মেডিটেশন কী? মেডিটেশন কিভাবে করে - মেডিটেশন করার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে মেডিটেশন সম্পর্কে জানেনা এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। মেডিটেশন,ডিপ্রেশন অ্যাংজাইটি ইত্যাদি শব্দ এখন প্রায়ই সকলের কাছে পরিচিত। ডিপ্রেশন এবং অ্যাংজাইটির মতো মানসিক ব্যাধি মেডিটেশনের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। মেডিটেশনের উপকারিতা অনেক রয়েছে, আজকে আমাদের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন মেডিটেশন কেন করা উচিত, মেডিটেশন কত প্রকার? মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য মেডিটেশনে এর গুরুত্ব কতটা প্রয়োজনীয় এসকল বিষয় নিয়ে।

মেডিটেশন কী? মেডিটেশন কিভাবে করে - মেডিটেশন করার উপকারিতা

সূচিপত্রঃমেডিটেশন কী? মেডিটেশন কিভাবে করে - মেডিটেশন করার উপকারিতা

মেডিটেশন কী? মেডিটেশন কি হারাম

মেডিটেশন বাংলা বা মেডিটেশনকে সহজ বাংলায় বলা হয় ধ্যান। মেডিটেশন কী? হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্ম মেডিটেশনকে ধ্যান বলে আখ্যায়িত করে আসছে। মেডিটেশন শব্দটি মেডিটেটাম থেকে এসেছে,এটি একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ 'চিন্তা করা।' 

ধ্যান অনুশীলনের মাধ্যমে, আমরা দৈনন্দিন মুহূর্তগুলিতে আমাদের শরীরের সাথে আরও ভাল সংযোগ বা সম্পর্ক খুঁজে পেতে চেষ্টা করতে পারি যা আমরা প্রায়ই আমাদেরকে অতিক্রম করতে দিই এবং কীভাবে আমাদের আবেগগুলি আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করে তার জন্য আরও শক্তিশালী সচেতনতা তৈরি করতে পারি। গৌতম বুদ্ধা ধ্যান সম্পর্কে বলেছেন,

আরো পড়ুনঃ রাগ কমানোর উপায়। রাগ নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, বাণী ও ইসলামিক উক্তি

"বৌদ্ধরা অপবিত্রতা এবং আঁকড়ে থাকা (দুঃশচিন্তা) এবং তৃষ্ণা থেকে মুক্তির পথের অংশ হিসাবে ধ্যান অনুসরণ করে, যাকে জাগরণও বলা হয়, যার ফলে নির্বাণ অর্জন হয়, এবং এতে বিভিন্ন ধরনের ধ্যানের কৌশল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বিশেষ করে অনাপানসতি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মননশীলতা।"

মেডিটেশন কেন প্রয়োজন ?

মেডিটেশন কী? এবং মেডিটেশন কেন প্রয়োজন ? আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্যদৈনন্দিন জীবনে  বিভিন্ন ক্রীড়া কৌশল বা ব্যায়াম করে থাকি। শারীরিক ব্যায়াম আমাদেরকে শারীরিকভাবে অসুস্থতা জোগাতে সক্ষম। কিন্তু আমাদের শরীরের সাথে সাথে আমাদের মানসিক অবস্থাটার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমি তো প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম,করি‌ পুষ্টিকর খাদ্য খায় তাহলে আমার মেডিটেশন কেন প্রয়োজন ? আসলে মেডিটেশনের প্রয়োজন ছোট বড় সকল শ্রেণীর মানুষের রয়েছে। মেডিটেশনের বিভিন্ন উপকারিতা আছে তার মধ্যে সবথেকে বড় উপকারিতা হচ্ছে মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণ করা এবং মস্তিষ্কের সুস্থতা রক্ষা করা।

মেডিটেশন কিভাবে করে? মেডিটেশন করার সঠিক সময়।মেডিটেশন করার নিয়ম

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের মেডিটেশন সম্পর্কে কোন ধারণা নাই। মেডিসিন কখন করা উচিত এবং মেডিসিনের পদ্ধতি গুলো কি? আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আগেই জানিয়েছি যে, মিডিটেশন কি? মেডিটেশন কেন প্রয়োজনীয়? এখন আমরা জানবো মেডিটেশন কিভাবে করা উচিত বা মেডিটেশন কিভাবে করতে হয় ? মেডিটেশন করার জন্য কিছু বিষয়বস্তু মেনে চলতে হয়। নিম্নোক্ত বিষয়বস্তু গুলো ভালো করে না মানলে মেডিটেশনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে না। যেসকল নিয়মগুলো মেনে মেডিটেশন করতে হবে তা হচ্ছে-

মেডিটেশনের জন্য সঠিক স্থান নির্বাচনঃ

যেহেতু আমরা জানি মেডিটেশনের অর্থ হচ্ছে ধ্যান।‌তাই ধ্যান করার জন্য কোন কোলাহল যুক্ত অবস্থান নির্বাচন করা মোটেও সঠিক নয়। সুতরাং মেডিটেশন করার প্রথম নিয়ম হচ্ছে স্থান নির্বাচন। সঠিক স্থান নির্বাচন অর্থাৎ কোলাহলমুক্ত জায়গা যেখানে কোন প্রকার শব্দ যেমন; রাস্তার গাড়ির আওয়াজ, আপনার বাসায় থাকা ফ্যান অথবা ঘড়ির আওয়াজ যা আপনার ধ্যানে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এসকল স্থান নির্বাচন করা সঠিক নয়। 

আরো পড়ুনঃ অতিপুষ্টির লক্ষণ ও এই সমস্যায় আপনার যা করা উচিৎ 

আপনি আপনার বাসার বাগান অথবা বেলকনি যেখানে হাওয়া বাতাস পূর্ণ অবস্থান বা নির্জন স্থান রয়েছে এসকল স্থান নির্বাচন করে মেডিটেশন করতে পারেন। মেডিটেশনের ক্ষেত্রে সঠিক স্থান নির্বাচন করা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

মেডিটেশনের জন্য সঠিক সময়েই নির্বাচনঃ

মেডিটেশনের দ্বিতীয় নিয়মটি হচ্ছে সঠিক সময় নির্বাচন আমরা অনেকেই ভাবতে পারি দিনের বেলা তো কোলাহলমুক্ত স্থান নির্বাচন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তাই রাতে মেডিটেশন করার নিয়ম কি হতে পারে। রাতে মেডিটেশন করলে উপকারিতা আছে কিনা। 

তাছাড়া মেডিটেশন করার আগে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, আপনার মন মানসিকতা কেমন, আছে আপনি বিরক্ত বোধ করছেন কিনা অথবা আপনাকে ক্ষুদার্থ কিনা। করার আগে নিজের মনকে শান্ত রাখতে হবে যাতে করে আপনি মেডিটেশনের মনোযোগ দিতে পারেন। 

যদি বলি মেডিটেশনের সঠিক সময় কখন তাহলে বলব সবচেয়ে সঠিক সময় হচ্ছে ভোর বেলা এবং সন্ধ্যার পর। এই দুটি সময়ই কোলাহলমুক্ত এবং নির্জন পরিবেশ পাওয়া যায়, যা আমাদের বিনাদ্বিধায় মিউটেশন করতে সাহায্য করে।

সঠিক ভঙ্গি নির্বাচনঃ

সঠিক ভঙ্গি বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে যে আমরা সাধারণত যেভাবে চেয়ারে অথবা বিছানায় বসে থাকি সে সকল ভঙ্গি এড়িয়ে চলতে হবে। যদিও মেডিটেশন যেকোন স্থান ,মেডিটেশনের সঠিক সময় এবং যেকোন ভঙ্গিতে করা‌ করা যেতে পারে কেননা এটি সম্পূর্ণ একটি মস্তিষ্কের ব্যায়াম।

 অনেকেই ভাবেন যে পদ্মাসন বা লোটাস পজিশন হচ্ছে মেডিটেশনের ক্ষেত্রে সবথেকে উপযুক্ত ভঙ্গি বা আসন‌ কারণ সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত ভঙ্গিই হচ্ছে এটি। মেডিটেশন করতে এমন ভাবে বসা উচিত যাতে‌ দেহের আশেপাশে কোন হেলান দেয়ার স্থান না থাকে এবং মেরুদন্ড সোজা করে ঘার টেনে চোখ বন্ধ করে মেডিটেশমন করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ হার্ট ব্লক কী? হার্ট ব্লক এর লক্ষণ - হার্ট ব্লক হলে কি করনীয়

মনোযোগঃ

মেডিটেশন করতে হলে আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ তখন মেডিটেশনের উপরে রাখতে হবে। মেডিটেশন করার আগে আমাদের মস্তিষ্ককে বর্তমান অবস্থা এবং বাহিরের অবস্থার বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত রাখতে হবে। এবং ভিতরের ইনার সাউন্ড অথবা নিজের ভিতরে পজিটিভ চিন্তাগুলোকে ধারণ করতে হবে। 

সঠিক অবস্থা বা ভঙ্গিতে বসার পর মস্তিষ্ককে আস্তে আস্তে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে নিজেকে সতেজ এবং প্রফুল্ল মনে করতে হবে এবং এর সাথে সাথে নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এইভাবে মেডিটেশন করলে কিছুদিনের মধ্যেই সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে।

মেডিটেশন সমাপ্তির নিয়মঃ

মেডিটেশনের সময় আমাদের মন এক কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। কি অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য আমাদের কিছু সময় নেয়া দরকার। অনেকেই মেডিটেশন শেষ করে তাড়াহুড়ো করে উঠে যায় এটি মোটেও সঠিক নয়। এর ফলে মিডিটেশনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে না। 

মেডিটেশন এককেন্দ্রিক একটি বিষয় যা থেকে বের হতে সময় প্রয়োজন। মানসিকভাবে শান্তি এবং মনোযোগ ফিরানোর জন্য মেডিটেশন হচ্ছে একমাত্র উপায় তাই মেডিটেশন শেষ করতে হবে সুষ্ঠুভাবে।

মেডিটেশন কত প্রকার? মেডিটেশন এর উপকারিতা

অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে মেডিটেশন কত প্রকার? মেডিটেশন বা ধ্যান অনেক প্রকারের হয়ে থাকে বা মেডিটেশন কোর্স"মেডিটেশন কখন করতে হয়"বিভিন্ন ভাগে বিভুক্ত করা আছে। তার মধ্যে যেগুলো বেশি জনপ্রিয় সেটি আপনাদের কাছে তুলে ধরা হলো। নিম্নোক্ত ৫ প্রকার মেডিটেশন পদ্ধতি গুলো প্রায়ই মানুষ অনুশীলন করে থাকে-

১।প্রেমময়-দয়া ধ্যানঃ এটি মেটা মেডিটেশন (Metta Meditation) নামেও পরিচিত। এর লক্ষ্য হল সমস্ত কিছুর প্রতি ভালবাসা এবং দয়ার মনোভাব গড়ে তোলা, এমনকি একজন ব্যক্তির শত্রু এবং স্ট্রেসের উত্স এর প্রতি। গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার সময়, অনুশীলনকারীরা তাদের মন উন্মুক্ত করে প্রেমময় দয়া পাওয়ার জন্য। 

আরো পড়ুনঃ মস্তিষ্ক ভালো রাখার উপায় - মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার

তারপর তারা প্রকৃতি, নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তাদের প্রিয়জনের কাছে প্রেমময় দয়ার বার্তা পাঠায়।এই ধ্যানের বেশিরভাগ ফর্মে, মূল বিষয় হচ্ছে,(প্রকৃতি সুন্দর) বা সুন্দর কোন দোয়া বার্তাটি বহুবার পুনরাবৃত্তি করা, যতক্ষণ না অনুশীলনকারী প্রেমময় দয়ার মনোভাব অনুভব করেন। প্রেমময়-দয়া মেডিটেশন অন্যদের এবং নিজের উভয়ের জন্য সমবেদনা এবং ভালবাসার অনুভূতির প্রচার করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

এটি রাগ,পরাজয়,বিরক্তি এবং আন্তঃব্যক্তিক দ্বন্দ্ব দারা অক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে পারে। এই ধরনের ধ্যান ইতিবাচক ভাবে আবেগ বাড়াতে পারে এবং বিষণ্নতা, উদ্বেগ, এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস বা PTSD হ্রাসে করতে সক্ষম।

২। প্রগতিশীল শিথিলতাঃ প্রগতিশীল শিথিলকরণ, যাকে কখনও কখনও বডি স্ক্যান মেডিটেশন বলা হয়, এটি এমন একটি ধ্যান যা মানুষকে উত্তেজনার ক্ষেত্রগুলির জন্য তাদের শরীর স্ক্যান করতে উত্সাহিত করে। এর কাজ হচ্ছে উত্তেজনা লক্ষ্য করা এবং এটি মুক্তির অনুমতি দেওয়া। 

একটি প্রগতিশীল শিথিলকরণ সেশনের সময়, অনুশীলনকারীরা তাদের শরীরের এক প্রান্ত থেকে শুরু করে, সাধারণত তাদের পায়ে, এবং পুরো মাধ্যমে কাজ করে। কিছু প্রগতিশীল শিথিলকরণের জন্য ব্যাক্তিকে তার উত্তেজনা এবং তারপরে তার পেশী শিথিল করতে হয়। এটি একজন ব্যক্তিকে একটি তরঙ্গ কল্পনা করতে উত্সাহিত করে,যা উত্তেজনা মুক্ত করার জন্য তাদের শরীরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

প্রগতিশীল শিথিলকরণ প্রশান্তি এবং শিথিলতার সাধারণ অনুভূতিকে উন্নীত করতে সাহায্য করতে পারে। এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী পেশী ব্যথা সারতেও সাহায্য করতে পারে। কারণ এটি ধীরে ধীরে এবং অবিচলিতভাবে শরীরকে শিথিল বা শান্ত করে, কিছু মানুষ তাদের ঘুমাতে সাহায্য করার জন্য এই ধরনের ধ্যান ব্যবহার করে।

৩। মননশীলতা ধ্যানঃমাইন্ডফুলনেস হচ্ছে ধ্যানের একটি ধরন যা অনুশীলনকারীদের সেই মুহূর্তে সচেতন ও উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করে। এবং মেডিটেশন কতক্ষন করতে হয় তা নির্ভর করে মেডিটেশনের প্রকারের উপর। অতীত নিয়ে চিন্তা বা ভবিষ্যতকে ভয় করার পরিবর্তে, মননশীলতা একজন ব্যক্তির বর্তমান পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতাকে উৎসাহিত করে। 

এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিচারের অভাব।  সুতরাং, দীর্ঘ অপেক্ষার বিরক্তিকর প্রতিফলিত করার পরিবর্তে, একজন অনুশীলনকারী কেবলমাত্র বিচার ছাড়াই অপেক্ষাকে লহ্ম্য করবেন। মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন এমন একটি ক্রিয়া যা মানুষ প্রায় যেকোনো জায়গায় করতে পারে। এমন কি একজন ব্যক্তি খাবারের দোকানে লাইনে অপেক্ষা করার সময় করতে পারেন। 

মননশীলতার একটি ধাপ বেশিরভাগ সব ধরণের ধ্যানের সাথে যুক্ত। শ্বাস সচেতনতা অনুশীলনকারীদের তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পর্কে সচেতন হতে উত্সাহিত করে,এবং প্রগতিশীল শিথিলতা শরীরের উত্তেজনার ক্ষেত্রগুলির দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করে।

যেহেতু মননশীলতা অনেক প্রায় সব ধরণের ধ্যানের জন্য সাধারণ একটি ধাপ,তাই এটি ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মননশীলতা সাহায্য করতে পারে: নেতিবাচক আবেগ উপর ফিক্সেশন কমাতে,ফোকাস উন্নত করুন,স্মৃতিশক্তি উন্নত করা,আবেগপ্রবণ, মানসিক প্রতিক্রিয়া হ্রাস এবং সম্পর্কের সন্তুষ্টি উন্নত করতে।

৪। শ্বাস সচেতনতা ধ্যানঃ শ্বাস সচেতনতা হলো এক প্রকার মননশীল ধ্যান যা মননশীল শ্বাসকে উৎসাহিত করে। অনুশীলনকারীরা ধীরে ধীরে এবং গভীরভাবে শ্বাস নেয়, তাদের শ্বাস গণনা করে বা তাদের শ্বাসের উপর ফোকাস করে। 

লক্ষ্য হচ্ছে শুধুমাত্র শ্বাস-প্রশ্বাসে মনোনিবেশ করা এবং মনের মধ্যে প্রবেশ করা অন্যান্য চিন্তাভাবনা উপেক্ষা করা বা বাদ দেওয়া। মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশনের একটি ধাপ হিসাবে, শ্বাস সচেতনতা মাইন্ডফুলনেসের মতো একই সুবিধা দেয়। মেডিটেশনের উপকারিতার মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ হ্রাস, উন্নত ঘনত্ব এবং বৃহত্তর মানসিক নমনীয়তা।

৫। কুন্ডলিনী যোগঃ কুন্ডলিনী যোগ বা ইয়োগা (Yoga) হচ্ছে ধ্যানের একটি শারীরিকভাবে সক্রিয় অবস্থা যা গভীর শ্বাস এবং মন্ত্রের সাথে আন্দোলনকে মিশ্রিত করে। মানুষ সাধারণত একজন শিক্ষকের কাছ থেকে ইয়োগা শেখে বা ক্লাস করে। তবে, কেউ ঘরে বসে এই ইয়োগা ভঙ্গি এবং মন্ত্র শিখতে পারেন। 
একইভাবে অন্যান্য ধরনের যোগব্যায়ামের মতো, কুন্ডলিনী যোগ বা ইয়োগা শারীরিক শক্তিকে উন্নত করতে পারে এবং মাংশ পেশির ব্যথা কমাতে পারে। এটি উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা হ্রাস করে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, দীর্ঘস্থায়ী নিম্ন-পিঠে ব্যথা সহ শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

মেডিটেশনের উপকারিতা কি? মেডিটেশন করার নিয়ম

Medicalnewstoday এর এক প্রতিবেদনে যানা যায় যে, কিছু পরীহ্মায় দেখা গেছে যে মননশীলতা ধ্যান স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। যেমন,দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত আফ্রিকান-আমেরিকান পুরুষদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মননশীলতা ধ্যান রক্তচাপ কমাতে পারে। তাছারা, মেডিটেশনের উপকারিতা হচ্ছে-

মানসিক চাপে রোধেঃ

মেডিটেশনের উপকারিতা রয়েছে অনেক কিন্তু প্রথম উপকারিতা হচ্ছে এটি আমাদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। মেডিটেশন মস্তিষ্ককে শীথিলীকরণ এর মাধ্যমে মানসিক চাপ কমায় এবং মস্তিষ্ককে দ্রুত চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বর্তমান সময়ে এমন কোনো মানুষ পাওয়া যাবে না যারা মানসিক চাপের মধ্যে নেই ,তাই,কিছু সময় মেডিটেশন করার মাধ্যমে আমরা এই মানসিক চাপ হতে রক্ষা পেতে পারি।

রাগ কমানোর জন্যঃ

রাগের কারণে আমরা চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারায় ফেলি। রাগ এমন একটি অনুভূতি যা আমাদের মস্তিষ্ককের চিন্তা করার ক্ষমতা বন্ধ করে ফেলে কিছু সময়ের জন্য যার ফলে আমরা অনেক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই মেডিটেশন একটি উত্তম উপায় রাগ কমানোর জন্য। যেহেতু মেরিটিশন মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই নিয়মিত মিডিটেশনের করার ফলে রাগ কমানো যেতে পারে।

মনোযোগ বৃদ্ধিতেঃ

অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং বিভিন্ন কারণে বিরক্ত হওয়ার কারণে আমরা আমাদের কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারেন সেক্ষেত্রে মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে মেডিটেশন হচ্ছে উত্তম একটি উপায়। কারন মেডিটেশন আমাদের মস্তিস্ককে শান্ত করে আমাদের কাজে মনোযোগ দৃড় করতে সহ্মম।

আরো পড়ুনঃ মাথা ভারী লাগার কারণ - মাথাব্যথার কারণ ও মুক্তির উপায়

রোগ দূর করতেঃ

মস্তিষ্ক জনিত বিভিন্ন রোগ যেমন; মাইগ্রেন,সাইনোসাইটিস,হূদরোগ,ঘুমের ব্যাঘাত আবার শারীরিক রোগ; কিডনির সমস্যা এবং দীর্ঘস্থায়ী কোন মাংসপেশির ব্যথা(ঘাড়,পিঠ অথবা কোমর) রোগ নিরাময়ের জন্যও মেডিটেশন অবদান রাখে। মেডিটেশন করার মাধ্যমে শরীর ও মন ভাই  সুস্থ থাকে।

আত্মনিয়ন্ত্রনেঃ

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা প্রচুর আবেগ প্রবন মানুষ। অনেক সময় আবেক নিয়ন্ত্রন করা অনেক কঠিন হয়ে যায়। মেডিটেশন আপনাকে আত্মকেন্দ্রিক হওয়ার পাশাপাশি আত্মনিয়ন্ত্রন করে আপনার আবেগকে উন্নত করে আপনাকে মানসিক ভাবে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

শেষকথাঃ মেডিটেশন কী? মেডিটেশন কিভাবে করে - মেডিটেশন করার উপকারিতা

মেডিটেশন বা ধ্যান একটি প্রক্রিয়া-ভিত্তিক উদ্যোগ যা সেই মুহূর্তের উপর লহ্ম্য করে, ফলাফলের উপর নয়। তাই মুহূর্ত উপভোগ করাই সফল ধ্যানের চাবিকাঠি। একজন ব্যক্তির ধ্যানের সেশন বা মেডিটেশন কখন করতে হয় ভাল না খারাপ, সঠিক বা ভুল তা বিচার করা উচিত নয়। 

এই সকল বিষয় চিন্তা না করে তাদের কেবল সেই মুহূর্তে থাকা উচিত। ধ্যান একটি মস্তিস্কের দক্ষতা যা আয়ত্ত বা নিয়ন্ত্রন করতে সময় লাগে। কিছু মানুষ হতাশা এবং এমনকি রাগান্বিত বোধ করে যখন তারা প্রথম ধ্যান করার চেষ্টা করে তা নিয়ন্ত্রন করতে পারে। 

বর্তমান মুহুর্তে উপস্থিত থাকা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, যেমন বিভ্রান্ত না হয়ে একটি একক মন্ত্রে ফোকাস করা যেতে পারে। ধারনা করা যায় যে আপনারা আমাদের আর্টিকেল পড়ে মেডিটেশন সম্পর্কে অনেকটাই জানতে পেরেছেন। এই ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন।😊 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url