ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন এবং কি খাবেন না
ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না বিষয়টি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ ডায়াবেটিস রোগী কেমন থাকবে এটা নির্ভর করে অনেকটাই খাবারের উপর। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না জানা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আজকের এই আর্টিকেটে ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না সে সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
আপনারা ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না এ বিষয়ে যদি কোন ধারণা না রাখেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। তাহলে চলুন দেরি না করে ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন এবং কি খাবেন না
- ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন
- ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন না
- ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়
- নাস্তায় ডায়াবেটিস রোগীরা যে সকল খাবার খাবে
- শেষ কথা
ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন
ডায়াবেটিস রোগ উঠানামা করে খাবারের উপর নির্ভর করে। সাধারণত আপনি কোন খাবারগুলো খাবেন এবং কোন খাবারগুলো খাবেন না এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডাইবেটিস রোগীদের জন্য। কারণ বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোতে শর্করার মাত্রা অনেক বেশি থাকে। যদি এই খাবারগুলো খাওয়া যায়। তাহলে আমাদের শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির পেয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগী এবং রোগীরপরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? এই বিষয়ে জানা অত্যন্ত জরুরী। একজন মানুষ যদি তার স্বাস্থ্যের জন্য পরিমিত পরিমাণ খাবার খায় তাহলে সে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে পারে। ডায়াবেটিস এই শব্দটি আমাদের সাথে খুবই পরিচিত একটি শব্দ।
বেশকিছু রোগ রয়েছে যেই রোগগুলো হলে আমাদের কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে যেগুলো খাওয়া যাবেনা এবং খাওয়া গেলেও কিছু সামান্য পরিমাণে খেতে হবে। অর্থাৎ এই রোগে আক্রান্ত হলে আমাদেরকে সম্পূর্ণ ডায়েট মেনে চলতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? এই বিষয়টি বিস্তারিত জানার আগে আমরা প্রথমে কি খাওয়া যাবে সে বিষয়গুলো জেনে নেব।
১। ডায়াবেটিস রোগীকে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। এর থেকে বেশি খাওয়া যাবেনা আবার এর থেকে কম খাওয়া যাবেনা।
২। খাদ্য তালিকায় যেন শাকসবজি থাকে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ শাকসবজির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩। বিশেষ করে খাদ্য তালিকা আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে তিন ধরনের তাজা সবজি রাখতে হবে। বাসি সবজি রান্না করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমাদেরকে প্রতিদিন একটি সময় নির্ধারণ করতে হবে যে সময়ের মধ্যে খেতে হবে।
৫। আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে প্রতিদিন কম করে হলেও ২০ গ্রাম করে কাঁচা পেঁয়াজ খাবেন এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৬। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে তাজা ফল। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় তাজা ফল রাখার চেষ্টা করুন এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন না
ডায়াবেটিস যে কতটা মারাত্মক রোগ আমরা কম বেশি সকলেই এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। ডায়াবেটিস হলে রোগী মৃত্যুবরণ করতে পারে যদি পরিমাপের চাইতে বেশি বৃদ্ধি পায় অথবা ডায়াবেটিস কমে যায়। সাধারণত বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোতে অতিরিক্ত শর্করা থাকে যেটি খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তের চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পায় এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? বিষয়টি জেনে রাখা উচিত।
১। যখন আমাদের বাড়ির রান্না ভাল হয়ে থাকে সাধারণত আমরা পরিমাপের চাইতে বেশি খেয়ে নেই। কিন্তু এমনটা করা যাবে না অবশ্যই পরিমাপ মতো খেতে হবে।
২। যেসব খাবারের মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি সে খাবারগুলো কখনোই খাদ্য তালিকায় রাখা যাবে না। কারণ এই খাবারগুলো খেলে আমাদের রক্তের শ্রেণীর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
৩। অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য খাদ্য তালিকায় রাখা যাবে না। কারণ এই খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
৪। যদি আপনি যা অথবা কফি খেতে পছন্দ করেন তাহলে প্রতিদিন দুই কাপের বেশি চা অথবা কফি খাবেন না।
৫। আমরা অনেকেই খাবারের সাথে কাঁচা লবণ খেতে পছন্দ করি কিন্তু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে কাঁচা লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬। অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া খাওয়া থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
৭। যদি বাইরের খাবার খেতে পছন্দ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আজকে থেকেই বাইরের খাবার খাওয়া ত্যাগ করুন।
৮। অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত দুধ খাওয়া যাবে না। যদি দুধ খেতে হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ফ্যাট কমিয়ে তারপরে খেতে হবে।
৯। ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করতে পারে ভাত আলু কলা গাজর এই খাবারগুলো। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এই খাবারগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়
আপনারা যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকেন এবং কি খাবেন? কি খাবেন না এ বিষয়গুলো নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? বিষয়গুলো আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে উপরের নির্দেশনা মেনে চলুন। এখন আমরা ডায়াবেটিসের রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ শীতে শিশুর যত্ন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
১। ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে প্রথমে যে খাবারগুলো খেলে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পায় এই খাবারগুলো ত্যাগ করতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই এ খাবারগুলো সম্পর্কে উল্লেখ করেছি যেমন অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাদ্য অথবা চিনিযুক্ত খাদ্য খাওয়া যাবেনা।
২। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে। যদি আপনার দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ না থাকে তাহলে অনেক সময় ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেয়ে যেতে পারে। এছাড়া আরো বেশ কিছু রোগ রয়েছে যেগুলো হতে পারে তাই আপনাকে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সালাড। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিদিন একবাটি করে গাজর, শসা, লেটুস অথবা টমেটোর সালাদ খেতে হবে। বিশেষ করে প্রতিদিন দুপুরে অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই খাবারগুলো খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪। নিয়মিত হাঁটতে হবে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায় হল এটি। যদি আপনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে চান তাহলে। প্রতিদিন আপনাকে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি করতে হবে এতে করে আপনার দেহে ইনসুলিন এর মাত্রা কমে যাবে।
৫। ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা অনেকেই ফাস্টফুড খেতে পছন্দ করি কিন্তু এটি হচ্ছে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করার একটি উপাদান। যেহেতু আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করতে হয় এবং কিভাবে এখান থেকে মুক্তি পেতে হয় এই সম্পর্কে জানছি তাই ফাস্ট ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬। মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে। আমরা সাধারণত অতিরিক্ত মানসিক তাপের মধ্যে থাকি। যার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় এ কারণে ডায়াবেটিস হেরে যেতে পারে। আপনি যদি এই রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চান তাহলে মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন।
৭। যদি ধূমপান করার অভ্যাস থাকে এবং আপনার ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আজকে থেকে ধূমপান ত্যাগ করুন। ধূমপান হচ্ছে ডায়াবেটিসহ আরো ভয়ংকর কিছু রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
নাস্তায় ডায়াবেটিস রোগীরা যে সকল খাবার খাবে
যারা খেতে পছন্দ করে থাকে সাধারণত তাদের জন্য ডায়াবেটিস রোগ খুবই ভয়ঙ্কর। কারণ ডায়াবেটিস রোগ হয়ে গেলে আমাদের খাওয়ার উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়। যদি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায় তাহলে ডায়াবেটিস রোগের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীরা নাস্তা হিসেবে যে সকল খাবার খাবে সে খাবার গুলো সম্পর্কে জেনে নেব এখন। কারণ এদের মধ্যে আমরা ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে এসেছি।
১। আমরা অনেকেই সকালের নাস্তা হিসেবে সাদা পাউরুটি খেয়ে থাকি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই খাবারটি ত্যাগ করতে হবে। পাউরুটি এর বদলে অন্য কোন খাবার রয়েছে যার মধ্যে কোন চিনি থাকে না এই খাবারগুলো খেতে হবে।
২। ডায়াবেটিস রোগীরা সকালে নাস্তা হিসেবে অ্যাভোকাডো খেতে পারে। কি ফলটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটি ফল। যদি প্রতিদিন খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখবে।
৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিদিন সকালে আমাদেরকে ফাইবার জাতীয় খাবার যেমন ডালিয়া খেতে হবে। আপনি এই সবজিগুলো দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খেতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সকালের নাস্তা হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪। সকালে ডায়াবেটিস রোগীদের নাস্তার জন্য মিষ্টি জাতীয় ফল অথবা খাবার থেকে দূরে রাখতে হবে। যদি আপনি চিনি মুক্ত খাবার খেতে পারেন তাহলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি খাবেন, কি খাবেন নাঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ এই আর্টিকেলে ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন? ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন না? ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়, নাস্তায় ডায়াবেটিস রোগীরা যে সকল খাবার খাবে অর্থাৎ ডায়াবেটিস রোগীরা কী খাবেন, কী খাবেন না? এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কার্যকারীভাবে চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন
আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারণ আমরা আপনাদের জানার সুবিধার্থে এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url