (সূরা আল মূমিন, আয়াত-৫৯)।

                                                                                                                           اِقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانْشَقَّ الْقَمَرُ ۞ 
৮। কিয়ামত নিকটবর্তী এটি সত্য। এতে আমাদের কাহারো কোন অস্বীকার করার উপায় নেই। “কিয়ামতের নিকটবর্তী হইয়াছে, আর চাঁদ বিদীর্ণ হইয়াছে” (সুরা আল কামার, আয়াত-০১)।

                                                     يَسْئَلُكَ النَّاسُ عَنِ السَّاعَةِ، قُلْ اِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَاللّٰهِ ، وَمَا يُدْرِيْكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا ۞ 
৯। লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করে যে, কিয়ামত কখন আসবে? তুমি বলো, তার জ্ঞান আল্লাহর নিকট রয়েছে। তুমি কি করে জানবে? তবে খুব সম্ভবতঃ কিয়ামত নিকটে উপস্থিত হয়ে গেছে (সুরা আযহাব, আয়াত-৬৩)। 

                                 وَللّٰهِ غَيْبُ السَّمٰوٰتِ وَالَارْضِ ، وَمَآ اَمْرُ السَّاعَةِ اِلَّا كَلَمْحِ الْبَصَرِ اَوْ هُوَ اَقْرَبُ، اِنَّ اللّٰهَ علٰى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ ۞
১০। আকাশ মন্ডলী এবং পৃথিবীর গোপন বিষয় আল্লাহর নিজের কাছেই রয়েছে। কিয়ামতের ব্যপারটিতো এমন, যেমনঃ চোখের পলক অথবা তার চাইতেও অধিক নিকটবর্তী। নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান (সূরা নাহল, আয়াত-৭৭)।

হাদিসের আলোকে কিয়ামত।

আমি আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে "কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন" এরই ধারাবাহিকতায় এখন আলোচনা করব কিয়ামত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস শরীফে (গ্রন্থে) আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কি বলেছেন, তা নিয়ে। এ ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস বর্ণনা করেছেন। বিভিন্ন হাদিস হতে সংক্ষিপ্ত করে কয়েকটি হাদিস নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ  

১। বাইতুল্লাহর উপর আক্রমণের ইচ্ছা করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৭২)।

আরো পড়ুনঃ শবে বরাত কবে ২০২৪ - শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে জেনে নিন

২। মদীনার বাড়ি ঘর ইহাব অথবা ইউহাব পর্যন্ত পৌঁছে যাবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১১৮)।

৩। রোমীয়দের সংখ্যা যখন সর্বাধিক হবে, তখন কিয়ামত হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১০৮)।

৪। অচিরেই ইরাকবাসীরা, না খাদ্যশস্য পাবে, না দিরহাম পাবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৪৩)।

৫। আখেরী যুগে এমন খলিফা পয়দা হবে, যে মাল বন্টন করবে বিদ্যার (রা) থেকে বর্ণিত (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৪৬)।

৬। কিয়ামত হবে না, যে পর্যন্ত না প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৭০)।

৭। কিয়ামতের পূর্বে মুসলমানেরা পরস্পর একে অপরকে ধ্বংস করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৮৬)।

৮। হযরত উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন: আম্মারকে রাষ্ট্রদ্রোহী লোকেরা হত্যা করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ হাদীস নং-৭১৫২)।

৯। নিশ্চয়ই মুসলমান অথবা মু'মিনদের একটি দল শুভ্র প্রাসাদে সংরক্ষিত পারস্য রাজ্যের ধনভাণ্ডার জয় করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৫৯)।

১০। আমার উম্মতের শেষভাগে একজন খলীফা হবে। সে হাত ভরে ভরে অর্থ সম্পদ দান করবে, গণনা করবে না (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৪৫)।

১১। আবিসিনিয়ার এক ব্যক্তি কা'বা গৃহকে ধ্বংস করবে; তার উভয় পায়ের গোছা ছোট ছোট হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৭১৩৩, ৭১৩৪ ও ৭১৩৫)।

আরো পড়ুনঃ পবিত্র শবে মেরাজ ২০২৪ - ২০২৪ সালের শবে মেরাজ কত তারিখে

১২। কিয়ামত হবে না, যে পর্যন্ত না এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পার্শ্ব দিয়ে যাত্রাকালে বলবে, হায়। আমি যদি তার স্থানে হতাম (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১২৯)।

১৩। কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ফোরাত তার মধ্যস্থিত স্বর্ণের পর্বত বের করে দেবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৯৮, ৭১০০, ৭১০২, ৭১০৩ ও ৭১০৪)।

১৪। রোম সম্রাজ্য অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর আর কোন রোম সম্রাট হবে না। তোমরা তাদের ধনভাণ্ডার আল্লাহর পথে বন্টন করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ হাদীস নং-৭১৫৭)।

১৫। কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত দু'টি বড় দল পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয়। তাদের মাঝে ভয়াবহ যুদ্ধ হবে। অথচ তাদের উভয়ের দাবী একই হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৮৪)।

১৬। কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত না হারজ বেড়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল। 'হারজ' কি? জবাবে তিনি বললেন, হত্যা, হত্যা (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৮৫)।

১৭। রাত দিন খতম হবে না, যে পর্যন্ত না জাহজাহ্ নামক ব্যক্তি বাদশাহ হবে। তারা চার ভাই-শরীক, উবাইদুল্লাহ্, উমাইর ও আবদুল কবীর। তারা সকলেই আবদুল মজীদের সন্তান (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৭১৩৭)।

১৮। পৃথিবী খতম হবে না যে পর্যন্ত না এক ব্যক্তি কবরের পার্শ্ব দিয়ে যাত্রাকালে ওটার উপর গড়াগড়ি দিয়ে বলবে, হায়। এই কবরবাসীর। থাকবে না; থাকবে কেবল বালা-মুসীবত। স্থানে যদি আমি হতাম (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৩০ )।

১৯। কিয়ামতের পূর্বে তোমরা এমন এক কাওমের সাথে লড়াই করবে, যাদের জুতা হবে পশমের। তাদের মুখমণ্ডল চামড়া জড়ানো ঢালের ন্যায় মাংসল এবং রক্ত বর্ণ হবে আর তাদের চক্ষু হবে ছোট ছোট (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৭১৪২)।

২০। যদি দু'জন মুসলমানের একজন তার অন্য ভ্রাতার উপর অস্ত্রধারণ করে, তবে তারা উভয়ই জাহান্নামের প্রান্তে এসে পৌছে। অতঃপর যখন তাদের একজন তার অপর সঙ্গীকে হত্যা করে, তখন তারা উভয়ই জাহান্নামে দাখিল হয়ে যায় (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৮৩)।

আরো পড়ুনঃ জাজাকাল্লাহ খাইরান অর্থ কি - জাজাকাল্লাহ খাইরান এর জবাব কি 

২১। অচিরেই ভ্রমন ফিতনা দেখা দেবে, যখন বসে থাকা লোক দাঁড়ান লোক হতে ভাল থাকবে। আর দাঁড়ান ব্যক্তি তখন চলমান ব্যক্তি হতে ভাল থাকবে। আর চলমান লোক দ্রুতগামী লোক থেকে ভাল থাকবে। যে ফিতনায় লিপ্ত হবে। তাকে সে ফিনা ধ্বংস করে দেবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৭৫)।

২২। কিয়ামত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না, তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমন্ডল হবে চামড়া জড়ানো ঢালের ন্যায় মাংসল। কিয়ামত হবে না, যে পর্যন্ত না তোমরা এমন জাতির সাথে যুদ্ধ করবে, যাদের জুতা হবে পশমের (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৭১৩৮, ৭১৩৯, ৭১৪০ ও ৭১৪১)।

২৩। এক সময় ইরাক তার রৌপ্য মুদ্রা এবং কাফীয় দিতে অস্বীকার করবে। সিরিয়াও তার মুদ্রা এবং স্বর্ণমুদ্রা দিতে অস্বীকার করবে। অনুরূপভাবে মিসরও তাদের আরদাব এবং স্বর্ণমুদ্রা প্রদানে অস্বীকৃতি জানাবে। অবশেষে তোমরা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে, তোমরা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে, তোমরা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১০৫)।

২৪। কিয়ামত কায়িম হবে না যে পর্যন্ত মুসলমানরা ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ না করবে। মুসলমানরা তাদেরকে হত্যা করবে। ফলে তারা পাথর বা বৃক্ষের আড়ালে আত্মগোপন করবে। তখন প্রস্তর বা বৃক্ষ বলবে, হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা! এই তো ইয়াহুদী আমার পশ্চাতে। এস, তাকে হত্যা কর। কিন্তু 'গারকাদ' নামক বৃক্ষ এ কথা বলবে না। কারণ এ হচ্ছে ইয়াহুদীদের বৃক্ষ (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭১৬৩, ৭১৬৪, ৭১৬৫, ৭১৬৬ ও ৭১৬৭)।

২৫। কিয়ামত হবে না যে পর্যন্ত ইসহাক (আঃ) এর সন্তানদের সত্তর হাজার লোক এ শহরের লোকদের সাথে যুদ্ধ না করবে। তারা শহরের দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়ে কোন অস্ত্র দ্বারা লড়াই করবে না এবং কোন তীরও চলাবে না; বরং তারা

💢 একবার "লা ইলাহা ইল্লাহ্ এবং আল্লাহু আকবার" বলবে; অমনি এর একপ্রান্ত ভূমিস্যাৎ হয়ে যাবে। 
 
💢 অতঃপর দ্বিতীয় বার তারা "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ও আল্লাহু আকবার" বলবে। এতে শহরের অপর প্রান্ত ভূমিস্যাৎ হয়ে যাবে।
 
 
💢 এরপর তারা তৃতীয় বার "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ও আল্লাহু আকবার" বলবে। তারা যখন গনীমতের মাল ভাগ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, তখন কেউ চিৎকার করে ঘোষণা করবে, দাজ্জালের আবির্ভাব হয়েছে। এ কথা শুনতেই তারা ধন-সম্পদ ফেলে দেশে ফিরে আসবে। (সহীহ মুসলিম শরীফ হাদীস নং-৭১৬১)।

কিয়ামতের ফিতনা সমূহ

প্রিয় পাঠকগণ! কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে জানার পাশাপাশি "কিয়ামতের ফিতনা সমূহ" সম্পর্কেও জানতে হবে। আপনারা কি এমন কেউ আছেন, ফিতনা শব্দটি শুনেন নাই? যাইহোক, ফিতনা একটি "আরবি" শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে বিপদ-আপদ, বিশৃঙ্খলা, পরীক্ষা করা, নৈরাজ্য, অরাজকতা, অন্তরঘাত, চক্রান্ত, বিপর্যয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কিয়ামতের পূর্বে অনেক ফিতনা আবির্ভাব হবে এই ব্যাপারে আমাদের পূর্বেই অভিহিত করে গেছেন। ফিতনা থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে নিম্নবর্ণিত পয়েন্ট সমূহের সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে এবং এই ব্যাপারে আমাদের কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবেঃ


১। ইনসাফ উঠে যাবে।

২। স্ত্রীর আনুগত্য করবে। 

৩। সুদের লেনদেন করবে।

৪। তালাকের আধিক্য হবে। 

৫। ভদ্রলোকরা নির্গৃহীত হবে। 

৬। পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। 

৭। হৃদয়গুলো উজাড় করা হবে। 

৮। আকস্মিক মৃত্যুহার বেড়ে যাবে। 

৯। রেশমি পোশাক পরিধান করা হবে। 

১০। জান ও মালের নিরাপত্তা কমে যাবে। 

১১। মানুষের গুনার পরিমাণ বেড়ে যাবে। 

১২। আত্মীয়দের সঙ্গে বাজে আচরণ করবে। 

১৩। অপবাদ আরোপের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। 

১৪। বন্ধুদের ক্ষতি করতে দ্বিধাবোধ করবে না। 

১৫। নেতৃবর্গ জালেম এবং অত্যাচারী হয়ে উঠবে। 

১৬। পবিত্র কুরআন শরীফকে সুসজ্জিত করা হবে। 

১৭। জুলুম অত্যাচার ব্যাপক হারে লাভ করবে বা বৃদ্ধি পাবে। 

১৮। জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদকে নিজের সম্পদ মনে করা হবে।

১৯। সমাজের সবচেয়ে নিচু ও নিকৃষ্ট ব্যক্তিকে নেতা বানানো হবে। 

২০। ঠিকমত যাকাত দেয়া হবে না। যাকাতকে জরিমানা করা মনে হবে।

 ২১। শরীয়তের দন্ডবিধিকে অকার্যকর করা হবে। ন্যায় বিচার কমে যাবে।

২২। মদের দোকান বেড়ে যাবে এবং ব্যাপকভাবে মদ পান শুরু করা হবে। 

২৩। বাদ্যযন্ত্র এবং বাজনার বিভিন্ন উপকরণকে বিশেষভাবে যত্ন করা হবে।

২৪। লোকেরা সন্তান লাভের পরিবর্তে সন্তান নেয়াকে অপছন্দ মনে করবে। 


২৫। আদালতে ন্যায়বিচার বিক্রি হবে। কোন সঠিক ও ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে না।

২৬। অন্তর সমূহ পাথরে চেয়ে কঠিন হবে। এমনকি মানুষের দয়া-মায়া উঠে যাবে। 

২৭। মানুষ নিজের পিতা-মাতার অবাধ্যতা করবে। পিতা-মাতার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবে। 

২৮। মুসলমানেরাও নির্দ্বিধায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে। এ ব্যাপারে তাদের কোন ভয় থাকবেনা।

২৯। মানুষ আমানতের খিয়ানত করবে অর্থাৎ কারো কাছে কিছু রাখলে সেটা আত্মসাৎ করবে। 

৩০। নিচু এবং হীনা মনের লোকেরা সম্পদশালী হবে এবং তারা অত্যন্ত বিলাসী জীবন যাপন করবে। 

৩১। আমানতের মালকে লুটের মাল মনে করা হবে এবং আমানত করা মাল হতে ইচ্ছামত ভোগ করবে।

৩২। আখিরাতের কাজের দ্বারা দুনিয়া উপার্জন করা হবে এবং মানুষ দিন বিক্রি করে দুনিয়া উপার্জন করবে। 

৩৩। গায়রুল্লাহ এর নামের শপথ করা হবে কিন্তু শপথ শুধুমাত্র একমাত্র আল্লাহর নামেই করা উচিত।

৩৪। শুধুমাত্র পরিচিত লোকদের সালাম দেওয়া হবে। অপরিচিতদেরকে সালাম দেওয়া হবে না। সালামের প্র্যাকটিস কমে যাবে। 

৩৫। আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্য কোনো আযাব আসবে। লোকদের চেহারা বিকৃত হবে। অথবা আকাশ থেকে পাথর বর্ষিত হবে।

৩৬। দুর্নীতি পরায়ন লোকদেরকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ মনে করা হবে এবং ভালো লোকদেরকে দুর্নীতি পরায়েন মনে করা হবে। 

৩৭। রাষ্ট্রপ্রধান, শাসনবর্গ, মন্ত্রী পরিষদ এবং তাদের সমর্থক ও সহযোগীদের একাংশ মিথ্যা বলার অভ্যস্ত হয়ে যাবে এবং সর্বদা মিথ্যা কথা বলবেন।

৩৮। মহিলারা পুরুষের বেশভূষা ধারণ করবে এবং পুরুষেরা মহিলার বেশভূষা ধারণ করবে। দূর থেকে বোঝাই যাবে না, কে পুরুষ এবং কে মহিলা।

৩৯।  এমনকি আলেম এবং কারী যারা কুরআন তেলাওয়াত করবে, কুরআনের শিক্ষা দেবে তাদের মধ্যেও একদল পথভ্রষ্ট হয়ে বদ এবং ফাসেক হয়ে যাবে।

৪০। উঁচু উঁচু ভবন এবং উঁচু উঁচু সৌধ নির্মাণ করা হবে। মদীনার সুউচ্চ এক অট্টালিকার উপর আরোহণ করা হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৭৩)।

আরো পড়ুনঃ মাশাআল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ কি - মাশাআল্লাহ উত্তর কি হবে

৪১। লোকেরা নামাজে ডাকাতি করবে। নামাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। অথচ নামাজ হচ্ছে ঈমান এবং কুফুরের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত।

৪২। কিয়ামতের আগে কতিপয় মিথ্যাবাদী লোকের আবির্ভাব হবে। জুলুম অত্যাচার করাকে গর্বের বিষয়ে মনে করা হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১৬৮)।

৪৩। মিথ্যা কথাকে হালাল মনে করবে। মিথ্যাকে সত্য হিসেবে পরিণত হবে এবং সত্যকে মিথ্যা মনে করা হবে। মিথ্যা আরোপ করা হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৭০)।

৪৪। মসজিদকে কারুকার্যময় করা হবে কিন্তু মুসল্লিদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকবে না। মুসল্লিদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাবে। বদকার লোকেরা মসজিদের শোরগোল সৃষ্টি করবে। 

৪৫। হিংস্র পশুর চামড়া ব্যবহার করা হবে। লোকেরা জীবজন্তুর চামড়া দিয়ে তৈরি করা উন্নত মানের পোশাক পরিধান করবে। কিন্তু তাদের দিলগুলো মৃত জন্তুর চেয়ে বেশি দুর্গন্ধময় হয়ে ওঠবে। 

৪৬। পবিত্র কুরআন গানের সুরে তেলাওয়াত করা হবে। কিন্তু কোরআনকে বোঝার জন্য অথবা ব্যক্তিগত জীবনে কোরআন মানার জন্য এবং সাওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে কিংবা দাওয়াতের উদ্দেশ্যে তেলাওয়াত করা হবে না। 

৪৭। বিভিন্ন প্রক্রিয়া গ্রহণ করে মানুষ পার্থিব সম্পদ উপার্জনের কাজে সর্বদা নিয়োজিত থাকবে। পরকালের চিন্তায় দ্বীনি এলেম শিক্ষা দেওয়া হবে না। বরং দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে দ্বীনি এলেম শিক্ষা দেওয়া হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১০৪)।

৪৮। অনাবৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষ হবে না। বরং দুর্ভিক্ষ হবে এ কারণে যে, কেবল বৃষ্টি হতে থাকবে, বৃষ্টিই কেবল হতে থাকবে। ফলে ভূমি কোন কিছুই উদ্গত করবে না। বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও পরিবেশ বেশ উষ্ণ এবং গরম থাকবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭১১৯)।

৪৯। হয়তো তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে লাল বর্ণের তুফান আসবে অথবা ভূমিকম্প আসবে। কুফা নগরীতে লাল রক্তিম এমন ঝঞ্ঝা বায়ু প্রবাহিত হবে, ওটা লোকদেরকে সমুদ্রের মধ্যে নিক্ষেপ করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৯০, ৭১০৯, ৭১১০ ও ৭১১১)। 

৫০। মানুষের নিকট এমন এক সময় আসবে, যখন হত্যাকারী জানবে না যে, কি অপরাধে সে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না যে, কি অপরাধে সে নিহত হয়েছে। সামান্য বিষয়ের রক্তপাত করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৭১৩১ ও ৭১৩২)।

৫১। গায়িকাদের সম্মান করা হবে। অর্থাৎ যে মহিলারা গান বাজানোর পেশায় থাকবে, তাদের অত্যাধিক সম্মানের চোখে দেখা হবে। অথচ দ্বীনদার নেককার নারীদের সম্মানের চোখে দেখা হবে না। তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন রকমের কুৎসা রচনা করা হবে।


৫২। 
উম্মতের শেষ যুগের লোকেরা প্রথম যুগের লোককেদের উপর বিভিন্ন অপবাদ আরোপ করবে। তাদের সমালোচনা করবে এবং বলবে, তারা এই এই কথা ভুল বলেছে। আজকের যুগে দেখা যায় উম্মতের শ্রেষ্ঠ জামাত সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে অনেকে বেয়াদবি করছে। 

কিয়ামতের ছোট আলামত এবং লক্ষণ সমূহ।

কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন, কিয়ামত খুবই কাছে এসে গেছে। তিনি কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার কতগুলো আলামত এবং লক্ষণ জানিয়ে গিয়েছেন। আসুন, আমরা জেনে নিই সেই আলামত এবং লক্ষণ গুলি হতে কয়েকটিঃ 

১। হযরত মুহাম্মাদ (সা:) এর আগমণ। কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত হচ্ছে আমাদের সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) এর আগমণ। কেননা তিনি হলেন সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। তাঁর পর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবীর আগমণ হবেনা। তাঁর দুনিয়াতে আগমণের অর্থ হলো, দুনিয়ার বয়স শেষ হয়ে আসছে, কিয়ামত অতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে।

২। হযরত মুহাম্মাদ (সা:) এর ইন্তেকাল। কিয়ামতের দ্বিতীয় আলামত হচ্ছে আমাদের সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) এর ইন্তেকাল।

৩। আবহাওয়া ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিবে।

৪। সুন্নাতি আমল সম্পর্কে গাফিলতি করবে।

৫। কেউ ইমামতি করতে চাইবে না (প্রাগুক্ত)। 

৬। বায়তুল মাকদিস (ফিলিস্তীন) বিজয় হবে।

৭। খারেজিদের প্রকাশ (সহীহ বোখারি শরীফ)।

৮। ক্রীতদাসি কর্তৃক মুনিবকে প্রসব করা হবে। 

৯। মানুষ তার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।

১০। ঘোড়ার দাম বেড়ে যাবে (মুস্তাদরাকে হাকেম)।


১১। কোরাইশ বংশ বিলুপ্ত হবে (মুসনাদে আহমাদ)।

১২। মানুষ প্রচুর পরিমানে ধন সম্পদের মালিক হবে।

১৩। মানত করে তা পুরা করবে না (মুসলিম শরীফ)।

১৪। দালান-কোঠা নির্মাণে প্রতিযোগিতা শুরু করবে।

১৫। সাহাবাগণের বিদায় হওয়া (সহীহ মুসলিম শরীফ)।

১৬। নতুন মাসের চাঁদ উঠার সময় বড় হয়ে উদিত হবে।

১৭। মানুষ মৃত্যু কামনা বেড়ে যাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

১৮। বায়তুল্লাহর হজ্জ পরিত্যাজ্য হবে (সহীহ ইবনে হিব্বান)।

১৯। মোহরানা ধার্যের আকার বৃদ্ধি পাবে (মুস্তাদরাকে হাকেম)।

২০। নিত্য নতুন দামি বাহন বের করা হবে (সহীহ ইবনে হিব্বান)।

২১। সমাজে ও রাষ্ট্রে অযোগ্য লোক এবং মহিলা নেতৃত্ব শুরু হবে।

২২। হেজাজ থেকে আগ্নেয় গিরি প্রকাশ পাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

২৩। অত্যাধিক শিলা বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির সাথে বড় বড় পাথর বর্ষিত হবে।

২৪। ইহুদিদের অনুকরণের প্রবণতা বেড়ে যাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

২৫। পুরাতন যুদ্ধাস্ত্রের প্রচলন পুনরায় চালু হবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

২৬। ধরাপৃষ্ঠ থেকে ইসলাম চর্চা বিলুপ্ত হয়ে যাবে (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

২৭। দিন দিন মোটা মানুষ এর সংখ্যা বেড়ে যাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

২৮। মুসলমানেরা ইহুদিদের সঙ্গে চূড়ান্ত যুদ্ধ করবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

২৯। সুদ, ব্যভিচার, মদ, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি ব্যাপকভাবে সমাজে প্রকাশ পাওয়া। 

৩০। মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টন করা হবে না (সহীহ মুসলিম শরীফ)।

৩১। কিয়ামতের আগে রাখাল শ্রেণির লোকেরা অট্টালিকা নির্মাণ শুরু করবে।


৩২। বাসা-বাড়িতে সাজ-গোজে সীমালঙ্ঘন করা হবে (আল-আদাবুল মুফরাদ)।

৩৩। পশ্চিমাদের সঙ্গে মুসলমানদের মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৩৪। মুসলমানেরা শির্কে লিপ্ত হবে। শির্কে হচ্ছে বড় ঝুলুম (সূরা লোকমান, আয়াত-১৩)।

৩৫। আরবের কোনো কোনো গোত্র মূর্তিপূজা আরম্ভ করা শুরু করবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

৩৬। মদিনা তখন বিরান হবে এবং সেখানে পর্যটক ও অধিবাসী কমে যাবে (সুনানে আবু দাউদ)।

৩৭। বন্ধুদেরকে কাছে টানা হবে এবং পিতা-মাতাকে দূরে রেখে দেয়া হবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৩৮। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাতের আঙুলের ইশারায় চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করা হয়েছিল (সূরা কামার, আয়াতঃ ১-২)।

৩৯। লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল এবং দাড়ি রাঙ্গাবে। আকৃতি-বিকৃতির ঘটনা ঘটবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৪০। মানুষ সিরিয়ামুখী হবে। সুখ-শৌখিনতা বৃদ্ধি পাবে এবং দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয়া সহজ হয়ে যাবে (মুসনাদে আহমাদ)। 

৪১। একটি ভয়াবহ দাঙা গোটা আরবকে পরিষ্কার করে দেবে (মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে) (মুসনাদে আহমাদ)।

৪২। ভন্ড ও মিথ্যুক নবীদের আগমণ হবে এবং ৩০ জন নবুয়তের দাবিদার, মহামিথ্যুকের প্রকাশ পাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)। 

৪৩। আরব ভূখণ্ড তৃণভূমি ও নদ-নদী ভরে যাওয়া। পশ্চিমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আরবরা কমে যাবে (সহীহ মুসলিম শরীফ)।

৪৪। পাহাড় নিজ স্থান থেকে সরে যাবে (অলৌকিকভাবে অথবা মানুষ পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করবে)। (আত-তাবরানি)।

৪৫। যারা নিজের যুক্তি দিয়ে কথা বলে এবং বেদাতে লিপ্ত, তাদের থেকে মানুষ এলম অর্জন করবে (ইবনুল মুবারক ফিয-যুহদ)।

৪৬। মানুষ ব্যাপকভাবে ধর্মবিমুখ হবে। মানুষ কোরআন বিমুখ হয়ে যাবে এবং অন্য বইয়ের কদর ও বিস্তার হবে (আত-তাবরানি)।

৪৭। সময় দ্রুত চলে যাবে। কেউ বুঝতে পারবেনা, সময় কিভাবে চলে যাচ্ছে। সময় কাছাকাছি হয়ে যাবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

৪৮। আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে কোরআন উঠিয়ে নেবেন। ফলে কারও স্মৃতিতে আর কোরআন থাকবে না (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

৪৯। মুসলমানেরা পরস্পর একে অপরকে ধ্বংস করবে এবং একে অপরকে বন্দী করবে (সহীহ মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৭০৮৬)।


৫০। এমন একটা সময় আসবে যখন এক সিজদার মর্যাদা গোটা পৃথিবী ও তন্মধ্যকার সবকিছুর চেয়ে বেশি হবে (সহীহ বোখারি শরীফ)।

৫১। মসজিদে বসে দুনিয়ার বিভিন্ন আলাপ-আলোচনায় মানুষ লিপ্ত হবে। মসজিদকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে (মুস্তাদরাকে হাকেম)।

৫২। হিংস্র জীবজন্তু ও জড় পদার্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করবে। জুতার ফিতা থেকেও কথা সে আসবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৫৩। মহান আল্লাহ পাকের হুকুমে বৃক্ষ কথা বলবে (সহীহ বোখারি শরীফ) এবং ছড়ির মাথা থেকে কথা ভেসে আসবে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৫৪। মানুষের মধ্যে ভক্তি, শ্রদ্ধা, স্নেহ, মায়া-মমতা, আদর-ভালবাসা কমে যাবে এবং মানুষকে শ্রদ্ধা করা হবে তার অনিষ্ট ও ক্ষতির ভয়ে (সুনান আত-তিরমিজী)।

৫৫। কিছু ব্যবসায়ী গোটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। সব যায়গায় ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে। স্বামীর ব্যবসায় (শেয়ার হিসেবে) স্ত্রী যোগ দেবে এবং ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে (মুসনাদে আহমাদ)।

৫৬। নানারকম গোলযোগ যেমনঃ ফিতনা-ফ্যাসাদ ইত্যাদি সৃষ্টি করা। ফেতনা এদিক থেকে, ফেতনা এদিক থেকে, যেদিক থেকে শয়তানের শিং উদিত হবে (সহীহ মুসলিম শরীফ হাদীস নং-৭১২০)।

৫৭। পবিত্র কোরআনের অক্ষর বিলোপ। পবিত্র কোরআনের অক্ষর বিলোপ। পশ্চিম দিকে সূর্যোদয় হলে আতঙ্কগ্রস্থ মানুষ দেখতে পাবে পবিত্র কোরআনে কোন অক্ষর নেই। শুধু সাদা কাগজ অবশিষ্ট আছে। তখন তারা তাদের পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট তওবা করতে চাইবে। এ সময় এক অদৃশ্য আওয়াজের মাধ্যমে তাদেরকে জানিয়ে দেয়া হবে, তোমাদের তওবা আল্লাহ এখন আর কবুল করবেন না।

৫৮। তওবার দরজা বন্ধ। "দাব্বাতুল আরদ" আত্নপ্রকাশের পর যখন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয়ের ঘটনা ঘটবে তখন কাফিরের কিংবা ফাসিকের তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। এর কিছুদিন পর কেয়ামত সংগঠিত হবে।

৫৯। দক্ষিণের বায়ু। দাব্বাতুল আরদ অদৃশ্য হবার পর দক্ষিণ দিক থেকে এক প্রকার বায়ু প্রবাহিত হবে। এ বায়ুর প্রভাবে মুমিনগণ কিছুটা অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন এবং তারপর থেকে তারা একে একে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে থাকবেন। এক পর্যায়ে পৃথিবীতে নিগ্রো দলের আধিপত্য কায়িম হবে। তারা কাবা শরীফ ধ্বংস করবে এবং হজ্জ পালন বন্ধ করে দেবে। মানুষের জীবন থেকে লজ্জা-সরম সম্পূর্ন বিদায় নিবে। রাস্তা-ঘাটে প্রকাশ্যে যেনা-ব্যবিচার ছড়িয়ে পড়বে। মানুষের মধ্যে হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি বৃদ্ধি পাবে। দূর্ভিক্ষ, মহামারি, হত্যা, লুণ্ঠন একের পর এক হতে থাকবে। এক পর্যায়ে পৃথিবীতে "আল্লাহ শব্দটি" বলার কোন লোক থাকবে না।


৬০। ইমাম মেহেদীর আগমন। নবী করীম (সাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসের আলোকে ইমাম মেহেদী (আঃ) এর পরিচয় সমন্ধে নিম্নোক্ত অভিতম পোষণ করে থাকেঃ

🎀 ইমাম মেহেদী সাইয়িদ তথা হযরত মা ফাতিমা (রাঃ) এর বংশধর হবেন।
🎀 শারীরিক গঠন সামান্য লম্বাদেহ বিশিষ্ট উজ্জল বর্ণের হবেন। 
🎀 আল্লাহর পক্ষ হতে তিনি ইলমিলাদুন্নবী প্রাপ্ত হবেন।
🎀 ইমাম মেহেদী শব্দের অর্থ হল পথ প্রদর্শিত ব্যক্তি। এখানে মেহেদী বলে কিয়ামতের প্রাক্কালে হরযত ঈসা (আঃ) এর অবতরণ ও দাজ্জালের আত্ম প্রকাশের পূর্ব মহুর্তে মুসলিম নেতৃত্বের জন্য যে সংস্কার মনীষীর আভির্বাবের কথা আছে তাকেই বুঝানো হয়েছে। 
🎀 মুহাক্কিক আলীমগনের মতে কিয়ামতের প্রাক্কালে ইমাম মেহেদীর আগমন সত্য। বহু হাদিস দ্বারা এ কথা প্রমানিত।

কিয়ামতের বড় আলামত এবং লক্ষণ সমূহ।

নবী করিম (সঃ) বললেন, “কিয়ামত ততক্ষন পর্যন্ত হবে না, যতক্ষন না তোমরা কিয়ামতে বড় ১০টি আলামত বা  পূর্ব লক্ষণ দেখতে না পাবে” (সহীহ মুসলিম শরীফঃ ৭১১৩-৭১১৬। কিয়ামতে বড় ১০টি আলামত বা  পূর্ব লক্ষণ লক্ষণগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে নিন্মবর্ণিত ভাবে উল্লেখ করা হলোঃ

১। ধুম্র (ধোয়া)। বিশাল এই ধুম্র (ধোয়া) আগমনে আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী খালি জায়গা পূরণ করে দিবে। এই ধোয়ায় পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গায় পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। ধোয়ায় এত বড় এবং বেশি হবে, যা পৃথিবীবাসি ইতিপূর্বে কেউ কখনো দেখেনি। এই ধুম্র (ধোয়া) আগমনে আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী খালি জায়গা পূরণ করে দিবে। এর ফলে মোমিনদের সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে (সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়া) এবং কাফেরদের জন্য হবে এটা যন্ত্রণাদায়ক (তাদের শরীরে প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে ধোয়া বের হবে) আজাবের  জায়গায়।

২। দাজ্জালের আত্নপ্রকাশ
দাজ্জালের আত্নপ্রকাশ। দাজ্জাল সিরিয়া ও ইরাকের সাথে সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তায় আত্নপ্রকাশ করবে। এ প্রসংগে হাদিসে আসছেঃ- 

🔥 দাজ্জালের দেহ স্থল বর্ণ লোহিত, কেশ কুঞ্জিত ও বাম চোখ কানা হবে। কানা চোখটি একটি ফুলে উঠা আঙ্গুলের মত হবে (বুখারী)।
 
🔥 তার কপালে আরবী ভাষায় "কাফির" শব্দটি লিখা থাকবে এবং তা কেবল মুমিনগণই দেখতে পাবেন।
 
🔥 দাজ্জাল আত্নপ্রকাশ করার পর ৩ বছর পর্যন্ত ফসল উৎপাদিত না হওয়ার কারনে ভীষণ দুর্ভিক্ষ থাকবে।
 
🔥 দাজ্জালের কোন সন্তান-সন্ততি থাকবে না।
 
🔥 দুনিয়ার যত ফিতনা রয়েছে তার মধ্যে দাজ্জালের ফিতনা হবে সবচেয়ে বড়।

 🔥 দাজ্জালের অনুসারী হবে ইহুদী। মুনাফেকেরাও তাকে অনুস্বরণ করবে।

 🔥করিম সোহাকে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল! দাজ্জাল পৃথিবীতে কত সময় পর্যন্ত থাকবে? তিনি বললেন, চল্লিশ দিন। এই চল্লিশ দিনের বর্ণনা নিন্মরুপঃ

🔥 প্রথম দিন হবে এক বছরের সমান।
🔥 দ্বিতীয় দিন হবে এক মাসের সমান।
🔥 তৃতীয় দিন হবে এক সপ্তাহের সমান। 
🔥 অবশিষ্ট দিনগুলো তোমাদের এই দিনের মতই দীর্ঘ হবে। 
 
🔥অতঃপর, সাহাবগন জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসুল, দাজ্জাল কত দ্রুতগতি সম্পন্ন হবে। তিনি জবাব দিলেনঃ- বাতাস তাড়িত মেঘের মত দ্রুতগতি স্মপরন্ন সম্পন্ন হবে।

 
🔥দাজ্জাল এক সম্প্রদায়ের কাছে এসে সকল মানুষকে নিজের দিকে আহবান করবে। তারা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তার হুকুম অনুস্বরণ করবে। সে আসমানকে নির্দেশ করবে। আসমান তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষন করবে। সে জমিনকে হুকুম দিবে, জমিন উদ্ভিদ উৎপাদন করবে। অতঃপর সে আরেক সম্প্রদায়ের নিকট আসবে এবং তাদেরকে নিজের দিকে আহবান করবে এবং তারা তার আহবান প্রত্যাখান করবে। দাজ্জাল তাদের নিকট হতে চলে যাবে, ফলে ঐ সম্প্রদায় অতি দ্রুত অজন্মা ও দুটিক্ষের কবলে পতিত হবে।
 
🔥দাজ্জাল প্রথমত নিজেকে নবী ও পরবর্তীতে খোদা দাবী করবে। তারপর পৃথিবীর অধিকাংশ জায়গায় ঘুরে ঘুরে লোকজনকে এ দাবী মানতে বাধ্য করবে। হাদিসে (বুখারী শরিফ) আছেঃ-"দাজ্জাল যখন পথে বের হবে তখন তার সাথে আগুন ও পানি থাকবে। লোকেরা দাজ্জালের হাতে যে আগুন দেখবে মূলত সেগুলো থাকবে পানি আর যেগুলোকে দেখবে পানি সেগুলো হবে মূলত আগুন। কোন মুসলমান তাকে রব বলে স্বীকার করলে তাকে পানিতে নিক্ষেপ করবে মূলত যা হবে জাহান্নামের আগুন। আর যারা অস্বীকার করবে তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবে প্রকৃত পক্ষে সে ব্যক্তি মহান শান্তিতে সমাহিত হবে"। 
 
🔥দাজ্জাল মক্কা ও মদীনা ব্যতিরেকে পৃথিবীর সকল জায়গায় বিচরণ করবে। এ সময় মদীনায় ৭টি প্রবেশ দার থাকবে এবং ঐ দারগুলোতে আল্লাহর রহমতের ফেরেস্তাগণ পাহারায় নিয়োজিত থাকবেন, ফলে দাজ্জাল মক্কায় এবং মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না।
 
🔥হযরত ঈসা (আঃ) হাতে ফিলিস্তাইনের বামেলুদ নামক জায়গায় দাজ্জাল নিহত হবে।

৩। দাব্বাতুল আরধ
দাব্বাতুল আরদ নামক অদ্ভুদ প্রাণি সম্পর্কে আলোচনা। দাব্বাতুল আরদ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ "যখন ঘোষিত শাস্তি তাদের নিকট আসবে, তখন আমি মাটির গর্ভ থেকে একটি জন্তু নির্গত করবো। এ জন্তু মানুষের সাথে কথা বলবে, এই জন্য যে তারা আমার নিদর্শনে ছিল সম্পূর্ন অবিশ্বাসী।" (সূরা নামল, আয়াত-২৮)। কিয়ামত সংগঠিত হবার আগে বায়তুল্লাহ শরীফের পূর্বদিকে অবস্থিত সাফা পর্বত ভূমিকম্পে ফেটে যাবে এবং সেখান থেকে এই বিচিত্র এক অদ্ভুদ জন্ত বের হয়ে আসবে। এর মুখ মন্ডলের আকৃতি মানুষের ন্যায়, পা উটের ন্যায়, ঘাড় ঘোড়ার ন্যায়, লেজ চিলের ন্যায়, নিতম্ব হরিণের নিতম্বের ন্যায়, শিং বহু শাখা হরিনের ন্যায় এবং হাত বানরের হাতের ন্যায়।

উক্ত জন্তুটি অত্যান্ত বাকপটু করে এবং উচ্চমানের ভাষায় কথা বলবে। সমস্ত শহরে এত জোরে চলাফেরা করবে কেউ তার নাগালে যেতে পারবেনা। তার নিকট হযরত মুসা (আঃ) এর লাঠি থাকবে। এ লাঠি দ্বারা সে যাকে স্পর্শ করবে তার মুখ-মণ্ডল উজ্জল হয়ে উঠবে। অর সোলায়মান (আঃ) এর আংটি থাকবে এবং কাফিরদের নাকের উপর 'কাফির' শব্দটি সীল করে দিবে। ফলে সকলে তাদেরকে কাফের বলে চিনতে পারবে।


দাব্বাতুল আরদ নামক এই অদ্ভুদ প্রাণি মুমিনদের বান্দাদের কপালে "মমিন" এবং কাফেরদের কপালে কাফের লিখে দিবেন।

৪। পশ্চিম দিগন্ত হতে সূর্য উদিত হওয়া। 
বিভিন্ন হাদিসের আলোকে জানা যায়, "দাব্বাতুল আরদ" আত্নপ্রকাশের কিছুদিন পূর্বে কিংবা তার পর পরই সিঙ্গায় ফুৎকারের আগে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয়ের ঘটনা ঘটবে। এ অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটার পর কোন কাফিরের ঈমান কিংবা ফাসিকের তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। ফলে ঈমানদারগণ সতর্কিত হয়ে রাতভর কান্নাকাটি করবেন। এ রাতের পর পুনরায় স্বাভাবিকভাবে সূর্য পূর্ব দিক থেকে উদিত হবে এর কিছুদিন পর কেয়ামত সংগঠিত হবে।

৫। মারিয়াম তনয় ঈসা (আঃ) এর অবতরণ
হযরত ঈসা (আঃ) এর পৃথিবীতে অবতরণ। ইমাম মেহেদীর সাথে দাজ্জালের যুদ্ধ যখন আসন্ন হবে, ঠিক এমন সময়ে হযরত ঈসা (আঃ) এর পৃথিবীতে অবতরণ। সময় অবতীর্ণ হবে এবং তিনি ইমাম মেহেদীর সাথে মিলিত হবেন। ইমাম মেহেদীর ইমামতিতে তিনি নামায শেষ করবেন। নামায শেষে ইমাম মেহেদী হযরত ঈসা (আঃ) 'কে বলবেন, হে আল্লাহর নবী। সৈন্য পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহন করুন। আমি এসেছি আর দতারানকে নিপাত তিনি বলবেন- আল্লাহ তায়ালা আমার হাতেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। 

ওদিকে দাজ্জাল তার বিপুল সংখ্যক সেনা নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অভিযান করবে। মুসলমানগণ এর মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে। হযরত শাহ রফি উদ্দিন (রহ:) এর আলামত কিয়ামত গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন "এক পর্যায়ে লুদ্দা নামক স্থানে ঈসা (আঃ) এর হাতে দাজ্জাল নিহত হবে"। 

পরবর্তীতে দাজ্জালের অনুসারীরা মুসলমানদের হাত হতে বাঁচার জন্য সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে। এক পর্যায় তারা পাথর ও গাছ-গাছালির আড়ালে পালানোর চেষ্টা করলে ঐ সকল জড়বস্তুও উচ্চস্বরে আওয়াজ দিয়ে ইহুদীদের ধরিয়ে দেবে। পরবর্তীতে মুসলমানদের বিজয় সূচিত হবে। 

এরপর ইমাম মেহেদী অল্প কিছুদিন জীবিত থাকবেন। তাঁর  মৃত্যুর পর হযরত ঈসা (আঃ) মুসলিম সম্রাজ্যের অধিপতি হবেন। অনেক বছর ধরে তিনি শান্তি ও শৃঙ্খলার সাথে দেশ শাসন করবেন। সব লোক আল্লাহর ইবাদতে এবং সৎকাজে মশগুল হবে।


এরপর, ইয়াজুজ-মাজুজের অত্যাচার শুরু হবে। ইয়াজুজ ও মাজুজের দৌরাত্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছলে হযরত ঈসা (আঃ) আল্লাহর নিকট মুসলমানদেরকে নিয়ে দোয়া করবেন। ফলে আল্লাহ তায়ালার আদেশে তিনি এবং তার সংগীগণ পাহাড়ে উঠে যাবে এবং আল্লাহ তায়ালার হুকুমে এই অত্যাচারী সম্প্রদায় সকলেই মৃত্যু বরণ করবে। এরপর আল্লাহর নবী ঈসা (আঃ) ও তার সংগীগণ পাহাড় থেকে জনপদে নেমে আসবেন। 

অতঃপর, আল্লাহর নবী ঈসা (আঃ) ও তার সাহাবা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন এবং আল্লাহ তায়ালা আল-বুকতী উটের সদৃশ পাখি পাঠাবেন। এসব পাখি ইয়াজুজ-মাজুজের লাশ যেখানে ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিবেন, সেখানে ফেলে দেবে। অতঃপর, ভূমিকে বলা হবে তোমরা ফল উৎপাদন কর এবং বরকত ফিরিয়ে নাও। এত বরকত, কল্যান ও প্রাচুর্য দেখা দেবে একটি ডালিম খেয়ে পূর্ণ একটি দল পরিতৃপ্তি হবে এবং ডালিমের খোসাটি এত বড় হবে যে, তার ছায়ায় তারা আশ্রয় নিতে পারবে। গবাদি পশুতে এত বরকত হবে যে, একটি মাত্র উটের দুধ হবে একটি বড় দলের জন্য যথেষ্ট। একটি দুধের গাভীর দুধ একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। 

এ সময় আল্লাহ তায়ালা পবিত্র হাওয়া প্রবাহিত করবেন। এসব হাওয়া তাদের বগলের নীচে পর্যন্ত লাগবে ফলে সকল মুমিন ও মুসলমানের রুহু কবজ হয়ে যাবে। শুধু খারাপ লোকেরা বেঁচে থাকবে। তারা গাধারমত যেথায়-সেথায় সহবাসে লিপ্ত থাকবে। তাদের বর্তমানেই কেয়ামত সংগঠিত হবে।

৬। ইয়াজুয-মাজূয এর আগমন
ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন। ইয়াজুজ-মাজুজ হযরত নুহ (আঃ) এর পুত্র ইয়াকা এর বংশধর হবে। এরা দেখতে মানুষ, তবে স্বভাব হবে চতুস্পদ জন্তর মত। দেহের সম্মুখ ভাগ মানুষের ন্যায় এবং পিছনের ও নিম্নের দিক চতুস্পদ জন্তুর ন্যায়। দুনিয়ার এক সীমান্তে এরা বাস করে। এরা মানুষ, বৃক্ষলতা সব ভক্ষণ করে। এক সময় তারা মানব জাতির উপর অত্যাচার চালাত। তারা পৃথিবীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা হবে। এদের বর্তমান অবস্থান আরমেনিয়া ও আযার বাইজানের পর্বত মালার পশ্চাতভাগে (তাফসিরে তাবারী ১৬-২)। 

হযরত জুলকারনাইন আল্লাহর আদেশে সূদৃঢ় প্রাচীর গেথে ইয়াজুজ- মাজুজ জাতিকে মানব এলাকায় আসার পথ বন্ধ করে দেন। ওরা উক্ত প্রাচীর প্রত্যেক দিন জিহবা দিয়ে চাটতে থাকে। কিন্তু দেয়াল ভাংতে পারে না। এভাবে কিয়ামতের পূর্বমহূর্ত পর্যন্ত চলবে। কিন্তু হঠাৎ একদিন এ দেয়াল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তখনই ইয়াজুজ-মাজুজের দল স্রোতের ন্যায় মানব এলাকায় ঢুকে পড়বে। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন সুরা অদ্বিয়া আয়াত-৯৬ এ বলেনঃ "এমনকি ইয়াজুজ-মাজুজকে মুক্তি দেয়া হবে এবং তারা উচ্চ ভূমি হতে ছুটে আসবে"।


তারা সব কিছু খেয়ে ফেলবো। পানির সিনামায় তারা দুনিয়ার সব সাগর, মহাসাগর, নদী, বিল ইত্যাদির পানি খেয়ে ফেলবে। এভাবে সারা দুনিয়াকে তছনছ করে দেবে। অবশ্যই তারা আল্লাহর হুকুমে সবাই মারা যাবে।

৭। পূর্ব প্রান্তে ভূমিধ্বস। কিয়ামত শুরু হওয়ার আগে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে বিশাল আকারের ভূমিধ্বস হবে। এটা হল কিয়ামত বড় আলামতের অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ বলেন ইতিপূর্বে ভূমিধ্বস হয়ে গিয়েছে।

৮। পশ্চিম প্রান্তে ভূমিধ্বস। পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে ভূমিধ্বস হবে। যা হতে পারে সুদের, সমকামিতা, জেনা-বেবিচার, পর্নোগ্রাফির, বিশ্ববাসীর সাথে জুলুমের প্রতিফলন হিসেবে। এটা কখন হবে এ ব্যাপারে একমাত্র মহান আল্লাহ পাকী ভাল জানেন।

৯। আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস। আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস হবে। এটা কখন হবে এ ব্যাপারে একমাত্র মহান আল্লাহ পাকী ভাল জানেন।

১০। একখণ্ড আগুন প্রকাশিত হবে, যা তাদেরকে ইয়ামান থেকে হাঁকিয়ে হাশরের ময়দানে দিকে নিয়ে যাবে। 
দক্ষিন দিকে থেকে (ইয়ামান থেকে) একখণ্ড আগুনের শিখা প্রকাশিত হবে। যা মানুষকে ধাওয়া করতে শুরু করবে, লোকজন ক্রমশঃ উত্তর দিকে গিয়ে জড়ো হতে থাকবে। একপ পর্যায় সবাইকে হাঁকিয়ে হাশরের ময়দানে দিকে নিয়ে যাবে। আর এটাই হবে কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়া সর্বশেষ আলামত বা লক্ষণ বা  নিদর্শন ।

কিয়ামতের দিন কি হবে?


যেদিন এই সমগ্র পৃথিবী ধ্বংস হয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, তখন মানুষ তার কবর জীবন শেষ করে হাশরের ময়দানে পুনর্জীবিত হয়ে তাদের কৃতকর্মের হিসাব নিকাশ মহান রাব্বুল আলামিনের নিকটে উপস্থাপন করার জন্য মহান আল্লাহ পাকের সামনে দাঁড়াবেন। কিয়ামতের দিন কি কি হবে এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক ভাল জানেন। তবে এ ব্যাপারে কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী কি কি হবে তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিম্ন বর্ণিতভাবে উল্লেখ করা হলো:


১। প্রত্যেক মানুষের ভালো-মন্দ কাজের আমলনামা আমি তার গলায় ঝুলিয়ে এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য বের করব একটি কিতাব, যাকে সে খোলা আকারে পাবে। বলা হবে: "পড়ো নিজের আমলনামা নিজেই। আজ নিজের হিসাব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট" (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১৩-১৪)।


২। মুশরিক, জালিম ও কাফিরদের আরেকটি দল থাকবে। তারাও তাদের মতো মানুষের সঙ্গে জমায়েত হবে। অর্থাৎ মুশরিক পণ্ডিত, জালিম, কোরআন ও হাদিস অমান্যকারী, পরকাল অস্বীকার কারীসহ সবার আলাদা দল থাকবে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, "একত্র করো গুনাহগারদের, তাদের দোসরদের এবং আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদত তারা করত। অতঃপর তাদের পরিচালিত করো জাহান্নামের পথে" (সুরা: সাফফাত, আয়াতঃ ২২-২৩)।

৩। কিয়ামতের দিন সূর্য মাথার এক বিঘত ওপরে থাকবে, পায়ের নিচে জমিন হবে তামার। পাপী-তাপী এবং গুনাহগারেরা ঘামতে থাকবে। পাপের পরিমাণ অনুযায়ী কষ্টের ও ঘামের পরিমাণ হবে। কারও হাঁটু পর্যন্ত, কারও কোমর, কারও বুক, কারও গলা পর্যন্ত, কারও ঘামে সাঁতার কাটতে হবে; তারা তাতে হাবুডুবু খাবে (সহীহ বুখারি শরীফ-৬৫৩২)।

৪। আশরাফুল মাখলুকাতের কবর জীবন শেষ করে হাশরের ময়দানে পুনর্জীবিত হয়ে জমাইতে হবে।

৫। মানুষ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত হাশরের মাঠে অবস্থান করবে। এখানে উল্লেখ্য যে, হাশরের মাঠের একদিনের পরিমাণ হবে ৫০,০০০ বছরের সমান।

৬। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দাকে আল্লাহর সামনে নামাজের হিসাব দিতে হবে। নামাজি ব্যক্তির মান-মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। 

৭। মানুষের আমলনামা উপস্থাপন করা হবে। 

৮। প্রথম পর্যায়ে হিসাব গ্রহণ করা শেষ হলে আমলনামা দেওয়া হবে। এখান থেকে জান্নাতি ব্যক্তিদের আমলনামা ডান হাতে এবং জাহান্নামি ব্যক্তিদের আমলনামা বাম হাতে। 

৯। তারপর আমলনামা যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে।

১০। কিয়ামতের দিন দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করা হবে এবং দাঁড়িপাল্লার মাধ্যমে বান্দাদের সকল ধরনের আমলসমূহ ওজন করা হবে।

১১। আমলনামা দাঁড়িপলায় মাপার পর বিভিন্ন দলের বিভক্ত হয়ে যাবে।

১২। অতঃপর মুমিনদের আল্লাহ পথে চলার জন্য আলো দেবেন এবং জাহান্নামিদের চারিদিকে অন্ধকারে ছেয়ে দেয়া দেবেন।

১৩। পুলসিরাত পারি দিতে হবে। 


১৪। উল্লেখ্য যে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন (আলহামদুলিল্লাহ)।


সর্বশেষ মতামত। কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন

আমাদের আজকের আর্টিকেল মূল বিষয় ছিল "কিয়ামতের আলামত এবং লক্ষণ – এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন"। আমি লেখক হিসেবে আলোচনা "কিয়ামত অর্থ কি, কিয়ামত কি বা কিয়ামত কাকে বলে, পবিত্র কোরআনের আলোকে কিয়ামত, হাদিসের আলোকে কিয়ামত, কিয়ামতের ফিতনা সমূহ, কিয়ামতের ছোট আলামত এবং লক্ষণ সমূহ, কিয়ামতের বড় আলামত এবং লক্ষণ সমূহ, কিয়ামতের দিন কি হবে এবং সর্বশেষ মন্তব্য" নিয়ে।

মহান আল্লাহ পাক এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই পৃথিবী আবার কিয়ামতের মাধ্যমে শেষ করে দিবেন এটাই সত্য। আমাদের প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে উল্লেখিত কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিজেকে একটি খাটি মুসলমান হিসেবে তৈরী করার চেষ্টা করা। যাতে হবে আমাদের চিরকালের জন্য মঙ্গল এবং চিরস্থায়ী ভাবে জান্নাতুল ফেরদাউস নামক জান্নাত অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের এই বিষয়ে বুঝার তৌফিক দান করুন। (আমিন)।


আমাদের এই ক্ষুদ্র পরিসরে লেখাটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে বা সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের মন্তব্য লিখতে এবং প্রিয়জনকে শেয়ার করতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url