হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি - কত টাকা থাকলে হজ ফরজ হয় জানুন
নামহীন
২৫ সেপ, ২০২৩
হজ্জ ইসলামের ৫ম তম রোকন। যে ব্যক্তিদের নিকট আবশ্যকীয় খরচ বাদে মক্কা শরীফে যাতায়াতের মোটামুটি খরচ পরিমান টাকা/অর্থ থাকে, তাদের উপর হজ্জ ফরজ। আপনাদের অনেকেই হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি তা জানেন না। আসলে অর্থ থাকলেই যে হজ্জ ফরজ হয় তা কিন্তু নয়।
আপনার হজ্জ ফরজ হওয়ার জন্য ইসলামে কিছু শর্ত প্রনয়ন করা হয়েছে। আপনি যদি হজ্জ করতে চান তবে আপনাকে হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি এবং কি করলে আপনার হজ্জ কবুল হবে তা সম্পর্কে ধারনা রাখা দরকার। আমরা আজ আপনাদেরকে হজ্জ কেন করতে হয়, হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি এবং কত টাকা থাকলে হজ ফরজ হয় তা সম্পর্কে সকল তথ্য দিবো।
হজ্জ কি?
হজ্জ অর্থ সংকল্প, ইসলামে হজ্জ অতি বড় একটি ইবাদত যা অর্থশালীদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। হাদিসে হজ্জের অনেক ফজিলত বর্ননা করা হয়েছে। রসুল (সাঃ) বলেছেনঃ "যে হজ্জ গোনাহ এবং অন্যান্য খারাবী হতে পবিত্র হবে, তাহার পুরষ্কার জান্নত ব্যতিত অন্য কিছু নয়।"
ওমরার জন্যও বড় সওয়াবের ওয়াদা করা হয়েছে। হাদিস শরীফে আছে-" হজ্জ এবং ওমরা উভয়ই গুনাহসমুহকে এমনভাবে দূর করে ফেলে ,যেমন আগুন লোহার মরিচাকে দূর করে দেয়।"
যাদের উপর হজ্জ ফরজ হয় সে যদি হজ্জ না করে, তবে তাদের জন্য ভীষন আযাবের সংবাদ দেওয়া হয়েছে। হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি তা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ" যাদের নিকট মক্কা শরীফে যাতায়তের সমার্থ বা সম্বল থাকা সত্তেও হজ্জ না করবে সে ইহুদি বা কাফের হয়ে মারা যাক, আল্লাহর সঙ্গে সেই ব্যক্তির কোন সম্পর্ক নেয়।"
“হজ্জ হয় সুবিদিত মাসসমূহে। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ্জ করা স্থির করে তার জন্য হজ্জের সময়ে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ কলহ-বিবাদ বিধেয় নয়। তোমরা উত্তম কাজ যা কিছু কর আল্লাহ্ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়র ব্যবস্থা করো, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! তোমরা আমাকে ভয় কর”। [সূরা বাকারা-১৯৭]
"এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইবরাহীম। আর যে কেহ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে ঐ গৃহের হজ্জ করা তার অবশ্য কর্তব্য এবং কেহ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।'' [সূরা আলে ইমরান-১৭]
হজ্জ কেন করতে হয় কারন "নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা তো বাক্কায়, এটি বারাকাতময় ও বিশ্বজগতের দিশারী।" [সূরা আলে ইমরান-৯৬]
হজ্জ কাদের উপর ফরজ ?
হজ্জ কাদের উপর ফরজ সে সম্পর্কে হাদিসের শরিফে নবী করিম (সাঃ) বলেন-
(আবদুল্লাহ) ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করীম (সাঃ)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কোন বস্তু হজ্জকে ফরজ করে? তিনি উত্তরে বললেনঃ (নিজের ও পরিবারের) "খাওয়া খরচ এবং (মক্কা পর্যন্ত) নিজের সফর খরচ।" (তিরমিযী)
তিরমিযীর অপর বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন; "যার সামর্থ আছে এবং আল্লাহর ঘরে পৌঁছার যানবাহন আছে, তবুও সে হজ্জ করে না; সে ইহুদী বা খৃষ্টানরূপে মারা যায়।"
আবেস ইবনে রাবীয়া (রাঃ) বলেন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি (হযরত উমর) হজরে আসওয়াদের কাছে এসে তাকে চুমু দিয়ে বললেন, আমি জানি তুমি একটি পাথর বৈ কিছু নও। তুমি কারো ক্ষতি করতে পার না, আবার উপকারও করতে পার না। আমি যদি নবী করীম (সাঃ)-কে তোমাকে চুমু দিতে না দেখতাম তাহলে তোমাকে চুমু দিতাম না। (বুখারী)
[যেহেতু রাসূল (সাঃ) এ পাথরে চুমু দিয়েছেন, তাই কারো ধারনা হতে পারে এ পাথরের কোন বৈশিষ্ট্য বা ক্ষমতা আছে। আর এরূপ ধারনা বা বিশ্বাস শিরক। উমর (রাঃ) শিরকের এ পথ চিরতরে রুদ্ধ করে দিয়েছেন।]
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি ?
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি তা আপনার যদি না জানা থাকে তাহলে আপনার হজ্জ কবুল হবে না। আপনার হজ্জ ফরজ হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে আপনাকে মুসলমান হতে হবে। তাছারা আরো কিছু হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত আছে যা নিচে দেওয়া হলো-
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত
মুসলমান হলে তাদের জন্য হজ্জ ফরজ।
বিবেকবান হলে তার জন্য হজ্জ ফরজ।
বালেগ বা নামাজ যার জন্য ফরজ তার জন্য হজ্জ ফরজ।
ঋণমুক্ত স্বাধীন ব্যক্তির জন্য হজ্জ ফরজ।
হজ্জের মাসে হজ্জ পালন করা ফরজ।
কোন ব্যক্তির হজ্জের জন্য সফরের খরচের সমার্থ থাকলে তার জন্য হজ্জ ফরজ।
হজ্জ ওয়াজিব হওয়ার শর্ত
হজ্জে যাওয়ার জন্য কোন প্রকার বাধা না থাকে হজ্জ ওয়াজিব হয়।
শারিরীক ভাবে সুস্থ থাকলে হজ্জ ওয়াজিব হয়।
হজ্জে যাওয়ার পথ নিরাপদ হলে ওয়াজিব হয়।
নারীরা তাদের মাসিক অবস্থায় না থাকলে ওয়াজিব হয়।
নারীদের হ্মেত্রে হজ্জে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের সাথে কোন মাহরাম প্রুষ অবিভাবগ বা স্বামী থাকলে ওয়াজিব হয়।
হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ?
হজ্জের ফরজ কয়টি তা জানা থাকলে আপনি হজ্জ করতে কোন প্রকার ভুল না করে আপনার হজ্জ পালন করতে পারবেন। হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি তা নিচেই আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
১। ইহরাম
ওমরাহ বা হজ করার জন্য মুসলমানদের একটি পবিত্র অবস্থায় প্রবেশ করতে হয়, পরিষ্কার এবং সাধারণ পোশাক পরিধান করে। এই পর্যায়ে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যা সফল ভ্রমণের জন্য প্রতিটি হজ্জযাত্রীকে মেনে চলতে হবে।
২। সাঈ
দুটি ছোট পাহাড় সাফা এবং মারওয়া, সৌদি আরবের মক্কার গভীর মসজিদে অবস্থিত। হজ্জে সাঈ দুটি পাহাড়ের মধ্যে সাতটি পবিত্র প্রদক্ষিণ করে করা হয়। সেখানে হাজীরা আল্লাহর কাছে দোয়া ও রহমত প্রার্থনা করেন। এছাড়াও, এটি প্রতিদিনের জীবনে একজনের মুখোমুখি হওয়া সংগ্রামকে চিত্রিত করে, এটিকে অতিক্রম করার জন্য আল্লাহর কাছ থেকে প্রেরণা এবং সাহস প্রার্থনা করে।
৩। ওয়াকফত ‘আরাফাহ
আরাফাহ পর্বতে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় যিলহজ্জের ৯ম দিন দুপুর থেকে এবং চলবে ১০ম দিনের ভোর পর্যন্ত। বলা হয় যে এই পর্যায়ে যে কোনো স্থানে দাঁড়ানোই যথেষ্ট।
৪। তাওয়াফ আল-ইফাদাহ
এই পর্যায়টি শুরু হয় আরাফাতে দাঁড়ানোর পর থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত। এটি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে কাবার চারপাশে সাতবার প্রদক্ষিণ করার ক্রিয়া। ক্ষমা এবং সুখী জীবনের জন্য কেউ কালো পাথরের দিকে স্পর্শ, চুম্বন বা হাত বাড়াতে চেষ্টা করতে পারে।
হজ্জ করার পদ্ধতি কি জানেন ? আসলে হজ্জের কতিপয় কিছু নিয়ম মেনে হজ্জ করতে হয়-
১। ইহরাম অবস্থায় কারো যদি কোনো অঙ্গ ভেঙ্গে যায় বা সে খোড়া হয়ে যায় তাহলে সে হালাল (অর্থাৎ ইহরাম খুলে ফেলতে হয়) হয়ে যাবে এবং তাকে আরেকবার হাজ্জ আদায় করতে হবে। [তিরিমিযী / ৯৪২- ইকরামা (রাঃ)]
২। যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর হাজ্জ করে তার শেষ আমল যেন বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হয়। তবে ঋতুবতী মহিলা হলে ভিন্ন কথা। কারণ তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে আসার অনুমতি দিয়েছেন। [তিরমিযী / ৯৪৬ ইবন উমার (রাঃ)]
৩। শেষবারের মতো বাইতুল্লাহ তাওয়াফ না করা পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিকে প্রস্থান করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। [ইবন মাজাহ/৩০৭০, ৩০৭১- ইবন উমার (রাঃ)]
হজ্জ পালন করার ফজিলত
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি তার সাথে হাদিস শরীফে হজ্জ পালন করার অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে তা নিচে দেওয়া হলো-
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সর্বোত্তম আমল হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। অতঃপর আল্লাহর পথে জিহাদ করা। তারপর হলো হাজ্জ-ই-মাবরুর (মাকবুল হাজ্জ)। (বুখারী/১৪২৪-আবৃ হুরাইরা (রাঃ)]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন; "তোমাদের জান এবং তোমাদের মাল তোমাদের জন্য তোমাদের রবের সঙ্গে সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত এমন সম্মানিত যেমন সম্মান রয়েছে তোমাদের এ দিনের (কুরবানীর দিন), তোমাদের এ মাসের (যিলহাজ্জ মাস) এবং তোমাদের এ শহরের (মাদীনা শহর)।"
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের লক্ষ্য করে বললেনঃ "শোনো! আমি কি পৌঁছিয়েছি তোমাদের কাছে ? লোকেরা বললেন, হ্যাঁ (ইয়া রাসূলাল্লাহ)। তারপর তিনি বললেনঃ প্রত্যেক উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে (আমার দাওয়াত) পৌঁছে দেয়। কেননা কোনো কোনো শ্রোতা প্রথম শ্রবণকারী থেকে কখনো কখনো অধিক সংরক্ষণকারী হয়ে থাকে। তোমরা আমার পরে কাফিরের মত হয়োনা যে একে অন্যকে হত্যা করতে থাকবে। [বুখারী/১৬২৫-আবু বাকরা (রাঃ)|
"যে ব্যক্তি এ ঘরের হাজ্ব আদায় করল, অশ্লীলতায় লিপ্ত হলোনা এবং আল্লাহর নাফরমানী করলনা, সে মাতৃগর্ভ থেকে সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো হয়ে (হাদ থেকে) প্রত্যাবর্তন করবে।"[( বুখারী/১৬৯৬, ১৪২৬ আৰু হুরাইরা (রাঃ), নাসাঈ /২৬২৯/]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "তোমরা হাদ সমাপনের পর উমরা এবং উমরাহর পর হাজ্জ করবে, কেননা তা অভাব- অনটন ও পাপকে দূর করে দেয়, যেমন হাপর লোহার মরিচা দূর করে থাকে।" [নাসাঈ /২৬৩২-আ, ই, দীনার (রঃ), ইবন মাজাহ /২৮৮৭)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং উনিশটি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। আর হিজরাতের পর তিনি কেবল একবার হাজ্জ্ব পালন করেন এবং তা হলো বিদায় হজ্জ। এরপর তিনি আর কোনো হাজ্জ্ব পালন করেননি। আৰু ইসহাক বলেনঃ মাক্কায় অবস্থানকালীন তিনি (নফল) হাজ্জ আদায় করেন। [ বুখারী/ ৪০৪৮- যা, ই, আরকাম (রাঃ)]
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিজ্ঞেস করা হলো হজ্জ কি প্রতি বছর, না মাত্র একবার? তিনি বলেন একবার মাত্র। অতঃপর এর অধিক করার কারো সামর্থ্য থাকলে তা নফল। [ইবন মাজাহ / ২৮৮৬- ইবন আব্বাস (রাঃ)
ওমরা করলে কি হজ্জ ফরজ হয় ?
হজ সাধারন তিন প্রকার যার মধ্যে ওমরাহ পরে না। হজ্জের আচার-অনুষ্ঠান শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর আদর্শ অনুসরণ করার জন্য নয়, বরং নবী ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর পুত্র ইসমাইল (আঃ)-এর জীবন থেকে ঘটনাগুলোকে পুনরুদ্ধার করার জন্যও বিশ্বাস করা হয়। হজ্জযাত্রীরা তিনটি হজ পদ্ধতির যে কোনো একটি বেছে নিতে পারেন যা তাদের পক্ষে বেশি সম্ভব। নিচে তনটি হজ্জ সংহ্মেপে বর্ণ্না করা হলো-
১। হজ্জ আল-তামাত্তু
হজ্জ যাত্রার সবচেয়ে সাধারণ ধরন এটি। হজ্জের সময়ে ওমরাহ অনুষ্ঠান সম্পাদন করে এবং তারপর আল-হিজ্জার ৮ তম এবং ১৩ তম দিনের মধ্যে হজের পদক্ষেপগুলো সম্পন্ন করে। হজ্জ আল-তামাত্তু করতে ইচ্ছুক হজযাত্রীদের অবশ্যই হজের সাথে ওমরাহ আচারগুলোকে একত্রিত করতে হবে।
হজের এই রূপটি সম্পূর্ণ করার জন্য একটি পশু কোরবানি করা আবশ্যক। যে হাজী এই ধরনের হজ করেন তাকে মুতামাত্তি বলা হয়।
২। হজ আল ইফরাদ
কোন পশু হাদী বা কুরবানী না করে একাকী হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা। যে হাজী এই ধরনের হজ করেন তাকে মুফরিদ বলা হয়।
৩। হজ আল কিরান
ইহরাম অবস্থায় হজ ও ওমরাহ উভয়ই করা। এই আচার সম্পন্ন করার জন্য একটি পশু কুরবানী দিতে হবে। যে হাজী এই ধরনের হজ করেন তাকে ক্বারিন বলা হয়।
ওমরাহর ফরজ চারটি-
১। ইহরাম
ওমরাহ বা হজ করার জন্য মুসলমানদের একটি পবিত্র অবস্থায় প্রবেশ করতে হয়, পরিষ্কার এবং সাধারণ পোশাক পরিধান করে। এই পর্যায়ে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যা সফল ভ্রমণের জন্য প্রতিটি হজ্জযাত্রীকে মেনে চলতে হবে।
২। তাওয়াফ
এই ধাপে হজ্জযাত্রীরা কাবাকে (আল্লাহর ঘর) সাতবার প্রদক্ষিণ করতে হবে। এটি আল্লাহর ইবাদতের প্রতি বিশ্বাসীদের মধ্যে ঐক্যের একটি প্রদর্শন হিসাবে পরিচিত, কারণ তারা কাবার চারপাশে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তাওইয়াফ করে। এটি ওমরাহ এবং হজ্জের যাত্রায় সম্পাদিত প্রধান আচারগুলোর মধ্যে একটি।
৩। সাঈ
দুটি ছোট পাহাড় সাফা এবং মারওয়া, সৌদি আরবের মক্কার গভীর মসজিদে অবস্থিত। হজ্জে সাঈ দুটি পাহাড়ের মধ্যে সাতটি পবিত্র প্রদক্ষিণ করে করা হয়। সেখানে হাজীরা আল্লাহর কাছে দোয়া ও রহমত প্রার্থনা করেন। এছাড়াও, এটি প্রতিদিনের জীবনে একজনের মুখোমুখি হওয়া সংগ্রামকে চিত্রিত করে, এটিকে অতিক্রম করার জন্য আল্লাহর কাছ থেকে প্রেরণা এবং সাহস প্রার্থনা করে।
ওমরার যাত্রা শেষ হওয়ার পর, হজযাত্রীদেরকে হজ ও ওমরাহর আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য কিছু কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয়। পুরুষদের তাদের মাথা ন্যাড়া করতে হবে এবং মহিলাদেরকে তাদের চুল কয়েক ইঞ্চি ছোট করতে হবে।
এই কাজগুলোর উপর মুসলমানরা এই হজ্জযাত্রার সমস্ত নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পায়। অনুষ্ঠানটি সঠিকভাবে সম্পাদন করার জন্য, একজনকে হাল্ক এবং তাকসীরের নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে যা পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা।
লেখকের মন্তব্যঃ হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি - কত টাকা থাকলে হজ ফরজ হয় জানুন ?
মনে রাখবেন সারা জীবনে মাত্র একবার হজ্জ করা ফরজ। একবারের বেশী হচ্ছ করলে তা নফল হবে এবং অনেক বেশী সওয়ার হবে। হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত হচ্ছে নাবালেগ অবস্থায় যদি কেহ হজ্জ করে, তবে তা নফল হবে। বালেগ হওয়ার পর সম্বল হলে হজ্জ পুনরায় করতে হবে। অন্ধের উপর হজ্জ ফরয না, সে যত ধনই থাকুক না কেন।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত হচ্ছে যখন কাহারও উপর হজ্জ ফরয হয় সঙ্গে সঙ্গে সেই বছরই হজ্জ করা ওয়াজিব। বিনা ওযরে দেরী করা, এরূপ খেয়াল করা যে, এখনও অনেক সময় আছে, অন্য কোন বছর হজ্জ করব তা ঠিক না। অবশ্য তার ২/৪ বছর পরও যদি হজ্জ করে, তবে আদায় হয়ে যাবে,কিন্তু গোনাহগার হবে।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি তা নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর । FAQs
ওমরাহর ফরজ কি কি?
ওমরাহর ফরজ চারটি রয়েছে- ইহরাম, তাওয়াফ, সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ এবং তাহল্লুল।
ওমরাহ কিভাবে হজ্জ থেকে আলাদা?
ওমরাহ হল মক্কায় একটি ধর্মীয় যাত্রা। এটি হজের আনুষ্ঠানিকতার সময় ব্যতীত মাস বা বছরের যে কোনও সময় করা যেতে পারে।
হজ কিভাবে শুরু হয়?
হজ শুরু হয় উমরার মতোই - ইহরাম ধরে, তাওয়াফ করা, দুই রাকাত বলা, জমজমের পানি পান করা এবং সায়ী করা।
ইহরামের অবস্থা কি?
ইহরাম হচ্ছে একটি পবিত্র অবস্থা যাতে হজ ও ওমরাহ করার আগে প্রবেশ করতে হয়।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url