থানকুনি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি - ৮টি
থানকুনি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি - ৮টি
ভূমিকাঃ
তাই থানকুনি পাতা খাওয়ার উপায় সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। গ্রাম অঞ্চলে এক পরিচিত ঔষধি গাছ হচ্ছে থানকুনি পাতা। এই গাছের উপকারিতা বহু গুণ। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮টি পদ্ধতি সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮টি পদ্ধতি সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ থানকুনি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি - ৮টি
- থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮ পদ্ধতি
- থানকুনি পাতার মিহি ভর্তা
- থানকুনি পাতা আলুর ভর্তা
- থানকুনি পাতা ভাজি
- থানকুনি পাতার বড়া
- থানকুনি পাতার জুস
- শেষ কথা
থানকুনি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি - ৮টি
আমরা তুলসী পাতা, পেয়ারা পাতা, পুদিনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এতদিন জেনে এসেছি। আজকে আমরা থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮ পদ্ধতি বা উপকারিতা সম্পর্কে জানব। কেননা আমরা অনেকেই থানকুনি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানি না বা চিনিনা। তাই শুধুমাত্র আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে যারা থানকুনি পাতা সম্পর্কে জানে না। আমাদের দেশে থানকুনি পাতা অনেক পরিচিত একটা ভেষজ উদ্ভিদ।
আরো পড়ুনঃ আবির মাহমুদ নামের অর্থ সম্পর্কে জানুন
এর পাতাতে সকল ধরনের ওষধি গুনাগুন রয়েছে। এছাড়াও থানকুনি পাতা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। থানকুনি পাতা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। বহু গুনে পরিপূর্ণ এই থানকুনি পাতা বিভিন্ন পদ্ধতিতে খাওয়া হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভাজি, ভর্তা, বড়া বা সালাদ। তাহলে চলুন থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে আসি।
থানকুনি পাতার মিহি ভর্তা
থানকুনি পাতা এক ধরনের ঔষধি ভেষজ। যা কিনা খেলেই উপকারিতা পাওয়া যায়। তাই
আজকে আমরা থানকুনি পাতার মিহি ভর্তা কিভাবে খাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।
এতে খেতে যেমন সুস্বাদু লাগবে তেমনি এর উপকারিতা ও পাওয়া যাবে।
উপকরণঃ ২০০গ্রাম থানকুনি পাতা কিংবা দুই থেকে তিন আটি লাগবে। দুটি পেঁয়াজ কুচি, একটা রসুন কুচি, দুই থেকে তিনটা কাঁচা মরিচ কুচি, আদা কুচি, লবণ এবং পরিমাণ মতো সরিষার তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে ভালো করে থানকুনি পাতা ধুয়ে নিতে হবে।
এরপর ছোট ছোট কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। তারপর থানকুনি পাতার কুচি, রসুন
কুচি, আদা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লবণ একসাথে মিশিয়ে শিল পাটা কিংবা ব্লেন্ডারে
ভালোভাবে পিষে নিতে হবে। এবার তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নাড়লেই থানকুনি পাতার মিহি
ভর্তা হয়ে গেল।
থানকুনি পাতা আলুর ভর্তা
আমরা এখন থানকুনি পাতা দিয়ে আলুর ভর্তা কিভাবে খাওয়া যায় সে পদ্ধতি সম্পর্কে জানব। আলু ভর্তা এমনিতেই সকলের প্রিয়। তার সাথে কিছু থানকুনি পাতা যুক্ত করলে যেমন খেতে ভালো লাগবে তেমনি এর গুনাগুন ও পাওয়া যাবে। তাহলে চলুন থানকুনি পাতা দিয়ে আলু ভর্তা বানানোর পদ্ধতি দেখি।
উপকরণঃ দুই তিন আটি বা ২০০ গ্রামের মতো থানকুনি পাতা প্রয়োজন। সেই
সাথে একটি রসুন কুচি, দুইটা পেঁয়াজকুচি, দুই থেকে তিনটা কাঁচা মরিচ, আদা কুচি,
এক থেকে দুইটা আলু সেদ্ধ করা, লবণ এবং পরিমাণমতো সরিষার তেল।
আরো পড়ুনঃ মোজাইক রোগের প্রতিকার কিভাবে করবেন
প্রস্তুত প্রণালীঃ থানকুনি পাতা দিয়ে আলুর ভর্তা বানানোর
জন্য প্রথমে ভালোভাবে থানকুনি পাতা ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাতাগুলোকে কুচকুচি
করে কেটে নিতে হবে। একটা আলু সেদ্ধ করে ভর্তা করতে হবে। সেই সাথে থানকুনি পাতার
কুচি, রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর তেল
দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করলেই প্রস্তুত।
থানকুনি পাতা ভাজি
এখন আমরা থানকুনি পাতার ভাজি কি করে খাওয়া যায় সে পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
থানকুনি পাতা যে কোন ভাবেই খাওয়া যায়। যারা থানকুনি পাতার রস করে খেতে পারেনা
তারা চাইলে থানকুনি পাতার ভাজি করে খেতে পারে। এতে করে খেতে সুস্বাদু লাগে।
চলুন তাহলে দেখি থানকুনি পাতার ভাজি প্রস্তুত প্রণালী।
উপকরণঃ চার ভাগের তিন ভাগ বা 100 গ্রামের মত থানকুনি পাতা নিতে হবে। সেই সাথে একটা করে পেঁয়াজ, রসুন, দুই তিনটা কাঁচামরিচ কুচি, লবণ এবং পরিমাণ মতো তেল নিতে হবে।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে কুচি কুচি
করে কেটে নিতে হবে। এরপর একটা পাত্রে তেল দিয়ে গরম করে রসুন, পেঁয়াজ,
কাঁচামরিচ দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে। কিছুক্ষণ পরে কেটে রাখা থানকুনি পাতার
কুচি গুলো এবং লবণ দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে থাকতে হবে। এভাবে নাড়ার পাঁচ ছয়
মিনিট পরে নামিয়ে নিতে হবে। তাহলে এই থানকুনি পাতার ভাজি হয়ে গেল। ভাজির
স্বাদ বাড়ানোর জন্য এর সাথে চিংড়ি ও আলু যোগ করতে পারেন।
থানকুনি পাতার বড়া
এতক্ষণ আমরা থানকুনি পাতার ভর্তা ও ভাজি সম্পর্কে জানলাম। এখন থানকুনি পাতার
বড়া সম্পর্কে জানব। অন্যান্য বড়ার মতোই থানকুনি পাতার বড়া বানাতে হয়। এই
বড়া খেতে যেমন স্বাদ পাওয়া যায় তেমনি এর উপকারিতা ও অনেক। তাই চলুন দেখে আসি
থানকুনি পাতার বড়া বানানোর পদ্ধতি।
উপকরণঃ একটা আঁটির চার ভাগের তিন ভাগ বা প্রায় 100 গ্রাম থানকুনি
পাতা নিতে হবে। সেই সাথে দুইটা পেঁয়াজ কুচি, একটা রসুন কুচি, দুই তিনটা কাঁচা
মরিচ কুচি, এক চামচ হলুদ গুড়ো, এক চামচ মরিচের গুঁড়ো, ১০০ গ্রাম বেসন, স্বাদ
মতো লবণ এবং পরিমাণ মতো তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ থানকুনি পাতা প্রথমে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর থানকুনি পাতা কুচি কুচি করে কাটতে হবে। কুচি করা থানকুনি পাতা সাথে পেঁয়াজ, রসুন, হলুদের গুঁড়ো, বেসন এবং লবণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে মেখে নিতে হবে। একটা পাত্রে তেল দিয়ে ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে। এরপর পিয়াজু বা বড়ার মতো করে বানিয়ে গরম তেলে ভেজে নিয়ে পরিবেশন করলেই হয়ে গেল থানকুনি পাতার বড়া।
থানকুনি পাতার জুস
আমরা এতক্ষন থানকুনি পাতার ভর্তা, ভাজি ও বড়া সম্পর্কে জেনেছি। এখন দেখব কিভাবে থানকুনি পাতার জুস বানাতে হয়।
উপকরণঃ একটা আঁটির চার ভাগের ৩ ভাগ থানকুনি পাতা বা 100 গ্রাম
থানকুনি পাতা প্রয়োজন। সেই সাথে এক চা চামচ মধু।
থানকুনি পাতার জুস |
প্রস্তুত প্রণালীঃ থানকুনি পাতা প্রথমে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে কুচি করে কেটে নিতে হবে। এরপর শিল পাটা কিংবা ব্লেন্ডারের সাহায্যে ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। এবার একটা ছাকনি দিয়ে ভালোভাবে ছেঁকে রস বের করে নিতে হবে। এবার সেই রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়লেই তৈরি হয়ে গেল থানকুনি পাতার জুস। এই জুস খেতেও যেমন ভালো লাগবে তেমনি শরীরের অনেক উপকার করবে।
আরো পড়ুনঃ শসা গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ
এছাড়াও থানকুনি পাতা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। যেমন-
-
থানকুনি পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে খাওয়া যায়।
-
থানকুনি পাতা কে ছোট ছোট করে কেটে পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
- থানকুনি পাতা ভাতের সাথে মিশিয়ে ভর্তা বানিয়ে খাওয়া যায় ইত্যাদি।
শেষ কথাঃ থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮ পদ্ধতি
আজ আর নয়, থানকুনি পাতা খাওয়ার ৮ পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url