দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী - কিভাবে লিখবেন দরখাস্ত বা আবেদনপত্র
দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী আজকের বিশ্বের দরখাস্ত বা আবেদন পত্র বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। আইনি প্রক্রিয়া থেকে কলেজে ভর্তি এবং অনলাইন চাকরির আবেদন করার প্রধান মাধ্যমটি হচ্ছে দরখাস্ত। তাই দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী সম্পর্কে আমাদের খুব ভালোভাবে একটি ধারণা থাকা প্রয়োজন।
অনলাইনে চাকরি করেন বা কলেজে ভর্তি হতে যান না কেন আপনার যদি সম্পূর্ণ সঠিকভাবে একটি দরখাস্ত আপনি না লিখতে পারেন বা আবেদন পত্র না লিখতে পারেন তাহলে কিন্তু সেটি কখনোই মঞ্জুর হবে না এজন্য দরখাস্ত বা আবেদন পত্র সঠিকভাবে লেখা অর্থাৎ দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী সম্পর্কে আপনাকে জানতেই হবে। আজকের এই পুরো পোস্টে আমরা আপনাকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেবো কিভাবে একটি সঠিক দরখাস্ত লিখবেন। মনোযোগ সহকারে আজকের এই পুরো পোস্টটি পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী - কিভাবে লিখবেন দরখাস্ত বা আবেদনপত্র
- একটি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র কি?
- দরখাস্ত বা আবেদনপত্রের ধরন
- ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী ও নমুনা
- দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী ও নমুনা ছবিসহ
- ইংরেজিতে চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী
- একটি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র লেখার নিয়ম গুলো দেখুন
- দরখাস্ত বা আবেদনপত্র কিভাবে লিখবেন। দেখুন দরখাস্ত লেখার নিয়ম
- একটি দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লেখার সময় যে ভুলগুলো কখনোই করবেন না
একটি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র কি?
একটি দরখাস্ত বা আবেদন পত্র হলো একটি লিখিত অনুরোধ বা প্রস্তাব যা একজন ব্যক্তি কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার কাছে তাদের অনুমোদন বা প্রতিক্রিয়া পাবার জন্য জমা দিয়ে থাকে। দরখাস্ত কারো সাথে যোগাযোগ করার একটি আনুষ্ঠানিক উপায় এবং এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন বা নির্দেশনা মেনে নিতে হয়। দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী জানতে আরো পড়ুন।
আরো পড়ুনঃ ওহম সূত্র কাকে বলে - ওহমের সূত্র ব্যাখ্যা করার সহজ উপায়
দরখাস্ত বা আবেদন পত্র সাধারণত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে যেমন আইনি প্রক্রিয়া, কলেজে ভর্তি এবং চাকরির আবেদন। একটি দরখাস্ত বা আবেদন পত্রের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রাপককে কিছু তথ্য প্রেরণ করার মাধ্যমে সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে রাজি করা।
দরখাস্ত বা আবেদনপত্রের ধরন
দরখাস্ত বা আবেদনপত্র বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, প্রতিটির নিজস্ব নির্দেশিকা এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এখানে কিছু সাধারণ প্রকার তুলে ধরা হলঃ
আইনি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র
আইনি দরখাস্ত হলো একটি আদালত বা সরকারি সংস্থার কাছে দাখিলকৃত আনুষ্ঠানিক ডকুমেন্ট। এই দরখাস্তের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ার শুরু করা যায় এবং আদালতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা বা আদালতের আদেশ অনুরোধ করতে ব্যবহৃত হয়।
আইনি দরখাস্ত গুলো সাধারণত আইনজীবীদের দ্বারা প্রস্তুত করা হয় এবং একটি কঠোর বিন্যাস এবং নিয়মের মাধ্যমে এই আইনি দরখাস্তটি প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। আর এই জন্যই অবশ্যই আপনাকে দরখাস্ত লিখার নিয়মাবলী জানতে হবে।
কলেজ ভর্তি আবেদন
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তির আবেদনপত্র ব্যবহার করে। তারা সাধারণত ব্যক্তিগত তথ্য, একাডেমিক তথ্য এবং প্রবন্ধ বা ব্যক্তিগত বিবৃতি অন্তর্ভুক্ত করে। কলেজে ভর্তির আবেদনগুলি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিন্যাস এবং কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা প্রদত্ত নির্দেশিকাগুলির নিয়ম অনুসরণ করে লেখতে হয়।
চাকরির আবেদনপত্র
চাকরির আবেদনপত্র চাকরি প্রার্থীরা চাকরির পদের জন্য আবেদন করতে ব্যবহার করেন। তারা সাধারণত ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত তথ্য, কাজের অভিজ্ঞতা এবং রেফারেন্স অন্তর্ভুক্ত করে। চাকরির আবেদনপত্র সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিন্যাস এবং এবং নিয়োগকর্তাদের প্রদত্ত সকল তথ্য নির্দেশকাগুলি মেনে লিখতে হয় দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী জানতে পুরো পোস্টটি পরুন।
একটি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র লেখার নিয়ম গুলো দেখুন
একটি দরখাস্ত বা আবেদনপত্র লেখার জন্য আপনাকে কিছু নিয়মকানুন মেনে লিখতে হবে। এর মধ্যে কিছু নিয়মকানুন সংক্ষেপে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলোঃ
পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত হতে হবে
দরখাস্ত বা আবেদন পত্র একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য সেট করে সেটাকে স্পষ্ট সুন্দর এবং সংক্ষিপ্ত আকারে লেখা উচিত। জটিল এবং প্রযুক্তিগত শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন যা প্রাপকের দ্বারা বোঝা কষ্টসাধ্য হয় এ ধরনের শব্দ আপনার দরখাস্ত বা আবেদনপত্র কখনোই ইমপ্লিমেন্ট করবেন না।
আরো পড়ুনঃ তরঙ্গ কাকে বলে? শব্দ তরঙ্গ কাকে? তরঙ্গ কত প্রকার ও কি কি
সঠিক বিন্যাস ব্যবহার করুন
দরখাস্ত বা আবেদনপত্রের সঠিক বিন্যাস এবং প্রদত্ত নির্দেশিকা অনুসরণ করা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে শিরোনাম, উপশিরোনাম এবং সঠিক ব্যবধান এবং মার্জিনের ব্যবহার।
সঠিক এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করুন
দরখাস্ত বা আবেদনপত্রে সঠিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া উচিত এবং কি উদ্দেশ্যকে লক্ষ্য করে দরখাস্তটি লিখছেন তা উল্লেখ করতে ভুলবেন না। যে কারণে আপনি দরখাস্তটি দিচ্ছেন তার বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সেখানে যোগ করুন।
প্রাপককে যথাযথভাবে সম্বোধন করুন
যদি সম্ভব হয় সঠিক শিরোনাম এবং নাম ব্যবহার করে আবেদনপত্র বা আবেদনপত্রের প্রাপককে যথাযথভাবে ঠিকানা দিন। এটি সম্মান এবং পেশাদারিত্ব দেখায়।
ভদ্র এবং পেশাদার হন
দরখাস্ত বা আবেদনপত্র জুড়ে একটি নম্র এবং পেশাদার সুর বজায় রাখুন। আক্রমনাত্মক বা দাবিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন যা অসম্মানজনক হিসাবে দেখা যেতে পারে।
সঠিক ব্যাকরণ এবং বানান ব্যবহার করুন
নিশ্চিত করুন যে দরখাস্ত বা আবেদনপত্রটি ব্যাকরণ এবং বানান ত্রুটিমুক্ত হয়। খারাপভাবে লিখিত তথ্যগুলি দরখাস্ত বা আবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং কার্যকারিতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
ভালভাবে পর্যালোচনা করুন
দরখাস্ত বা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে, সমস্ত তথ্য নির্ভুল, প্রাসঙ্গিক এবং স্পষ্টভাবে উপস্থাপিত হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য সাবধানে পর্যালোচনা করুন । এটি ভুল এড়াতে এবং সাফল্যের সম্ভাবনা উন্নত করতে সহায়তা করে।
একটি দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লেখার সময় যে ভুলগুলো কখনোই করবেন না
একটি দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লেখা মুখে যতটা বলা সহজ আসলে কিন্তু ততটা সহজ না। শুধুমাত্র একটি সুন্দর দরখাস্ত লিখতে না পারার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আমরা ভালো একটি কলেজে চান্স পাই না বা চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে। এজন্য দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী আপনাকে জানতে হবে। আমরা নিচে কিছু সচরাচর ভুলগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি।
নির্দেশিকা অনুসরণ না করা
কোন প্রতিষ্ঠানে যখন আপনি জব করতে যাবেন অবশ্যই সে প্রতিষ্ঠানের কিছু নিয়মাবলী থাকবে। আপনার দায়িত্ব সেই নিয়মগুলি এত সুন্দর করে মনোযোগ সহকারে পড়া এবং বুঝা তারা কি কি রিকোয়ারমেন্ট চাচ্ছেন এবং সেই মোতাবেক আপনার দরখাস্ত থাকে লিখা।
অসম্পূর্ণ এবং ভুল তথ্য প্রদান করা
আবে আবেদনপত্রের জন্য আপনি যে তথ্যগুলো আপনার দিচ্ছেন সেগুলোতে যেন কখনো কোনো ভুল ভ্রান্তি না থাকে সেদিকে খুব ভালোভাবে মনোযোগী হবেন। কেননা আপনার ভুল তথ্য গুলো আপনার সাফল্যকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাই দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী গুলো জানুন।
অনানুষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহার করা
কখনোই নিজের দরখাস্ত বা আবেদন পত্রে ও আনুষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহার করবেন না যেগুলো সচরাচর ব্যবহৃত হয় না। নিজের যোগ্যতাকে প্রমাণ করার জন্য এমন কোন শব্দ ব্যবহার করবেন না যা আপনার প্রাপক বুঝতেই না পারে এজন্য এটা থেকে সাবধান হন।
বেশি অ্যাটিটিউড না দেখানো
দরখাস্ত লেখার সময় নিজেকে কখনোই প্রফেশনাল ব্যক্তি মনে করবেন না। দেখুন চাকরিটা আপনি নিতে চাচ্ছেন এজন্যই দরখাস্ত লিখছেন এমন যেন না হয় যে আপনি চাকরি দিচ্ছেন এই মন মানসিকতা নিয়ে দরখাস্ত লিখবেন সাবধান। দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী গুলো ভালোভাবে অনুসন্ধান করুন।
রিভিশন না দেওয়া
এমন অনেক সময় হয়েছে যে সম্পূর্ণভাবে দরখাস্ত লিখেছেন সঠিকভাবে সব নিয়ম কানুন মেনে। কিন্তু জমা দেওয়ার পূর্বে একবার রিভিশন যদি দিয়ে নেন তাহলে এটি আপনার জন্য আরো ভালো হবে। এজন্য কখনো কোন দরখাস্ত বা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পূর্বে সেটিকে ভালোভাবে পর্যালোচনা এবং রিভিশন দেওয়া অপরিহার্য।
আরো পড়ুনঃ দুইটি বৃত্তে সর্বোচ্চ কয়টি সাধারণ স্পর্শক আঁকা যায়
দরখাস্ত বা আবেদনপত্র কিভাবে লিখবেন। দেখুন দরখাস্ত লেখার নিয়ম
সঠিকভাবে দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী নিচে তুলে ধরা হলোঃ-
বিষয়ঃ বড় আপুর বিয়ের জন্য ছুটির আবেদন।
জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, (এখানে সংক্ষিপ্তে আপনার প্রয়োজনীয় শব কথাগুল উল্লেখ করতে হবে)
ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী ও নমুনা
আমরা স্কুলে, অফিস - আদালতে ভার্সিটি, কলেজে বিভিন্ন জায়গায় থাকা অবস্থায় অনেক সময় আমাদের ছুটির প্রয়োজন হয়। ধরেন আপনার নিজের জন্য ছুটির প্রয়োজন অথবা আপনার বাসার কারো জন্য বা বিয়ের কোন দাওয়াত খেতে যাবেন বা কেউ অসুস্থ হয়েছে বিভিন্ন কারণে আমাদের ছুটির প্রয়োজন হয় থাকে। তাহলে আসুন দেখেনি ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়মাবলী কিভাবে একটি সঠিক নিয়মে আপনি ছুটির দরখাস্ত লিখতে পারেন
ছুটির দরখাস্ত লেখার নিয়ম
অগ্রিম ছুটির দরখাস্ত
বিষয়ঃ অগ্রিম ছুটির জন্য আবেদন।
জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী একজন নিয়মিত ছাত্র। আগামী ০৩/০৪/২০২৪ রোজ মঙ্গলবার আমার বড় বোনের বিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। যার জন্য আমি আগামী ০২/০৪/২০২৪ থেকে ০৫/০৪/২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মোট চার দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারবো না।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, উক্ত দিনগুলোতে আমাকে অগ্রিম ছুটি দিয়ে ধন্য করবেন।
অসুস্থতার জন্য ছুটির আবেদন
বিষয়ঃ অসুস্থতার জন্য ছুটির আবেদন।
জনাব
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী একজন নিয়মিত ছাত্র। গত ০৫/০৪/২০২৪ ইং বৃহস্পতিবার থেকে ০৮/০৪/২০২৪ ইং রোজ রবিবার পর্যন্ত আমার প্রচণ্ড জ্বর থাকার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারি নি।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন এই যে, উক্ত দিনগুলোতে আমাকে ৩ দিনের ছুটি দিয়ে বাধিত করবেন।
ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন
অফিসিয়াল ছুটির আবেদন
সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন
১। নামঃ
২। পিতার নামঃ
৩। মাতার নামঃ
৪। বর্তমান ঠিকানাঃ
৫। স্থায়ী ঠিকানাঃ
৬। জন্ম তারিখঃ
৭। জাতীয়তাঃ
৮। ধর্ম:
৯। শিক্ষাগত যোগ্যতা :
পরীক্ষার নাম | বোর্ড | পাশের সন | প্রাপ্ত গ্রেড |
---|---|---|---|
এসএসসি | রাজশাহী | ২০০৫ | জিপিএ-৫ |
এইচএসসি | রাজশাহী | ২০০৭ | জিপিএ-৫ |
বিএসসি | রাজশাহী | ২০১২ | প্রথম শ্রেণী |
এমএসসি | রাজশাহী] | ২০১৪ | প্রথম শ্রেণী |
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url