কার্যকারীভাবে চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন
গরমের সময় ত্বকের অন্যতম প্রধান সমস্যা হল চুলকানি। মূলত এলার্জির সমস্যা ও ত্বক শুষ্ক থাকার ফলে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আবার কিছু কিছু সময়ে ঘামের কারণে দেখা দেয়। রেসের কারণেও চুলকানি হতে পারে।
তবে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ রয়েছে। শুধু আপনাদের চুলকানি দূর করার সহজ উপায় গুলো জেনে রাখতে হবে। তাহলে চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন।
শরীরে লালচে ভাব চুলকানি এলার্জি প্রচুর জ্বালাপোড়ার মতো বিভিন্ন সমস্যার কারণে কম-বেশি চুলকানি হয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে এই বিরক্তিকর চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চুলকানি একটি খুবই বিরক্তিকর সমস্যা।
যদি চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনি জেনে নিন কি কি কারনে চুলকানি হয় এবং কি কি উপায় অবলম্বন করে চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলে চুলকানির বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করব, আশা করছি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন । চলুন কথা না বাড়িয়ে চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন
চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন
চুলকানি দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার
শরীরে চুলকানি কমাতে নিম পাতার রস অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। চুলকানি কমাতে নিম পাতার রস ব্যবহার করা যেতে পারে এটি আপনি বাটা অথবা ব্লেন্ডারে রস করে চুলকানির জায়গায় লাগাতে পারেন। এতে খুবই ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চুলকানি কমাতে এলোভেরা জেলের ব্যবহার
যতগুলো চুলকানি দূর করার উপায় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সহজ কার্যকরী অ্যালোভেরা জেল । আমরা জানি অ্যালোভেরা জেল ঔষধের কাজ করে। বিভিন্ন সমস্যায় আমরা এলোভেরা জেল ব্যবহার করে থাকি । ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় এলোভেরা জেল খুব ভালো কাজ করে।
শরীরে চুলকানি এবং এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। আপনার যে জায়গায় চুলকানি রয়েছে সেই জায়গায় এলোভেরা জেল বের করে 20 থেকে 25 মিনিটের জন্য প্রয়োগ করুন।
এরপর এটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার জ্বালাপোড়া এবং চুলকানির সমস্যা কমে যাবে। অ্যালোভেরা জেল চুলের জন্যেও অনেক কার্যকরী একটি ঔষধ।
চুলকানি কমাতে বেকিং সোডার ব্যাবহার
চুলকানি দূর করতে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। বেকিং সোডা শরীরে চুলকানিতে কমাতে খুবই চমৎকার ভাবে কাজ করে থাকে। শরীরে কোথাও চুলকানি হলে তা নির্মূলে আপনি বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন।
পানির সাথে পরিমাণ মতো এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে তারপর আপনার চুলকানির জায়গায় মিশ্রণটি লাগান।
বেকিং সোডা মিশ্রণটি আপনি চাইলে পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। এতেও ভালো কাজ হবে আশা করা যায়। আর চুলকানি কমাতে বেকিং সোডা মিশ্রণটি পানিতে মিশিয়ে ত্রিশ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন তারপর পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
সহজ উপায়ে আপনার চুলকানি কমাতে এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি উপায়। আশা করছি বেকিং সোডার সঠিক ব্যবহারে আপনার চুলকানি অনেকটাই কমে যাবে।
টি ট্রির ব্যাবহার
যে জায়গায় চুলকানি হচ্ছে সেই জায়গায় লাগাতে পারেন। টি ট্রি ব্যবহারের সময় নারকেল তেলের সঙ্গে দুই ফোঁটা তেপরি অয়েল মিশিয়ে নিন। তারপর সেটি আপনার চুলকানির জায়গায় লাগান। তৃতীয় আলীর মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। আপনার ত্বকের প্রধান কমাতে সাহায্য করবে।
চুলকানি কমাতে নারকেল তেলের ব্যবহার
শুষ্কতকে অনেক সময় চুলকানির সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তক শুষ্কতার সমস্যা কমাতে আপনি নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন গোসলের পর আপনি শরীরে নারকেল তেল মেখে নিন এতে করে ত্বকের বিভিন্ন প্রদাহ কমে যাবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। শরীরের ত্বকে ময়শ্চারাইজ করত নারকেল তেল খুবই কার্যকর।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান
চুলকানি চিকিৎসা শুধুমাত্র যে বাইরের ত্বক ত্বকেই সব সময় হবে এমনটা নয়। চুলকানি শুধুমাত্র বাহ্যিক কারণেই হয় তা নয়। আপনার শরীরের ভেতরের দিকেও কিছু চিকিৎসা রয়েছে যা চুলকানি কমাতে ব্যবহার করতে হবে।
আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে যা আপনার ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করবে। ময়েশ্চারাইজ তকে চুলকানির প্রবণতা কম থাকে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা এর সহজ সমাধান।
রসুনের ব্যাবহার
রসুন নানারকম ঔষুধি গুন ধারণ করে। এটি শুধুমাত্র যে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় তেমনটা নয়। রসুনে অনেক প্রাকৃতিক গুণ রয়েছে। এন্টিফাঙ্গাল বা ফাঙ্গাস প্রতিরোধক উপাদান রসুনে থাকায় চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
এসব উপাদান চুলকানি প্রতিরোধে খুব দ্রুত কাজ করতে পারে। আপনাকে প্রথমে কয়েকটি রসুন নিয়ে চুলকানি সারানোর জন্য চুলকানি যুক্ত স্থানে ভালোমতো কেটে পেস্ট করে লাগিয়ে নিন।
খানিক সময়ে রাখার পর সেই স্থানটি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে খুব সহজে চুলকানির বিরুদ্ধে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতাকে আমরা সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ানোর উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এর পাশাপাশি এটি চুলকানির দূর করতেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চুলকানি দূর করার জন্য পুদিনা পাতা অল্প কিছু সংখ্যক নিয়ে সাথে লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করতে হবে।
এরপর এটিকে চুলকানি যুক্ত স্থানে লাগিয়ে রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর মধ্যেই ভালো ফলাফল লক্ষ্য করতে পারবেন। এভাবে পুদিনা পাতার ব্যবহারে চুলকানি সহজেই দূর করা সম্ভব।
হলুদের ব্যাবহার
প্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় উপকারী উপাদান হিসেবে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলকানি দূর করতেও হলুদ বেশ একটি কার্যকরী উপাদান। চুলকানি দূর করতে কয়েকটি হলুদ নিয়ে সেগুলোকে বেটে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর সেই হলুদ বাটা আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যদি কাঁচা ও টাটকা হলুদ ব্যবহার করা সম্ভব হয় তাহলে খুব ভালো কাজ দিবে। এভাবে হলুদ প্রভোগের মাধ্যমে আপনি আপনার চুলকানি দূর করতে পারবেন।
চুলকানি দূর করার জন্য কিছু বাড়তি সতর্কতা
১. বিভিন্ন জায়গায় মানুষের চুলকানি হয়ে থাকে। যে জায়গায় চুলকানি হয়েছে সেই জায়গায় ঠান্ডা কিছু ব্যবহার করুন। যেমন ঠান্ডা পানি দিয়ে সে জায়গায় ধুয়ে ফেলতে পারেন অথবা বরফের টুকরো ব্যবহার করতে পারেন।
২. গোসলের সময় প্রত্যেকদিন স্ক্রাবার দিয়ে নিয়মিত স্ক্রাব করুন। এতে করে আপনার এলার্জি ও জ্বালা ভাব সে সাথে চুলকানি দূর হবে আশা করা যায়।
৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করুন। চেষ্টা করবেন নিয়মিত দোয়া কাপড় পরিধান করা। এতে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চুলকানি সংক্রমণ হওয়ার হাত থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।
৪. ত্বকের শুষ্কতা থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মর্যাদার ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকে চুলকানির সমস্যা বেশি দেখা যায়।
৫. নিয়মিত গোসল করুন এবং শরীরের যত্নে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। নোংরা বাজিক যেকোনো ধরনের জীবাণু শরীরের যাতে বাসা বাঁধতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৬. গরমে ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা হয়। তাই গরমে ঘামযুক্ত কাপড় বেশিক্ষণ পরিধান না করে থাকা অভ্যাস করতে হবে। সেই সাথে গরম থেকে বেঁচে থাকার জন্য চেষ্টা করতে হবে।
চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন সম্পর্কে চলুন দেখে নেই কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
১.চুলকানিতে মলম লাগানো কি উচিত?
এটা জেনে রাখা ভালো যে চুলকানিতে মলম বা ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা এতে ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার সর্বোত্তম।
২.ঘরোয়া পদ্ধতিতে কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে?
চুলকানি দূর করার জন্য যে সমস্ত ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো ব্যবহারের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। এটি ব্যবহার অত্যন্ত নিরাপদ।
৩. চুলকানিতে আঁচড় কাটলে ক্ষতি হয় কিনা?
চুলকানি এমন একটি সমস্যা যা হলে আঁচড় কাটার ইচ্ছা জাগে এবং এতে ভালো লাগে। কিন্তু এতে সংক্রমনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এছাড়া ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব চুলকানি হলে আঁচল না কাটাই উত্তম।
শেষকথাঃ চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন
যেকোনো একটি জায়গায় শরীরে চুলকানি হওয়া ধরে নেওয়া যায় স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু চুলকানি ও মাত্রাতিরিক্ত চুলকানি শরীরে বিভিন্ন স্থানে মোটেও স্বাভাবিক নয়। চুলকানি একটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর অনুভূতি। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা বিভিন্ন কারণ নিয়ে আলোচনা করলাম যেগুলো চুলকানির জন্য দায়ী।
আশা করছি আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা চুলকানি দূর করার সহজ উপায় গুলো জেনে নিতে পেরেছেন। সাবধানতা অবলম্বন করলে চুলকানি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। ধন্যবাদ শেষ পর্যন্ত চুলকানি দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url