সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, পদ্ধতি ও ফজিলত
সালাতুত তাসবিহ নামাজ এর নিয়ম, সালাতুল তাসবিহ (আরবীঃصلاة تسبيح ), তাসবীহের নামাজ নামেও পরিচিত। সালাত শব্দের অর্থ নামাজ আর তাসবিহ বলতে ‘সুবহানাল্লাহ(سُبْحَانَ اللهِ) ওয়াল হামদুলিল্লাহ(وَالْحَمْدُ لِلهِ), ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু(وَلَا اِلهَ اِلَّ), ওয়াল্লাহু আকবার’ (وَاللهُ اَكْبَرُ)এ শব্দগুলো বোঝানো হয়েছে।
যে নামাজে এসব তাসবীহ পড়ানো হয় তা সালাতুল তাসবিহ বা তাসবীহের নামাজ হিসেবে পরিচিত।মুসলমানদের জন্য এটি একটি ঐচ্ছিক ইবাদত।পাচ ওয়াক্ত নামাজের ন্যায় এই নামাজ বাধ্যতা মূলক নয় যদিও এই নামাজ সুন্নাতে মুস্তাহাব।
পেজ সূচিপত্রঃ সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত, পদ্ধতি ও ফজিলত
সালাতুত তাসবিহ নামাজের দোয়া:
(سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا اِلهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ )
বাংলা উচ্চারণঃ"সুবাহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়তঃ
আরবি-উচ্চারনঃ
ﻧَﻮَﺍﻳْﺖُ ﺍَﻥْ ﺍُﺻَﻠِّﻰَ ﻟِﻠَّّﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﺍﺭْﺑَﻊَ ﺭَﻛَﻌَﺎﺕِ ﺻَﻠَﻮﺓِ ﺍﻟﺘَّﺴْﺒِﻴْﺢِ ﺳُﻨَّﺔُ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻣُﺘَﻮَﺟِّﻬًﺎ ﺍِﻟَﻰ ﺟِﻬَﺔِ ﺍﻟْﻜَﻌْﺒَﺔِ ﺍﻟﺸَّﺮِﻳْﻔَﺔِ ﺍَﻟﻠَّﻪُ ﺍَﻛْﺒَﺮ
বাংলা-উচ্চারনঃ "নাওয়াইতু আন উসালি্লয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকা’আতাই সালাতিল সালাতুল-তাসবী সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।"
বাংলা অর্থঃ "আমি সালাতুল-তাসবী -চার-রাক'আত সুন্নত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়্যত করলাম,আল্লাহু আকবার।"
সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
এই নামাজ অন্যান্য চার রাকাত সুন্নাত নামাজের মতোই নিয়ত করতে হবে।হাদীসে সালাতুত তাসবীহ জীবন কালে একবার হলেও আদায় করার কথা বলা আছে। এই নামাজ পড়ার জন্য নবী করিম হযরত মুহাম্মাদ(সাঃ) তার নিজ্ব চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) কে এই নামাজ শিহ্মা দিয়ে বলেছেন যে-
"হে চাচাজান! আপনি যদি পারেন,তবে দৈনিক একবার এই নামাজ পড়িবেন,যদি দৈনিক না পারেন,তবে সপ্তাহে একবার পড়িবেন,যদি সপ্তাহে না পারেন,তবে মাসে একাবার পড়িবেন,যদি তাও না পারেন, তবে বছরে একবার পড়িবেন,আর যদি এটাও সম্ভব না হয়,তবে জীবন কালে একবার হলেও এই নামাজ পড়িবেন,(তবুও ছাড়বেন না)।"
সালাতুত তাসবিহ পড়ার নিয়মঃ-
- উপরের উল্লেখিত নিয়তটি করার। সানা,তাকবিরে তাহরিমা,তাআওওয,তাসনিয়া পাঠ করার পর১৫ বার(سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا اِلهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ)
- তারপর সূরা ফাতিহা এবং কোরআন থেকে কেরাত পাঠ (সুরা মিলানো) সম্পন্ন হবার পর দাঁড়ানো অবস্থায় রুকুতে যাওয়ার পুর্বে ১০ বার।
- রুকু করবে এবং রুকু অবস্থায় দোয়ার পর (এ তাসবিহ) ১০ বার পাঠ করতে হবে।
- রুকু থেকে মাথা ওঠানোর পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় (রাব্বানা লাকাল হামদ পড়ার পর)এ তাসবিহ ১০ বার পাঠ করতে হবে।
- তারপর সিজদায় যাবে এবং সিজদা অবস্থায় এ তাসবীহ ১০ বার পাঠ করবে।
- সিজদা থেকে মাথা ওঠানোর পর ১০ বার।
- পুনরায় সিজদা গিয়ে ১০ বার।
- সিজদা থেকে মাথা ওঠিয়ে আবার দ্বিতীয় রাকাতে একি ভাবে তাসবিহ পাঠ করতে হবে।একি ভাবে তাসবিহ পাঠ করতে হবে।
এ তাসবিহ প্রত্যেক রাকাআতে ৭৫ বার করে মোট ৩০০বার ৪ রাকাআত নামাজের প্রতি রাকাআতেই এক নিয়ম অনুসারে আদায় করতে হবে।
ব্রিঃদ্রিঃ কেওবা বলেন যে, এই নামাজে সূরা-আসর,ক্বাওসার,কাফেরুন,এখলাস পড়া বা তাগাবুন,হাশর,সফ বা হাদীদ পড়া উত্তম।
মহিলাদের সালাতুল তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
প্রথমে কেবলামুখী হয়ে উপরের নিয়ত পাঠ করার পর তাকবীরে তাহরিমা (যে তাকবীর দ্বারা নামাজ শুরু হয় তাকে তাকবীরে তাহরিমা বলে। তাকবিরে তাহরিমা হচ্ছে- নামাজ আরম্ভ করার সময় আল্লাহ তাআলঅর মহত্ত্ব প্রকাশ পায় এমন কোনো শব্দ দ্বারা নামাজ শুরু করা যেমন "আল্লাহু-আকবার")পাঠ করে হাত বুকের উপরে বাধতে হবে।
এরপর সানা; (سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ)
উচ্চারনঃ"সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।"
অর্থঃ"হে আল্লাহ! তুমি পাক,তোমারই জন্য সমস্ত প্রসংসা,তোমার নাম পবিত্র এবং বরকতময়,তুমি মহান হতে মহান,তুমি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেয়।"
অন্যান্য নামাজের মতই সানা পড়ার পর "আউজুবিল্লাহ","বিসমিল্লাহ",সূরা-ফাতিহা পাঠ করার পর কুরআন হতে যে কোনো সূরা মিলাতে হবে।এরপর দাঁড়ানো অবস্থায় রুকুতে যাওয়ার পুর্বে ১০ বার,(سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا اِلهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ ) দোয়াটি পাঠ করতে হবে।আবার তাকবিরে তাহরিমা পাঠ করে রুকুতে যেয়ে "সুবহানারব্বী আল-আযিম"পাঠ করে রুকু অবস্থায় উক্ত দোয়া ১০ বার পাঠ করতে হবে।তাকবিরে তাহরিমা বলে আবার রুকু থেকে মাথা ওঠানোর পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় "সামীআল্লাহু লিমান হামিদা রাব্বানা লাকালহামদ"(মহিলাদের হ্মেত্রে পুরাটা পড়ার পর)এ তাসবিহ ১০ বার পাঠ করতে হবে।
তারপর "আল্লাহু-আকবার"বলে সিজদায় যাতে হবে এবং"সুবহানারব্বী আল-আলা" পাঠ করে সিজদা অবস্থায় এ তাসবীহ ১০ বার পাঠ করবে।আবার "আল্লাহু-আকবার"বলে সিজদা থেকে মাথা ওঠানোর পর ১০ বার দোয়া পাঠ করতে হবে,পুনরায় সিজদা গিয়ে একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।সিজদা থেকে মাথা ওঠিয়ে আবার দ্বিতীয় রাকাতে একি ভাবে তাসবিহ পাঠ করতে হবে।অর্থাৎ এ তাসবিহ প্রত্যেক রাকাআতে ৭৫ বার করে মোট ৩০০বার ৪ রাকাআত নামাজের প্রতি রাকাআতেই এক নিয়ম অনুসারে আদায় করতে হবে।মহিলাদের সুবিদার্থে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের সূরাঃ
যদি এই নামাজ অন্যান্য সুন্নাত বা নফল নামাজের ন্যায় আদায় করতে হয়,তাই আল-কুরআন হতে যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়লেই হবে।তবে বিষেশ কিছু সূরার কথা বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ্য আছে,তা হচ্ছেসূরা-আসর,ক্বাউসার,কাফেরুন,এখলাস পড়া বা তাগাবুন,হাশর,সফ বা হাদীদ পড়া উত্তম।
সূরা-আসরঃ
কুরআনের ১০৩ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৩ টি।
وَالْعَصْرِ
১. শপথ অপরাহ্নের;
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত;
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
৩. কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সত্যের এবং উপদেশ প্রদান করে ধৈর্য্যের৷
সূরা-কাওসারঃ
কুরআনের ১০৮ তম সূরা।এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৩ টি।
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
নিশ্চয়ই আমি আপনাকে কাউসার (বা প্রভূত কল্যাণ) দান করেছি।
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
অতএব আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় কড়ুন এবং কুরবানী করুন
إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ
নিশ্চয় আপনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীই লেজকাটা, নির্বংশ।
সূরা-কাফেরুনঃ
কুরআনের ১০৯ তম সূরা।সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৬।
قُلۡ یٰۤاَیُّهَا الۡکٰفِرُوۡنَ
বলঃ হে কাফিরেরা,
لَاۤ اَعۡبُدُ مَا تَعۡبُدُوۡنَ
আমি তার ইবাদাত করিনা যার ইবাদাত তোমরা কর,
لَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُد
এবং তোমরাও তাঁর ইবাদাতকারী নও যাঁর ইবাদাত আমি করি,
وَ لَاۤ اَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدۡتُّمۡ ۙ
এবং আমি ইবাদাতকারী নই তার যার ইবাদাত তোমরা করে আসছ,
لَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ؕ
এবং তোমরা যার ‘ইবাদত করছ আমি তার ‘ইবাদাতকারী হব না’।
لَکُمۡ دِیۡنُکُمۡ وَلِیَ دِیۡنِ
তোমাদের জন্য তোমাদের কর্মফল এবং আমার জন্য আমার কর্মফল।
সূরা-এখলাসঃ
হলো কুরআনের ১১২ তম সূরা।এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৪ টি।
قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ
বলুন (হে নবি),আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়
ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি,কেউ তাঁকে জন্ম দেননি
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ
আর কেউই তার সমতুল্য নয়।
সূরা-তাগাবুনঃ
কুরআনের ৬৪ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ১৮ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আত-তাগাবুন মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে।
সালাতুত তাসবিহ নামাজে ভুল হলে কি করতে হয়?
‘সালাতুত তাসবিহ’ নামাজ পড়াবস্থায় দানাদার তসবিহ হাতে গণনা করা মাকরূহ বা অনুচিত। আঙ্গুলের করগুলোতে গণনা করা যাবেনা। কিন্তু তাহরিমা বাধা অবস্থাতেই হাতের আঙ্গুল গুলা টিপেটিপে তাসবীহ গণনা করতে হবে। কোনো স্থানে তাসবীহ পড়তে ভুলে গেলে পরবর্তী তাসবীহ পাঠের সময় তা আদায় করে নিতে হবে। তবে ক্বওমা তথা রুকু থেকে দাঁড়ানোর সময় ও দুই সিজদার মাঝখানে তাসবীহ ভুলে যাওয়া তাসবীহগুলো আদায় করা যাবে না। সূর-কেরাত পড়ার পূর্বে তাসবীহ ভুলে গেলে সূরা-কেরাত পাঠের সেটি আদায় করতে হবে।
একইভাবে ক্বিরায়াতের পর তাসবীহ ভুলে গেলে রুকুতে গিয়ে আদায় করতে হবে। রুকুতে তাসবীহ ভুলে গেলে উক্ত তাসবীহ প্রথম সিজদায় আদায় করতে হবে। সিজদায় যাওয়ার পূর্বে তাসবীহ পড়তে ভুলে গেলে তা প্রথম সিজদাতে গিয়ে আদায় করতে হবে। প্রথম সিজদাতে তাসবীহ ভুলে গেলে তা দুই সিজদার মাঝখানে আদায় না করে দ্বিতীয় সিজদাতে গিয়ে আদায় করতে হবে।
ঠিক দুই সিজদার মাঝখানের তাসবীহ পড়তে ভুলে গেলে তাও দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে পড়তে হবে। একইভাবে আর দ্বিতীয় সিজদাতে তাসবীহ ভুলে গেলে,পরের রাকায়াতে সূরা-ক্বিরায়াত পাঠ করার পূর্বে পড়ে নিতে হবে। শেষ সিজদার তাসবীহ পড়তে ভুলে গেলে সালাম ফিরানোর পূর্বে তাসবীহ পড়ে নিতে হবে।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের ফজিলতঃ
‘সালাতুত তাসবীহ’ নামাজের অনেক ফজিলত হাদিসে বর্ণীত আছে। যার মধ্যে;নবী করিম (সাঃ) তার নিজের চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) কে বলেন যে,"হে চাচাজান এই নামাজ পড়লে আল্লাহ তায়ালা আপনার আগের ও পিছনের,নতুন-পুরাতন,সগীরা,কবীরা,জানা-অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন(সুবহানআল্লাহ)।
"যদিও হাদীসটি বিশুদ্ধ হাদীস নয়,তারপরও এই আমালটি করলে কোন প্রকার বিদআত এর অন্তর্ভুক্ত হবে।আবার এই নামাজ না পড়লে কোন প্রকার গুনাহ ও হবে না।তবে এই নামাজ আদায় করাটা অনেক সময়সাপেহ্মের বা অনেক ধৈর্য্যের হওয়ায় সবাই তা আদায় করতে পারে না।আবার অনেকে নামাজে ভুল হওয়ার আশংকায় এই নামজ হতে বিরত থাকে।
সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায়ের সঠিক সময়ঃ
এই নামাজ দিনে বা রাত্রে যেকোন সময় পড়া যাবে তবে যে সময় গুলোতে নামাজ পরা নিষিদ্ধ যেমন চাশতের নামজের শেষ ওয়াক্তের পর হতে যোহর ও যোহর নামাজের শেষ ওয়াক্ত হতে আসর বা আসর নামাজের মধ্যবর্তী সময়কালে যেকনো নামাজ পড়া নিষেদ্ধ।
এই নামাজ পড়ার জন্য অনেকটা সময় প্রয়োজন হয়,তাই এশার নামাজ পড়ার পর বা তাহাজ্জুত নামাজের সময় সালাতুত তাসবীহ নামাজ পড়া বা আদায় করা সবচেয়ে উত্তম সময়।এছাড়া শবে-বরাত,রমজানে তারাবিহর নামাজ পর বা শবে-ক্বদরের রাত্রে আদায় করলে অনেক উত্তম।
সালাতুত তাসবিহ নামাজ সুন্নাত না নফল?
এই নামাজ নিয়ে অনেকের ভিন্ন ভিন্ন মতোবাদ রয়েছে।অনেকে বলেন যে,এই নামাজ নফল নামাজের অন্তরভুক্ত আবার অনেকেই বলে যে এটি সুন্নাত নামাজ।আমার মতে যেহেতু নামাজের নিয়তে সুন্নাত বর্নণা বা সুন্নাত কথাটি উল্লেখিত আছে তাই এই নামাজ সুন্নাত নামজের অন্তরভুক্ত,যদিও এই নামাজ না পড়লে কোনো গুনাহ হবেনা।কিন্ত এই নামাজের প্রতি তাগীদ দেওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে এই নামাজের ফজিলত অপরিসীম।
সালাতুত তাসবিহ কি? সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ত ও নিয়ম ?
শেষ কথাঃ সালাতুত তাসবিহ কি? সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ত ও নিয়ম ?
যেকোন ইবাদত আমরা করিনা কেন তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যই,ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুুষ্ট বা আল্লাহ তায়ালার এক্যতবাদ প্রকাশ করাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।কিন্তু ফরজ ইবাদত গুলো যাথাযথ পালন না করে অন্য কোনো সুন্নাত বা নফল ইবাদত করে আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করা যায় না।
আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত ফরজ কাজ বা ইবাদত;সর্ব প্রথম নামাজ,রোজা,হজ্ব,যাকাত ও কুরবানী এই কাজ গুলো নিষ্ঠার সাথে পালন করার পর আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে বাকি নফল বা সু্ন্নাত ইবাদত পালন করা উত্তম।আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে ফরজ কাজ ও ফরজ ইবাদতগুলোর পাশাপাশি সুন্নত ও নফল ইবাদত করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)😊
সালাতুত তাসবিহ নামাজ নিয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর । FAQs
মহিলাদের সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম কি?
ইসলামে মহিলাদের কোন জামাতে নামাজ নেয়, মহিলাদের সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম হচ্ছে একাকিত্তে তা আদায় করা। তবে জামাতে নামাজ পরলেও এই নামাজের সব তাসবীস গুলো নিজে নিজে পাঠ করতে হবে।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও সূরা
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম আমরা উপরে বিস্তারিত আপনাকে বর্ননা করেছি। সালাতুন তাসবিহ নামাজ আদায় করার জন্য আপনি যেকোন সূরা মিলিয়ে পড়তে পারেন। তবে উপরে উল্লেখিত সূরা-আসর,সূরা-কাওসার,সূরা-কাফেরুন,সূরা-এখলাস ও সূরা-তাগাবুন বেশি ফজিলতপূর্ন।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের ফজিলত কি?
সঠিকভাবে নিয়ম মেনে সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায় করতে পাড়লে এর ফজিলত অনেক। সালাতুত তাসবিহ নামাজের ফজিলত হচ্ছে এই নামাজের অসিলায় আপনার পূর্বের সকল সগিরা-কবিরা গুন্নাহ মাফ হয়ে যাবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url