দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় - ২০২৪ দাঁতের ফিলিং খরচ কত?
অনেকেই দাঁতকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে দাঁতে ফিলিং করে থাকে। তবে জানেন কি দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় কি? আমাদের মানব দেহের সকল কিছুই অত্যন্ত মূল্যবান। সৃষ্টিকর্তা তার অপরূপ সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের মানবদেহে সৃষ্টি করেছেন। দাঁত তার মধ্যে অন্যতম। মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দাঁত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে থাকে।
দাঁত দিয়ে আমরা আমাদের খাবার গ্রহণ করে থাকি। যার মাধ্যমে আমাদের মানব দেহ শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। তাই এই দাঁতের একটু সমস্যা দেখা দিলে আমাদের পুরো শরীর বলতে গেলে অচল হয়ে পড়ে। আমাদের নিজেদের উদাসীনতার কারণে আমাদের দাঁতের সমস্যা হয়ে থাকে।যার এক পর্যায়ে মাড়ি হতে দাঁতে আলাদা হয়ে পড়ে যায়।
নিয়মিত ব্রাশ না করা,এছাড়া নিয়মিত ডেন্টালের কাছে পরামর্শ না নেওয়া হতে পারে বড় ঝুঁকির কারণ। যার কারন আমরা আমাদের দাঁতের প্রতি তেমন যত্নশীল হই না কিন্তু এই উদাসীনতাই হতে পারে আমাদের শারীরিক সমস্যার কারণ কারণ দাঁতের সাথে চোখের সম্পর্ক রয়েছে এবং চোখের সাথে মাথার।
নিয়মিত দাঁতের চিকিৎসা না নিলে সমস্যা পরলে পরবর্তীতে ডাক্তারের কাছে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত দাতটি ডাক্তার যে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তার মধ্যে ফিলিং অন্যতম।
যার সাহায্য ক্ষত হওয়া দাঁতের চিকিৎসা করে দাতকে পূর্নরূপ দেওয়া হয়। তবে দাঁতের ফিলিং করার পর বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। চলুন বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা দাঁতের ফিলিং করার পর করনীয় কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
পেজ সূচিপত্রঃ দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় - ২০২৪ দাঁতের ফিলিং খরচ কত?
দাঁতের ফিলিং কি?
দাঁতের মধ্যে আস্তে আস্তে অযত্নের কারনে ক্ষয় হয়ে যখন ছোট গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সে গর্তে খাবার জমে যে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয় সেই ক্ষয় হওয়া স্থান ভরাট করে ব্যাকটেরিয়া আক্রমন না হতে দেওয়াকে দাঁতের ফিলিং বলে। এক কথায় যাকে বলা হয় দাঁতের গর্ত ভরাট করা। ডাক্তারদের ভাষায়,দাঁতের যে অংশটি আমরা দেখতে পাই, সেটি শরীরের সবচেয়ে শক্ত সাদা বর্ণের এনামেল নামক স্তর দিয়ে আবৃত। এনামেল স্তরের ক্ষয়কে ভরার করার যে প্রক্রিয়া তাকে দাঁতের ফিলিং বলে।
দাঁতের ফিলিং কত প্রকার
দাঁতের ফিলিং দুই প্রকার ।
১)স্থায়ী ফিলিং
২) অস্থায়ী ফিলিং
দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয়
দাত আমাদের অত্যন্ত মূল্যবান একটি সম্পদ। দাঁতের ফিলিং তাই করার পর সেই ফিলিং যেন দাঁত থেকে উঠে না যায় এবং দাঁতে ভালোভাবে বসে থাকে যার কারণে দাঁতের ক্ষয়প্রাপ্ত স্থান আরো ক্ষতি যেন না হয় সে ব্যাপারেও ভালোভাবে নজর রাখতে হবে।তাই দাঁত ফিলিং করার পর আমাদের কিছু নিয়ম কানুন খুব ভালোভাবে পালন করতে হবে।
এই নিয়মকানুন গুলো যথাযথভাবে পালন করলে দাঁতের পরবর্তীতে কোন সমস্যা দেখা যাবে না। তাই দাঁতের যে কোন ধরনের ফিলিং এর সমস্যা দূর করতে এই নিয়মগুলো যথাযথভাবে পালন করা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ফিলিং করার পর করনীয় কি
১)শক্ত খাবার পরিহারঃ
আমরা দৈনন্দিন নিত্য খাবারে অনেক রকমের খাবার গ্রহণ করে থাকি। যেগুলো বেশ শক্ত খাবার হয়ে থাকে। যেমনঃ আখরট, আখ, গাঁজঢ়।কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত দান ফিলিং করার পরে সেই স্থানটি কিছুটা অবশ হয়ে থাকে এবং ফিলিং টা যথাযথভাবে বসানোর পরও সে ফিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। যদি শক্ত খাবার আমরা গ্রহণ করে থাকি তাহলে সেই ফিলিং আস্তে আস্তে ক্ষয় হতে শুরু করবে। তাই দাঁতের ফিলিং ঠিক রাখতে শক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
২)চুইংগাম পরিহার করতে হবেঃ
চুইংগাম মূলত চিবিয়ে খেতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের দাঁত বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে ।দাঁতের ফিলিং করার পর আমরা যদি চুইংগাম চাবাই এবং চুইংগাম বেশি করে খাই সে ক্ষেত্রে আমাদের ফিলিং চুইংগাম এর সাথে লেগে উঠে যেতে পারে। কারণ চুইংগাম অনেকটাই আঠালো জাতীয় পদার্থ হয়ে থাকে দাতের ফিলিং সেটার সাথে মিশে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা টাই বেশি।
৩)অতিরিক্ত গরম পানি ও ঠান্ডা পানি পরিহার করতে হবেঃ
বলা হয়ে থাকে দাঁতের যত্নের জন্য হালকা লবণের সাথে গরম পানি মিশিয়ে কুলকুচি করলে দাত ভালো থাকে ।কিন্তু ফিলিং করার পর গরম পানি সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। এর কারণ হলো অতিরিক্ত গরম পানি দাঁতের ফিলিং ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি দাঁতের শিনশিন এর কারণ। সে ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি খেলে আমাদের ফিলিং আলগা হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৪)তরল খাবার পরিহারঃ
তরল বা পানি জাতীয় খাবার আমাদের মুখের কোনায় কোনায় খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তরল খাবার দাতের গোড়া দিয়ে প্রবেশ করে দাঁতের মধ্যে জমে যেতে পারে ।দুই দাঁতের মাঝখানে জমে গিয়ে এটি দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে দাঁতে। সে ক্ষেত্রে ফিলিং এর পর তরল জাতীয় খাবার খেলে সেটি দাঁতের গোড়ায় গিয়ে নতুন করে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করলে ফিলিং নষ্ট হয়ে যাবে।
কিভাবে দাঁতের ফিলিং করা হয় ? দাঁতের ফিলিং এর খরচ ২০২৪
দাঁতের ফিলিং করতে খরচ
দাঁতের ফিলিং এর কোন স্থায়ী খরচ নেই। তবে আপনার দাঁতের অবস্থা এবং আপনার দাঁতে স্থায়ী ফিলিং করবেন কিনা বা অস্থায়ী ফিলিং করবেন সেটা ডাক্তার নির্ধারণ করে দিবে এবং অস্থায়ী এর ক্ষেত্রে স্থায়ী তুলনায় কিছুটা কম খরচ পড়বে স্থায়ী ফিলিং করতে গেলে মূলত তিন থেকে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। পাশাপাশি কিছু ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ গ্রহনে আলাদা কিছু খরচ হবে।
দাঁতের ফিলিং করলে অপকারিতা
১)দাঁতে ফিলিং করার পর দাঁতে অনেকেই ব্যথা অনুভব করেন। সে ক্ষেত্রে যেই ডেন্টাল লিস্টের কাছ থেকে আপনি আপনার দাঁত ফিলিং করিয়েছেন তার পরামর্শ গ্রহণ করে ব্যথা নাশক ওষুধ গ্রহণ করুন।
২)সব ধরনের গরম জাতীয় খাবার যেমনঃ চা, দুধ ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে শরীরে প্রোটিনের ঘটতি হতে পারে।
৩) আইসক্রিম খেতে পারবেন না সেক্ষেত্রে ফিলিং নষ্ট হতে পারে।
৪) মুখের যে পাশে ফিলিং করেছেন তার বিপরীত পাশ দিয়ে কিছুদিন খাবার গ্রহন করতে হবে।
৫) ঔষুধ নিয়মিত গ্রহন বা ডেন্টাল কেয়ারে নিয়মিত চেকআপ না করলে দাঁতের ফিলিং বা দাঁত ঠিক না হয়ে আরোও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষেঃ দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় - 2024 দাঁতের ফিলিং খরচ কত?
আশা করি আপনাদেরকে দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় কি তা জানাতে পেরেছি। দাঁতের একটি স্থায়ী ফিলিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে সিলভার রঙের একটি আস্তরণ দাঁতের উপর বসিয়ে দেওয়া। যা মূলত পারদ সেক্ষেত্রে দাঁত ফিলিং করার পর এই পারদ অতি বেশি মাত্রায় আমাদের শরীরে ঢুকলে বিপদ অনিবার্য। কারণ পারদ আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর এটি আমাদের মস্তিষ্ক,হাট ফুসফুসের ক্ষতি করেই থাকে।
পাশাপাশি কমিয়ে দেয় আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তবে অনেক সময়ই আমাদের দাঁতের বেশ কয়েকবার করতে হয় ফিলিং করতে হয় দাঁত যদি অতিমাত্রায় ক্ষয় হয়ে থাকে।
সেক্ষেত্রে দুইবার করলে সমস্যা নেই। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেছে আট বারের বেশি ফিলিং করলে যে পরিমাণ পারদ আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে থাকে সেই পরিমাণ পারদ আমাদের রক্তের সাথে মিশে গিয়ে আমাদের শরীরের সমস্যা এবং রোগের পরিমাণ দেড়শ শতাংশ বৃদ্ধি করে দেয়।
তাই নিয়মিত ব্রাশ এবং প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ডেন্টাল কেয়ারে গিয়ে নিজের দাঁত চেকআপ করিয়ে দাঁতের প্রতি আরো যত্নশীল হওয়াই শ্রেয়। ধন্যবাদ।
দাঁতের ফিলিং সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
দাঁতের ফিলিং করার পর করনীয় কি?
শক্ত খাবার পরিহার করুন, চুইংগাম পরিহার করুন, তরল খাবার পরিহার করুন।
দাঁতের ফিলিং করতে খরচ কেমন?
একেকজনের দাঁতের উপর নির্ভর করে খরচ বাড়তে এবং কমতে পারে। সঠিক খরচ জানতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। তবে সাধারণত তিন থেকে ছয় হাজারের বেশি খরচ হয় না।
দাঁতের ফিলিং কয় ধরনের হয়ে থাকে?
দাঁতের ফিলিং দুই ধরনের হয়ে থাকে। স্থায়ী ফিলিং এবং অস্থায়ী ফিলিং।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url