মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম - ওমরা পালনের নিয়ম ও দোয়াসুমহ

ইসলামী শরীয়তে নারী এবং পুরুষ উভয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম জারি করা হয়েছে। মহিলাদের নামাজের নিয়ম যেমন আলাদা ঠিক তেমনি মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম গুলোও আলাদা। আমরা যেমন নামাজ আদায়ের আগে সঠিক নিয়মে অজু করে নামাজের জন্য প্রস্তুত, একইভাবে আমাদের হজ বা ওমরা নিয়ম ও দোয়া সমূহ মুখস্ত করে আমাদের প্রস্তুত হওয়া উচিত। 

মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম

আমরা আমাদের পূর্ববর্তী আর্টিকেল গুলোতে হজ্জ কেন করতে হয় এই সম্পর্কে পুরো বিস্তারিত একটি তথ্য প্রদান করেছি। আজ আপনারা জানবেন মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম এবং ওমরা করার জন্য আপনাদের যে ওমরা পালনের নিয়ম ও দোয়া গুলো জানা দরকার তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আসুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

সূচিপত্রঃ মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম - ওমরা পালনের নিয়ম ও দোয়াসুমহ

ওমরা কি?

হজ কি? তা আমরা আগেও জেনেছি হজ এবং ওমর এর মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য হচ্ছে;  হজ শুধুমাত্র জিলহজ মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন হয় এবং ওমরা বছরের যে কোন সময় পালন করা যায়। হজ করার নিয়ম এবং ওমরা করার নিয়ম প্রায় একই। বরঞ্চ হজের তুলনায় ওমরা পালনের নিয়ম কম। মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম ঠিক হজ্জের নিয়মের মধ্যেই পরে।  

হজ্জ যেমন সকলের জন্য ফরজ নয় শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের জন্য ফরজ ঠিক তেমনি যে সকল ব্যক্তির উপরে হজ্জ ফরজ সে সকল ব্যক্তির উপরে ওমরা করা নকল। ওমরা হচ্ছে নফল ইবাদত, যেমন আপনি নফল নামাজ যে কোন সময় পড়তে পারেন। ঠিক একইভাবে আপনি বছরের যে কোন দিনে শুধুমাত্র হজের দিন ব্যতীত  ওমরা পালন করতে পারেন। 

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা হাজ্জ সমাপনের পর ওমরা এবং ওমরাহর পর হাজ্জ করবে, কেননা তা অভাব- অনটন ও পাপকে দূর করে দেয়, যেমন হাপর লোহার মরিচা দূর করে থাকে। [নাসাঈ /২৬৩২-আ, ই, দীনার (রঃ), ইবন মাজাহ /২৮৮৭

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং ঊনিশটি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। আর হিজরাতের পর তিনি কেবল একবার হাজ্জ পালন করেন এবং তা হলো বিদায় হাজ্জ। এরপর তিনি আর কোনো হাজ্জ্ব পালন করেননি। আবূ ইসহাক বলেনঃ মাক্কায় অবস্থানকালীন তিনি ওমরা আদায় করেন। [ বুখারী/ ৪০৪৮- যা, ই, আরকাম (রাঃ)]

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিজ্ঞেস করা হলো; হজ্জ কি প্রতি বছর, না মাত্র একবার? তিনি বলেনঃ একবার মাত্র। অতঃপর এর অধিক করার কারো সামর্থ্য থাকলে তা নফল বা ওমরা। [ইবন মাজাহ/২৮৮৬- ইবন আব্বাস (রাঃ)]

ওমরার জন্য জরুরী কাজ / ওমরা পালনের নিয়ম

ওমরা পালনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার প্রয়োজন হয় ইসলামে এই কাজগুলোকে দুভাগ ভাগ করেছে। এই কাজগুলো না করলে আপনার ওমরা কোনভাবে পালন হবে না। তাই আপনাকে অবশ্যই ওমরা পালনের জন্য এই নির্দিষ্ট কাজগুলো করতে হবে। 

ওমরা পালনের নিয়ম মোতাবেক ওমরার আচার গুলো কে সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করা অবশ্য। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ওমরা পালনের সে নির্দিষ্ট জরুরী কাজ গুলো-  

ওমরার ফরজ কি?

আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে স্টিমারে ওমরার জন্য জেদ্দা বন্দর থেকে ৩০ মাইল দক্ষিণে 'ইয়ালমলম' পাহাড়ের সোজা পৌঁছান তখন আপনাকে ইহরাম বাঁধতে হবে। আর যারা বিমানে যাবেন তাঁরা ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বেঁধে নেবেন। 

হজ্জে বা ওমরার আগে মদিনা শরীফ যাওয়ার চিন্তা থাকলে মক্কা শরীফ আসার সময় মদিনা মুনাওয়ারা থেকে ৬ মাইল দূরবর্তী 'জুল হোলায়ফা'নামক স্থানে ইহরাম বাঁধতে হবে। মনে রাখবেন, যে কোন উদ্দেশ্যেই হোক, বিনা ইহরামে মক্কা শরীফ যাওয়া জায়েয নয় । এটা আল্লাহ্র ঘরের তাজীম।

ইহরাম

ইহরাম বাধার আগে ভাল করে ক্ষৌরকর্ম করে নিন। তারপর সম্ভব হলে গোসল অথবা শুধু ওজু করে নিন। সেলাই আছে এরূপ সব পরিধেয় কাপড় ছেড়ে দিয়ে ৫ হাত লম্বা দু'খানা সাদা পাক কাপড় নিন এবং একখান পরতে হবে, অপরখানা শরীরে জড়িয়ে নিন (মহিলাদের ক্ষেত্রে বরখা পড়তে হবে)। এরপর ইহরামের দু'রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়ে নিন। নামাজ শেষে আপনি যে হজ্জ বা ওমরা করবেন তার নিয়ত করুন।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ

  • সেলাইযুক্ত যে কোন কাপড় ব্যবহার 
  • মস্তক ও মুখমণ্ডল ঢাকা
  • পায়ের পিঠ ঢেকে যায় এমন জুতা পরা
  • চুল কাটা, ছেঁড়া
  • নখ কাটা
  • ঘ্রাণযুক্ত তেল বা আতর লাগানো
  • স্ত্রী সংগম করা
  • যৌন উত্তেজনামূলক কোন আচরণ বা কোন কথা
  • শিকার করা
  • ঝগড়া-বিবাদ বা যুদ্ধ করা
  • চুল-দাড়িতে চিরুনী বা অঙ্গুলী চালনা করা যাতে ছিঁড়ার আশংকা থাকে,
  • শরীরে সাবান লাগানো
  • উকুন, ছারপোকা ও মশা-মাছি মারা
  • কোন গোনাহের কাজ করা ইত্যাদি

তাওয়াফ 

ওমরা পালনের নিয়ম এ সর্বপ্রথম কাজই হলো তাওয়াফ করা নিজের জিনিস পত্র গুছিয়ে রেখে পাক-পবিত্র হয়ে মোটেই দেরী না করে বাইতুল্লাহ শরীফে হাজিরা দিন। সারা জীবনের প্রত্যাশিত আল্লাহ রাব্বুল আলা'মীনের পবিত্র কাবা দর্শন করা মাত্র পড়ুন- 

اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ الله أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ - اللهُم زِدْ بَيْتَكَ هَذَا تَشْرِيْفًا وَتَكْرِيْمًا وتَعْظِيمًا وَمُهَابَةٌ وَزِدْ مَنْ حَبَّهُ أَوْاعْتَمَرَ تَشْرِيفًا وَتَكْرِيمًا وَتَعْظِيْمًا وَبِرًا أَللَّهُمْ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السّلامُ فَحَيْنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ

“আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়া-লিল্লাহিল হামদু। আল্লাহুম্মা বিদ বাইতাকা হাজা তাশরিফান ওয়া তা'জীমান ওয়া- তাকরমান ওয়া-মুহাবাতান ওয়া-ঝিদ মান হাজজাহু আবে'তামারা তাশরীফান ওয়া-তা জীমান অবিরান আল্লাহুম্মা আন্তাস্ সালামু অ-মিনকাস্ সালামু, ফা হাইয়েনা রাব্বানা বিস্সালামি।”

তাওয়াফের ওয়াজিবসমূহ

  • শরীর পাক-সাফ রাখা, অজু করা। হায়েজ ও নেফাছ অবস্থায় তাওয়াফ করা জায়েজ নেই।
  • সতর ঢাকা।
  • হাতীমের বাইরে থেকে তাওয়াফ করা।
  • পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করা। 
  • অক্ষম ব্যক্তি খাটিয়ায় করে তাওয়াফ করতে পারেন।
  • হাজারে আসওয়াদ থেকে শুরু করে ডান দিক থেকে তাওয়াফ শুরু করা। 
  • তখন কাবা শরীফ তাওয়াফকারীর বাম দিকে থাকবে।
  • এক নাগাড়ে সাতবার চক্কর দিয়ে তাওয়াফ পূর্ণ করা।
  • সাত চক্করে এক তাওয়াফ। 
  • এটা পূর্ণ হলেই মাঝাম ইব্রাহীমের পিছনে গিয়ে দু'রাকায়াত ওয়াজিবৃত্তাওয়াম নামাজ পড়া।

তাওয়াফের সুন্নত

  • তাওয়াফের শুরুতে হাজারে আসওয়াদের দিকে মুখ করা
  • হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করা। 
  • যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে তাতে এখাতের
  • করা অর্থাৎ ইহরামের চাদরের দুই মাথা ডান বগলের নিচ দিয়ে বাম কাঁধের উপর ফেলে দেওয়া ।
  • উপরে বর্ণিত তাওয়াফের তিন চক্করে 'রমল করা' অর্থাৎ বীরের মত হেলে-দুলে জোর কদমে চলা ।
  • বাকী চার চক্কর সাধারণ গতিতে সম্পন্ন করা।
  • তাওয়াফ শুরু করার পূর্বক্ষণে হাজারে আসওয়াদ-এর সোজাসুজি খাড়া হয়ে তাকবীর তাহরীমার ন্যায় উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠান।
  • প্রত্যেক চক্কর শেষ করে হাজারে আসওয়াদকে চুম্বন করা।

তাওয়াফের নিয়ত

اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ طَوَافَ بَيْتِكَ الْحَرَامِ فَيَسِّرْهُ لي وَتَقَبَّلُهُ مِنّي سَبْعَةَ أَشْوَاطٍ لِلَّهِ تَعَالَى عَزّ   وجل     َ 

"আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারামি ফাইয়াসিরহুলী ওয়া তাকাব্‌বালহু মিন্নি সাআতা আশওয়াতিন লিল্লাহি তায়ালা আযযা ওয়া জাল্লা।"

নিয়ত করে হাজারে আসওয়াদের সামনে আসুন এবং সুযোগ পেলে তাকে চুম্বন করুন। কিন্তু বেশী ভীড় অথবা মহিলাদের শরীরে ঘেঁষাঘেঁষি হতে পারে মনে করলে দূরে দাঁড়িয়েই কান পর্যন্ত দুহাত উঁচু করে বলুনঃ

بسم اللهِ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ

"বিস্ মিল্লাহি আল্লাহু আকবার, ওয়া-লিল্লাহিল হামদু।" এবার দুই হাতে চুমু খেয়ে হাত নামিয়ে তাওয়াফ করুন।

ওমরার ওয়াজিব কি? 

  • সাফা মারওয়ায় দৌড়ানো
  • মাথা কামানো 

ওমরা পালনের নিয়ত

ওমরা পালনের নিয়ত ভালো করে মুখস্ত করে নিতে হবে। কেননা কোন নেক কাজের জন্য নিয়ত করা গুরুত্বপূর্ণ- 

 فَيَسِّرْهُ لِي وَتَقَبَّلْهَامِنّى

"আল্লা হুম্মা ঈন্নি উরিদুল ওমরা ফায়াসিরহা লী ওয়া তাকাব্‌বালহা মিন্নি।"

মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম

মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম সম্পর্কে আলী ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমরা হাজ্জের উদ্দেশে (মাদীনা থেকে) বের হলাম। 'সাফির নামক স্থানে পৌঁছার পর আমার হায়েয (মাসিক) হলো। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং বললেনঃ কি হলো তোমার? তোমার হায়েয এসেছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এ তো আল্লাহ্ তাআলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন । সুতরাং তুমি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হাজ্জের বাকি সব করে যাও। [ বুখারী/২৯০]

উম্মুল মু'মিনীন আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আপনাদের সাথে যুদ্ধ ও জিহাদে অংশগ্রহণ করবনা ? তিনি বললেনঃ তোমাদের জন্য উত্তম ও সুন্দর জিহাদ হলো মাকবুল হাজ্জ। আয়িশা (রাঃ) বললেন; রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথা শুনার পর আর কখনো হাজ্জ ছাড়বনা বলে আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম। [বুখারী/১৭৩৪]

কোনো মুসলিম মহিলার জন্য সাথে তার কোনো মাহরিম (যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ) পুরুষ ব্যতীত এক রাতের পথও সফর করা বৈধ নয়। [মুসলিম/৩১৩২ -আবূ হুরাইরা (রাঃ)]

সাথে মাহরিম পুরুষ না থাকা অবস্থায় কোনো পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে একান্তে সাক্ষাত না করে। কোনো মহিলা যেন সাথে কোনো মাহরিম পুরুষ ছাড়া একাকী সফর না করে । এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার স্ত্রী হাজ্জের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছে এবং আমাকে অমুক সৈন্যবাহিনীতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যা অমুক স্থানে যুদ্ধে যাবে। তিনি বললেন; তুমি চলে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সাথে হাজ্জ কর । [(মুসলিম/৩১৩৮- ইবন আব্বাস (রাঃ)]

মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম

  • হায়েয (মাসিক) অবস্থায় মহিলাদের বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা যাবে না। 
  • বিবাহিত মহিলাদের তার অনুমতি নিয়ে ওমরা পালন করতে হবে।  
  • মহিলাদের অবশ্যই সাথে একজন মাহারিম পুরুষ সাথে থাকা প্রয়োজন। 
  • ইহরামে মহিলাদের মুখ ঢাকার সময় মুখে কাপড় লাগান দুরুস্ত নাই। আজকাল এই কাজের জন্য একপ্রকার জালিদার পাখা পাওয়া যায়,তা চেহারার উপর বাধে নিবেন। চোখ বরাবর জালি থাকবে,তার উপর বোরকা পরবেন এটি দুরুস্ত আছে।
  • যদি কারও কোন পাওনা-দেনা থাকে তা পরিশোধ করবেন।  
  • যাদের সাথে কাজ কারেন তাদের নিকট হতে মাফ চায়ে নিবেন।
  • যদি কাজা নামায, রোযা, যাকাত, কোরবানী, ফেরা, মান্নত, কাফ্ফারা ইত্যাদি কোনকিছু যিম্মায় বাকী থাকে তা ওমরা পালনের আগে আদায় করে নিবেন। 
  • হজ্জের খরচ হালাল মালের দ্বারা সংগ্রহ করবেন। কেননা, হারাম মালের দ্বারা কোন ইবাদত কবুল হয় না।

ওমরা পালনের দোয়াসুমহ

পবিত্র মক্কা শহরে প্রবেশ করে নিম্নোক্ত দোয়া পড়বেন-

          اللهم اجْعَل إِنْ بِهَا قَرَارًا وَارْزُقْنِي بِهَا حَلالاً اللهم البلد بلدك والْبَيْتُ بَيْتُك جنت اطلب رحمتك
"আল্লাহুম্মাজ আল-লী বিহা কারারান অরঝুকনী বিহা ওয়া হালালান আল্লাহুম্মা আল বালাদু বালাদুকা ওয়াল- বাইতু বাইতুকা, জিতু-আঙ্গুর রাহমাতাকা।"

তাওয়াফের জন্য সহজ দোয়া

سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلا باللهِ الْعَلِيُّ الْعَظِيم وَالصَّلوةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ 

"সুবহানাল্লাহি ওয়াল্হামদুলিল্লাহি ওয়া-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহ আকবার ওয়া-লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আ'লীয়্যিল আজীমি, ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা।" 

মুলতাযিনের দোয়া

اللهم يا رَبِّ الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ اعْتِقَ رِقَابَنَا وَرِقَابَ آبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا وَاخْوَانِنَا وَأَوْلَادِنَا مِنَ النَّارِ. يَاذَ
الْجُوْدِ وَالْكَرَمِ وَالْفَضْلِ وَالْمَنْ وَالْعَطَاءِ وَالْإِحْسَاناَللُّهُمْ أَحْسِنْ عَاقِبَتَنَا فِي الْأُمُورِ كُلْهَا وَأَجِرْنَا مِنْ خِزْيِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْآخِرَةِ. اَللَّهُمَّ اِنّى عَبْدُكَ وَابْنُ عَبْدِكَ وَاقِفُ تَحْتَ بَابِكَ مُلْتَزِمُ بِأَعْتَابِكَ مُتَذَلِّلُ بَيْنَ يَدَيْكَ أَرْجُو رَحْمَتَكَ وَأَخْشَى عَذَابَكَ مِنَ النَّارِ يَا قَدِيمَ الإِحْسَانِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَلْكَ أَنْ تَرْفَعَ ذِكْرِي وَتَضَعَ وِزْرِى وَتُصْلِحَ أَمْرِئ وَتُطَهِّرَ قَلْبِي وَ تُنَوْ رَ قَبْرِى تَغْفِرَ إِن ذَنْبِي وَأَسْنَلُكَ الدَّرَجَاتِ الْعُلَى مِنْ الْجَنَّةِ امِينَ.

"আল্লাহুম্মা ইয়া রাব্বাল বাইতিল আতিকি আতিক রিকাবানা ওয়া-রিকাবা আবায়িনা ওয়া-উম্মাহাতিনা ওয়া-ইখওয়ানিনা ওয়া-আওলাদিনা মিনান্নার। ইয়া জালভূদি ওয়াল কারামি ওয়াল-ফাদলি ওয়াল মানি ওয়াল-আ'তায়ি ওয়াল-ইহসান। আল্লাহুম্মা আহসিন আ’কিবাতানা ফিল উমূরি কুল্লিহা ওয়া-আজিরনা মিন খিয়িদ দুইয়া ওয়া-আজাবিল আখিরাহ। 

আল্লাহুমা ইন্নি আব্দুকা ওয়া-বনু আবদিকা ওয়াকেফুন তাহতা বাবিকা মুলতাজিমুন বিআতাবিকা মুতাজাল্লিলুন বাইনা ইয়াদাইকা আরজু রাহমাতাকা ওয়া-আখশা আজাবাকা মিনান্নারি ইয়া কাদীমাল ইহসান। আল্লাহুমা ইন্নি আসআলুকা আন্ তারফাউ জিকরী ওয়া-তাদা বিক্রয়া ওয়া-তু'সলিহা আমরী ওয়া- তুতাহহিরা ক্বালবী ওয়া-তুনাওবিরালী ক্বাবরী ওয়া- তাগফিরলী জাম্বী ওয়া-আয়ালুকাদ্দারাজাতিল উলা মিনাল জান্নাতি আমিন।"

মাকামে ইব্রাহীমের দোয়া

اَللُّهُمْ إِنَّكَ تَعْلَمُ سِرِّي وَعَلَانِيَتِي فَاقْبِل. مَعْذِرَتِي وَتَعْلَمُ حَاجَتِيْ فَأَعْطِنِي سُوَلِيْ وَتَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي فَاغْفِرْلِي ذُنُوبِي اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْنَلُكَ إِيْمَانًا يُبَاشِرُ قَلْبِي وَيَقِيْنًا صَادِقًا حَتَّى أَعْلَمَ أَنَّهُ لاَ يُصِيْبُنِي إِلا مَا كَتَبْتَ لِي وَرِضَاءٌ مِّنْكَ بِمَا قَسْمْتَ لِى اَنْتَ وَلِيُّ في الدُّنْيَا وَالْآخِرَةَ تَوَفَّنِي مُسْلِمًا وَالْحِقْنِي بِالصَّالِحِيْنَ اللَّهُمْ لَاتَدَعْ لَنَافي مَقَامِنَا هَذَا ذَنْبًا إِلا غَفَرْتَهُ وَلَا هَما إلا فَرِّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً إِلا قَضَيْتَهَا وَيَسِّرتَهَا فَيَسِّرْ أمُورَنَا وَاشْرَحْ صُدُورَنَا وَنَوّر قُلُوبَنَا وَاخْتِمْ بالصَّالِحَاتِ أَعْمَالَنَا اللُّهُمْ تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ وَالْحِقْنَا بِالصَّالِحِيْنَ غَيْرَ خَزَايَا وَلَا مَفْتُونِيْنَ امين يَارَبِّ الْعَالَمِينَ وَصَلَّى اللهُ عَلَى حَبِيْبِهِ سَيْدِنَا مُحَمَّدٍ وَالِه وَأَصْحَابه أَجْمَعِينَ

"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা তা'লামুসেররী ওয়া-আলানিয়াতি ফাসক্কবিল মায়াজিরাতি ওয়া-তা'লামু হাজাতী ফাআতিনী সুয়লী ওয়া তা'লামু মাফী নাফসী ফাগফিরলী যুনুবী। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ঈমানান ইউবাশিরু ক্বালবী ওয়া-ইয়াক্কীনান সাদিকান হাত্তা আ'লামা আন্নাহু লাইউসিবুনি ইল্লা মাকাতাতা লী ওয়া-রিদাআমিনকা বিমা কাসসামৃতা লী আন্তা ওয়ালিয়্যি ফিদ্দুনইয়া ওয়াল-আখিরাতি তাওয়াফ্ফানী মুসলিমান ওয়ালহিনী বিস্সালিহীন। 

আল্লাহুম্মা লা তাদা, লানা ফি মাকামিনা হাজা জাম্‌বান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফারাজতাহু ওয়ালা হাজাতান ইল্লা কাদাইতাহা ওয়া-ইয়াসিরতাহা ফাইয়াসির উরানা ওয়াশরাহ্ ছুদূরানা ওয়া-নাওবের কুলূবানা ওয়াখতিম বিস্সালিহাতি আ'মালীনা। আল্লাহুম্মা তাওয়াফ্ফানা মুলিমীনা ওয়া আল হিকনা বিস্সালিহীন গায়রা খাজায়া ওয়ালা মাফ্‌তুনিন । আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন ওয়া সাল্লাল্লাহু আ'লা হাবিবিহী সাইয়িদিনা মুহাম্মাদিন ওয়া-আলিহী ওয়া- আসহাবিহী আজমাঈন।" 

জমজমের দোয়া

اللهم إنّي اَسْتَلْكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا وَاسِعَا وَشِفَاءٌ مِّنْ كُلِّ دَاءٍ 

"আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়া- রিযক্কান ওয়া-সিয়ান ওয়া-শিফায়ান মিন কুল্লি দায়িন।"

এরপর সাফা মারওয়ার মাঝে সাতবার সায়ী (দৌড়ান) করতে হবে। দৌড়ানো অবস্থায় নীচের দোয়া পড়বেন।

সাঈ করার দোয়া

।।سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ اللهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَاقُوَّةَ إِلا بِاللهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيم।। 

"সুবহানাল্লাহি ওয়াল্হামদু লিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়া-লাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম।" 

লেখকের মন্তব্যঃ মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম - ওমরা পালনের নিয়ম ও দোয়াসুমহ

পরিশেষে হাদিসের আলোয় এক ওমরার পর আর এক ওমরা উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (পাপের) কাফ্ফারা স্বরূপ। আর একমাত্র জান্নাতই কবুল হাজ্জের পুরস্কার [বুখারী/ ১৬৫১-আবূ হুরাইরা (রাঃ), মুসলিম/ ৩১৫৫, তিরমিযী / ৯৩৫, নাসাঈ / ২৬৩১]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ রামজান এলে তখন ওমরাহ করে নিও। কেননা রামজান মাসের একটি ওমরাহ একটি হাজ্জের সমতুল্য। [বুখারী/ ১৬৬০- ইবন আব্বাস (রাঃ), মুসলিম/২৯০৪, ইবন মাজাহ / ২৯৯৪] 

আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চারবার ওমরা করেছেন। আশা করি আপনারা মহিলাদের ওমরা পালনের নিয়ম গুলো খুব ভালোভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন। ওমরা পালনের নিয়ম ও দোয়াসুমহ গুলো আপনার ডাইরীতে নোট করে রাখা উচিত। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url