চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
খুশকি একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যার সমাধান পেতে "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" গুলো জানা দরকার। "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" জানা থাকলে আপনি খুব সহজে খুশকির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আজকে আমরা "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" গুলো আপনাদেরকে জানাবো।
সাধারণত শীতকালে খুশির সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা যায়। খুশকির সমস্যা থেকে চুলকে বাঁচানোর জন্য চলুন "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" গুলো জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ- চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়
ভুমিকাঃ
দুনিয়াতে হয়তো এমন কোন মানুষ নেই যে খুশকির সমস্যায় ভোগেণনি। এর কারণ খুশকি একটি সাধারণ সমস্যা। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ত্বকের কোষ গুলো একটি নির্দিষ্ট বয়সে মারা যায় এবং সেখানে পুনরায় নতুন কোষ জন্মগ্রহণ করে। মৃত কোষ গুলো পুরোপুরি ঝড়ে না পড়ার কারণে খুশকি দেখা দেয়।
আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক নিয়মে কিভাবে খুশকি দূর করবেন
খুশকি গুলো সাদা গুড়ার মত দেখায় এবং মাথা প্রচন্ড চুলকায়। মাথার চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে খুশকি হতে পারে। অথবা মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে খুশকি হয়ে থাকে। এ সমস্যা গুলো মুক্তির জন্য "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত।
খুশকি কিঃ
খুশকি হল মাথার ত্বকের একটি অবস্থা। যা সাধারনতঃ আমাদের মাথার খুলিতে প্রভাব পড়ে। খুশকি কোন রোগ নয়। যা মাথার খুলির মরে যাওয়া ত্বক হতে সাদা সাদা ছোট ছোট কোষ গুলো দেখতে পাওয়া যায়। এতে করে মাথার খুলির মরে যাওয়া ত্বক উঠে যায় এবং ঝরে পড়ে যায়। যেখানে মাথার ত্বকের কোষ গুলো মারা যাওয়ার পরে নতুন কোষের জন্ম হয়।
মৃত কোষ গুলো মাথার ত্বক থেকে ঝরে না পড়ে সেখানে জমা থাকলে বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমণে খুশকির জন্ম হয়। মৃত কোষ গুলো মাথার স্কাল্পে জমে মেলাসেজিয়া নামক ছত্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে খুশকির প্রবণতা বেড়ে যায়। মাথার ত্বক বা স্কাল্পে ময়লা জমে থাকলে খুশকি সহজে দূর হতে চায় না। খুশকি মাথার ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি তেমন কোনো ক্ষতি করো না। খুশকি সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে। এগুলি হলঃ
💢 ড্রাই স্ক্যাল্পের জন্য এক ধরনের খুশকি হয়ে থাকে।💢 অয়েলি স্ক্যাল্পের জন্য এক ধরনের খুশকি হয়ে থাকে।
খুশকি হওয়ার কারণঃ
খুশকি মাথার ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা। এটা আমাদের মাথায় কোন ক্ষতি করে না। তবে আমাদের বিভিন্ন কারণে মাথায় খুশি হতে পারে। এ থেকে আমাদের সকলের সাবধান হতে হবে। আসুন আমরা এখন জেনে নিচ্ছি খুশকি হওয়ার কারণ সমূহ। নিম্ন বর্ণিত কারণে মাথায় খুশকি হতে পারেঃ
💥খুশকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে সেবোরেইক ডারমাটাইটিস বা ত্বকের তৈলাক্ত ও চুলকানিপ্রবণ অবস্থাকে।
আরো পড়ুনঃ খুশকি বেশি হওয়ার কারণ কি
💥জিনগত ও পরিবেশগত কারনে খুশকি হতে পারে।💥মাথায় তেল দেওয়ার ফলে ত্বকে ময়লা জমে তেল চিটচিটে অবস্থার মধ্যে খুশকি হতে পারে।💥শুষ্ক ত্বকও খুশকির একটা কারণ হতে পারে।💥নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করলে মাথায় খুশকি হতে পারে।💥মানসিক চাপ বেশি হলে খুশকি হতে পারে।
💥ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে খুশকি হতে পারে।💥মেলাসেজিয়া গ্লোবসা নামে এক ধরনের ফাঙ্গাস, যার কারণে খুশকি হতে পারে।💥মানুষের মাথার ত্বকে মেলাসেজিয়া নামক এক ধরনের অণুজীব বা ছত্রাক বাস করে। এ ছত্রাকটি মাথার স্ক্যাল্পে প্রদাহ এবং সংক্রামণ সৃষ্টি করতে সক্ষম। যার কারণে মূলত খুশকি হতে পারে।💥পরিবেশ দূষনের কারণে খুশকি হতে পারে।💥হরমোনগত সমস্যা কারণে খুশকি হতে পারে।💥মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে খুশকি হতে পারে।💥অতিরিক্ত তেল ব্যবহারের কারণে খুশকি হতে পারে।💥ইউনিয়ন সিস্টেমের সমস্যার কারণেও খুশকি হতে পারে।
চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়ঃ
শীতকালে খুশকির উপদ্রব বেশি লক্ষ্য করা যায়। তখন সচরাচর শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও খুশি থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকা যায় না। এমনকি নামি দামি ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও খুশকি সমস্যা খুব একটা দূর হয় না। সে ক্ষেত্রে চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় সমূহের মধ্যে সঠিক শ্যাম্পু এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপায় গুলো কাজে লাগতে পারে। চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
💝নিম পাতা ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে নিমপাতা দারুন কার্যকর। মাথার ত্বকে ধুলাবালি বা ডাস্ট জমে খুশকির সৃষ্টি হয়। নিম পাতার মধ্যে এন্টিফাঙ্গাল উপাদান থাকার কারণে মাথা ত্বকের ফাঙ্গাস এর বিরুদ্ধে খুব ভাল কাজ করে। এক্ষেত্রে নিমপাতা ভাল করে বেটে পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগাতে পারেন। অথবা নিমের তেল ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের খুশকি দূর করার উপায়
💝অ্যালোভেরা ব্যবহারমাথার চুলে এবং ত্বকে অ্যালোভেরা ব্যবহার আপনার জন্য চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় হতে পারে। অ্যালোভেরার মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা খুশকি দূর করতে সহায়তা করে। অ্যালোভেরার পাতা ভালোভাবে বেটে জেলির মত করে নিন। এরপর মাথার চুলে ভালো করে মালিশ করুন। ৩০ মিনিট পর ভালো করে সাবান বা শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।💝মেথি ব্যবহারমেথি শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী শুধু তা নয়, চুলের যত্নের জন্যও বেশ উপকারী। এই মেথি মাথার চুলে এবং ত্বকে জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পানিতে মেথি ভিজিয়ে সারা রাত রেখে দিন। সকালে সেই মেথিকে ভালোভাবে বেটে পেস্ট বা জেলির মত করে নিন। এরপর মাথার চুলে ভালো করে মালিশ করুন। ২৫-৩০ মিনিট পর ভালো করে সাবান বা শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।💝ডিমের সাদা অংশ ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে ডিমের সাদা অংশ ভাল কাজ করবে। ডিমের সাদা অংশ চুলে এবং ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০-৩৫ মিনিট পর সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এছাড়াও নারিকেল তেলের সাথে আপনি মেথির দানা ফুটিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।💝জবা ফুল ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে জবা ফুল অন্যতম। নারিকেল তেলের সাথে জবা ফুল মিশিয়ে হালকা গরম করে নিন। এরপর সেই তেল মাথার চুল এবং ত্বকে ভালোভাবে মালিশ করুন। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল ঘন হবে এবং খুশকি দূর হয়ে যাবে।
জবা ফুল |
💝তেঁতুল ব্যবহারশুনতে অবাক মনে হলেও চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে তেঁতুলের ব্যবহার অন্যতম। পুরানো তেঁতুল পানিতে ভালোভাবে গুলে চুলের গোড়ায় লাগান। তারপর ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এই পদ্ধতিতে তেঁতুল ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার চুলকানিও কমে গেছে এবং খুশকি কমে গেছে।
আরো পড়ুনঃ চুল লম্বা করার তেলের নাম | অল্প সময়ে দ্রুত চুল লম্বা করার উপায়
💝টক দই ও মেহেদী ব্যবহারচুলের খুশকি চিতরে দূর করতে, চুলকে উজ্জ্বল এবং সতেজ রাখতে টক দই খুব কার্যকর। ৬ টেবিল চামচ টক দই নিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিন। এর সাথে এক টেবিল চামচ মেহেদী বাটা ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। এই মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় এবং মাথার ত্বকে ভালোভাবে মালিশ করুন। ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। সপ্তাহে অন্তত একদিন এই মিশ্রণটি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করুন তাহলে আপনার চুল উজ্জল, ঝলমলে এবং রেশমি হবে। এর পাশাপাশি খুশকি চিরতরে দূর হবে।💝ডিমের সাদা অংশ ও টক দই ব্যবহারটক দই ও ডিমের সাদা অংশের ব্যবহারে চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় গুলোর মধ্যে ব্যাপক কার্যকরী। ৪ টেবিল চামচ টক দইয়ের সাথে একটি ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মিশিয়ে ফেটে নিন। এর সাথে আপনি লেবুর রসও মেশাতে পারেন। এই মিশ্রণটি চুলে এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে চুল এবং মাথার ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত একদিন এই পদ্ধতিতে মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।💝অলিভ অয়েল ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় হিসেবে অলিভ অয়েল এর ব্যবহারের জুড়ি নেই। পরিমাণ মতো অলিভ অয়েল গরম করার পর এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং চুলে ভালোভাবে ব্যবহার করুন। এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর সাবান, শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এই ভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। খুশকি দূর হওয়ার সাথে সাথে আপনার চুল ঝলমলে এবং সফট হবে। একই পদ্ধতিতে অলিভ অয়েলের পরিবর্তে নারিকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন।💝পেঁয়াজের রস ব্যবহারখুশকি চিরতরে দূর করার ক্ষেত্রে পেঁয়াজের রস খুব উপকারী। পেঁ/য়াজকে ভালোভাবে বেটে রস ছেঁকে নিন। এই রস চুলে এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মাসাজ* করুন। এ অবস্থায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করার পরে শ্যাম্পু অথবা কন্ডিশনার দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার পেঁয়াজের রস এভাবে ব্যবহার করুন। খুশকি দূর হবে এবং মাথা চুলকানিও কমবে।
💝লেবুর রস ব্যবহারখুশকি চিরতরে দূর করতে লেবুর রস কার্যকরী এই কথা সর্বজন স্বীকৃত। চিরতরে খুশকি দূর করার উপায় হিসেবে লেবুর রসের সঠিক ব্যবহার প্রয়োজন। সঠিকভাবে ব্যবহার না করার ফলে কিছুদিন পরে পুনরায় খুশকি দেখা দেয়। প্রয়োজন মত লেবু চিপে রস বের করুন।
আরো পড়ুনঃ জাফরান তেল কি চুল লম্বা করে
এই রস চুলে এবং চুলের গোড়ায় ব্যবহার করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। গোসলের সময় গোসলের পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। সেই রসমেশানো পানি মাথার চুলে ভালোভাবে মেসেজ করুন। এবং মাথার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। আশা করা যায় ১০-১৫ মিনিট দিন এই পদ্ধতি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা চিরতরে দূর হবে।💝কমলা লেবুর খোসা ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় এই আর্টিকেলটিতে ম্যাজিক হল কমলা লেবুর খোসা। আমরা অনেকেই জানি যে কমলা লেবুর খোসায় এসিড রয়েছে। এই এসিড মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে খুশকি হওয়ার প্রবণতাকে রোধ করে। প্রয়োজনে বাসায় কমলা লেবুর খোসা দিয়ে হেয়ার প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। প্রয়োজন মত লেবুর খোসা এবং চার-পাঁচ চামচ লেবুর রস ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে হেয়ার প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করুন। প্যাকটি চুল এবং মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।💝ভিনেগার ব্যবহারআপনি স্থায়ীভাবে খুশকি থেকে মুক্তি পেতে আপেল-সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। ভিনেগার মাথার ত্বক থেকে ফাঙ্গাস এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। একটি কলা ১/২ কাপ আপেল সাইডার ভিনেগারের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি মাথার চুলে এবং মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ভিনেগার |
💝Tea Tree অয়েল (Tea Tree Oil) ব্যবহারচিরতরে খুশকি দূর করার উপায় হিসেবে Tea Tree অয়েল এর ব্যবহার আরেকটি চমক। Tea Tree অয়েলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ার গুণ রয়েছে। যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং খুশকি দূর করতে খুব কার্যকর। Tea Tree অয়েলের সাথে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল মিশিয়ে মাথার ত্বক এবং চুলে ভালোভাবে মালিশ করুন। ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
আরো পড়ুনঃ জাফরান তেল কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
💝বেকিং সোডা ব্যবহারমাথা থেকে চিরতরে খুশকি দূর করতে বেকিং সোডার ব্যবহারের গুরুত্ব কম নয়। খুশকির সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে আপনি বেকিং সোডা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। প্রথমে চুল ভিজিয়ে নিন এবং তাতে বেকিং সোডা ভালোভাবে ঘোষে মালিশ করুন। দুই থেকে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল এবং মাথার ত্বক পরিষ্কার করে নিন।
💝 লবণ ব্যবহারখুশকি স্থায়ীভাবে দূর করার জন্য লবণের বেশ ভূমিকা রয়েছে। খুশকি স্থায়ীভাবে দূর করতে চাইলে চুলের শ্যাম্পু করার আগে লবণ ব্যবহার করতে পারেন। কারণ লবণে খুশকি দূর করার ক্ষমতা রয়েছে।
💝 রসুন ব্যবহার
মাথার চুলের খুশকি দূর করাতে রসুনের ভূমিকা অপরিসীম। আপনি শিল পাটায় রসুন পিষে ভালভাবে মিহি করে মাথায় লাগাতে পারেন। রসুনের যে ঘ্রাণ রয়েছে তা দূর করতে প্রয়োজনে সামান্য কিছু মধু মিশাতে পারেন। এই প্যাকটি চুল এবং মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। আশা করা যায় এই পদ্ধতি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা চিরতরে দূর হবে।
💝 রিঠা বা রিঠা পাউডার ব্যবহাররিঠা পাউডার চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং চুলের খুশকি দূর করতে বেশ কদর রয়েছে। খুশকির সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে এই রিঠা পাউডার। রিঠা বা রিঠা পাউডার মাথায় লাগিয়ে ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করুন এবং তারপর মাথা সুন্দর করে শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
💝 মাথায় স্ক্রাব বা ক্যাপ ব্যবহারবাহিরে গেলে মাথায় স্ক্রাব বা ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। বাহিরে গেলে রৌদ্র এবং ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মাথায় স্ক্রাব বা ক্যাপ ব্যবহার করলে চুলের আদ্রতা ঠিক থাকে। বাহির থেকে আসার পর অপেক্ষা শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল পরিষ্কার করে নিন। আশা করা যায় এই পদ্ধতি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে খুশকি হওয়া থেকে এবং খুশকির সমস্যা চিরতরে দূর হবে।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে শসা ব্যবহারের উপকারিতা
💝 খাদ্য অভ্যাসে পরিবর্তন
চুলের খুশকি নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং খুশকির সমস্যা চিরতরে দূর করার জন্য খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন করতে পারেন। এক্ষেত্রে খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে এবং বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। আশা করা যায় এই পদ্ধতি নিয়মিতভাবে পালন করলে খুশকি হওয়া থেকে এবং খুশকির সমস্যা চিরতরে দূর হবে।
💝 চর্বি জাতীয় খাবারচর্বি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে যেমন স্বাস্থ্য ঠিক থাকতে সহায়তা করে এবং মাথার খুশকি নিয়ন্ত্রণে বেশ ভূমিকা পালন করে থাকে।
💝 মুলতানি মাটি ব্যবহারমুলতানি মাটি ব্যবহার করতে পারেন খুশকি ভাবে দূর করার জন্য। মুলতানি মাটিতে রয়েছে পুষ্টিগুন। যা যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি এবং খুশকি দূর করতে দুরন্তভাবে কাজ করে। মুলতানি মাটির সঙ্গে কিছু পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে গোসল করার পূর্বে ভালোভাবে মাথায় মালিশ করুন এবং হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
💝 রোজমেরী অয়েল ব্যবহাররোজমেরী অয়েলের সাথে কিছু নারিকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তাতে করে আপনার মাথা ঠাণ্ডা থাকবে এবং খুশকি চিরতরে দূর হবে।
💝 পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবেআপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে আপনাকে কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে এবং ঘুমাতে হবে। তাতে করে আপনার মাথা ঠাণ্ডা থাকবে এবং খুশকি চিরতরে দূর হবে।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে আলুর ৭টি ব্যবহার
খুশকি দূর করার অন্যান্য উপায়ঃ
- নিয়মিত মাথার চুল এবং স্ক্যাল্প পরিষ্কার করুন।
- রোদে বা হেয়ার ড্রায়ার এর মাধ্যমে চুল শুকাবেন না।
- নিয়মিত চুল আঁচড়াবেন।
- কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্টের ব্যবহার পরিহার করুন।
- মাথায় এবং চুলে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করবেন না।
- নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান।
- সপ্তাহে ২ – ৩ বার ভালোভাবে শ্যাম্পু করুন।
কিছু কিছু চর্ম রোগ রয়েছে যেগুলোর কারণে মাথার ত্বকে খুশকির মত দেখা যেতে পারে। তাই খুশকির পরিমাণ খুব বেশি হলে বা দূর করা সম্ভব না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
উপসংহারঃ
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। খুশকি মাথার ত্বকের এবং চুলের একটি অবস্থা যা খুব অস্বস্তিকর এবং বিব্রতকর। "চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়" হিসেবে আলোচিত পদ্ধতি গুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি অস্বস্তিকর এবং বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূর রাখতে পারেন এবং চিরতরে খুশকি দূর করাতে পারবেন।
যদি আমাদের এই লেখাটি ভাল লেগে থাকে তাহলে আপনার প্রিয় সহকর্মীদেরকে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url