একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে
একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? যদি এই বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম। কারণ আমরা অনেকেই সর্দি কাশি সমস্যায় ভুগে থাকি কিন্তু একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? এ বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানি না। আজকের এই আর্টিকেলে একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে
- সর্দি কাশি হওয়ার কারণ কি
- সর্দি কাশি হওয়ার লক্ষণ
- একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে
- সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায়
- শেষ কথা
সর্দি কাশি হওয়ার কারণ কি?
আমাদের শরীরে কমন যে সকল সমস্যাগুলো দেখা যায় এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সর্দি কাশি। বিশেষ করে যখন ঋতু পরিবর্তন হয় তখন কমবেশি সকলকেই সর্দি কাশি লেগে থাকে। একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? এ বিষয়টি জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই সর্দি কাশি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো। তার আগে আমাদেরকে সর্দি-কাশি হওয়ার কারণ কি? এ বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সর্দি কাশি কি কি রোগের লক্ষণ
আমাদের শরীরে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় সাধারণত তখন একটুতেই সর্দি কাশি হয়ে থাকে তাই আমরা বলতে পারি যে সর্দি কাশি হওয়ার মূল কারণ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। অর্থাৎ শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে তাহলে এই রোগ গুলো হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদি আমরা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করি অথবা ভিটামিন জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় না রাখি তাহলে আমাদের এই সমস্যাগুলো বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়া সর্দি কাশি হওয়ার আরো কারণ রয়েছে যেমন কিছু ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার কারণে সর্দি কাশি হয়ে থাকে। যেমন মরণব্যাধি ভাইরাস করোনা আক্রান্ত হলে সাধারণত প্রথমে আমাদের সর্দি কাশি হয়ে থাকে এর পরে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই আমরা বলতে পারি যে সর্দি কাশি হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারণে বেশি সর্দি কাশি হয়ে থাকে।
সর্দি কাশি হওয়ার লক্ষণ
যদি কারো সর্দি কাশি হয়ে থাকে তাহলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাই। আমরা যদি এই লক্ষণগুলো ঠিকভাবে লক্ষ্য করতে পারি তাহলে খুব সহজেই আমরা এই সর্দি কাশি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারব। ইতিমধ্যেই সর্দি কাশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে এখন আপনাদের জানার সুবিধার্থে সর্দি কাশি হওয়ার লক্ষণ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
১। নাক বন্ধ হওয়া এবং নাক দিয়ে সর্দি বের হওয়া।
২। প্রচুর পরিমাণে গলা ব্যথা করা।
৩। খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া
৪। শরীরের জ্বর হওয়া
৫। মাথা ব্যথা হওয়া।
৬। অতিরিক্ত পরিমাণে হাঁচি থাকা।
৭। খুশখুসে কাশি অথবা বেশি থাকা
৮। মাংশ পেশীতে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
৯। মুখে স্বাদ নষ্ট হয়ে যাওয়া।
১০। নাক দিয়ে পানি পড়া এবং নাক ব্যথা করা।
একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে
যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম সাধারণত তাদের শরীরে একটুতেই সর্দি কাশি লেগে যায়। যার ফলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত জ্বর থাকে। সাধারণত এই সর্দি কাশি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া। এছাড়া অনেকের ক্ষেত্রেই ঠান্ডা লাগা জনিত সমস্যার কারণে ও সর্দি কাশি হয়ে থাকে। তবে একবার সর্দি কাশি হলে একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? এ বিষয়টি অনেকেই জানেনা। একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ কানের সমস্যা দূর করার উপায়
সর্দি-কাশি, জ্বর এক ধরনের ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগ। যা আমাদের দেহের ঊর্ধ্ব শ্বাসপথ বিশেষ করে নাকে আক্রমণ করে। যার ফলে আমাদের সর্দি কাশি বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া এ রোগ হলে আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয় এগুলোর মধ্যে গলার সমস্যা থেকে শুরু করে আরো বেশ কিছু সমস্যা। যদি আমাদের শরীরে ভাইরাস আক্রমণ করে তাহলে দুই থেকে তিন দিন পর আবার অনেকের ক্ষেত্রে এর আগেই এই রোগের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি প্রকাশ পেতে পারে।
এ রোগের উপসর্গগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের জানিয়েছে। যদি কারো ক্ষেত্রে সর্দি কাশি হয়ে থাকে তাহলে সে ব্যক্তি সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই সম্পন্ন সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে অনেকের ক্ষেত্রেই। যদি সর্দি কাশি হওয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে আরো অন্যান্য বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে তার নিউমোনিয়া অর্থাৎ ফুসফুস প্রদাহ হয়েছে।
সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায়
সর্দি কাশি এই সমস্যায় পড়েনি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণত আমাদের খুবই কমন একটি সমস্যা হল সর্দি কাশি। যদি আমাদের মধ্যে কেউ এই সমস্যায় ভুগে থাকে তাহলে তাকে সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১। পেঁয়াজ খেতে পারলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। প্রথমে আপনাকে পেঁয়াজ ভালোভাবে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে এরপরে ছোট বাটিতে করে ভিজিয়ে রাখতে হবে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা। এর সঙ্গে যদি কয়েক চামচ মধু মিশিয়ে দুইবার খেতে পারেন তাহলে আপনার সর্দি কাশি দূর হয়ে যাবে।
২। অতিরিক্ত পরিমাণে সর্দি কাশি হয়ে থাকে তাহলে গরম পানিতে সামান্য পরিমাণে মধু লেবুর রস এবং আদার রস মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেতে হবে। সাধারণত এটি আমাদের গলা থেকে অতিরিক্ত কফ দূর করতে সাহায্য করবে এবং গলা ব্যথা দূর করবে।
৩। তুলসির পাতা আমাদের কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। প্রথমে আপনাকে তুলসির পাতা গুলোকে ভালোভাবে পেটে নিতে হবে এরপরে এক চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে গরম করে তারপরে খেতে হবে। এটি সর্দি কাশি কমাতে কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে।
৪। আপনি যদি প্রতিদিন খালি পেটে দুই কোয়া করে রসুন খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হবে। বিশেষ করে রসুনের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা আমাদের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৫। আদা আমাদের সর্দি কাশি দূর করতে অনেক বেশি কার্যকরী একটি উপাদান। যদি আপনি প্রতিদিন কাঁচা আদা লবণ মাখিয়ে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার সর্দি কাশি কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। এছাড়া আদা বেটে চায়ের সাথে খেতে পারেন।
৬। যদি সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে চান এবং গলা ব্যথা দূর করতে চান তাহলে মসলা চা খেতে পারেন। মসলা চায়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মসলা যেমন দারচিনি, গোলমরিচ, লবঙ্গ এলাচ এবং তুলসী পাতা মিশিয়ে ভালোভাবে পানিতে এরপরে খেতে হবে।
একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকেঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে সর্দি কাশি হওয়ার কারণ কি? সর্দি কাশি হওয়ার লক্ষণ, একনাগাড়ে কতদিন সর্দি কাশি থাকে? সর্দি কাশি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু আমরা সকলেই কমবেশি এই সমস্যায় ভুবে থাকি তাই আমাদেরকে এই সমস্যার সমাধানের জন্য উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত।
আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুমানোর আগে মুখের যত্ন
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url